ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভে হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্র হামলার হুমকি দিয়েছেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। দেশটির নীতিনির্ধারণের সঙ্গে জড়িত বিভিন্ন স্থাপনায় ‘ওরেশনিক’ হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করবেন বলে সতর্ক করেছেন তিনি।
বৃহস্পতিবার (২৮ নভেম্বর) তিনি এ হুমকি দেন। ভয়েস অব আমেরিকার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
প্রায় তিন বছরের যুদ্ধে ইউক্রেনের পার্লামেন্ট, প্রেসিডেন্টের কার্যালয় বা মন্ত্রণালয়গুলোয় হামলা চালায়নি রাশিয়া। এ সময়ে কিয়েভও আকাশ প্রতিরক্ষাব্যবস্থা দ্বারা ব্যাপকভাবে সুরক্ষিত হয়েছে। কিন্তু হঠাৎ যুদ্ধের মাত্রা বাড়ায় আরও ভয়ংকর হামলার পরিকল্পনা করছে রাশিয়া। তবে মস্কোর ছোড়া অনেক ক্ষেপণাস্ত্র লক্ষ্যবস্তুতে হামলায় ব্যর্থ হচ্ছে।
এ পরিস্থিতিতে পুতিনের দাবি—রাশিয়ার নতুন হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্র ওরেশনিক ভূপাতিত করা অসম্ভব। যদিও এ দাবি নিয়ে পশ্চিমা বিশেষজ্ঞদের সন্দেহ রয়েছে।
রুশ প্রেসিডেন্ট বলেন, রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় ও জেনারেল স্টাফ বর্তমানে ইউক্রেনের ভূখণ্ডে হামলার লক্ষ্যবস্তু বাছাই করছে। এসব লক্ষ্যবস্তুর মধ্যে সামরিক স্থাপনা, প্রতিরক্ষা ও শিল্প-সংক্রান্ত প্রতিষ্ঠান, অথবা কিয়েভের নীতিনির্ধারণ সংশ্লিষ্ট কেন্দ্রগুলো থাকতে পারে।
এর আগে রাশিয়া ইউক্রেন ভূখণ্ডে প্রথমবারের মতো আন্তঃমহাদেশীয় ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে হামলা করে। ২১ নভেম্বর সকালে এ হামলা করে প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের বাহিনী। ইউক্রেনের বিমান বাহিনী বলেছে, রাশিয়া আজ ভোরে আস্ট্রখান অঞ্চল থেকে একটি আন্তঃমহাদেশীয় ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করে। একই সঙ্গে একই লক্ষ্যে বিভিন্ন ধরনের ক্ষেপণাস্ত্রও ছোড়ে তারা। ইউক্রেনের ডিনিপ্রো অঞ্চল লক্ষ্য করে রাশিয়া এ হামলা চালায়। ইউক্রেনযুদ্ধে এ ধরনের অত্যাধুনিক দূরপাল্লার অস্ত্র প্রথমবারের মতো ব্যবহার করে রাশিয়া। ক্ষেপণাস্ত্রগুলো হাজার হাজার কিলোমিটার পাড়ি দিতে সক্ষম। সাধারণত, অন্য মহাদেশে শত্রুর ঘাঁটিতে হামলা করতে এ ধরনের অস্ত্র তৈরি করা হয়েছে।
মূলত ওয়াশিংটন ইউক্রেনকে দূরপাল্লার ‘এটিএসিএমএস’ (ATACMS) ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করার অনুমতি দেয়। এরপর তা ব্যবহার করে রাশিয়ার ভূখণ্ডে হামলাও শুরু করে প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির বাহিনী। এর প্রতিক্রিয়ায় যুদ্ধের মাত্রা বাড়ায় রাশিয়া। এ ছাড়া সদ্য সমাপ্ত মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডোনাল্ড ট্রাম্প জয়ের পর দুপক্ষই ভবিষ্যৎ নিয়ে সন্দিহান। এ কারণটিও যুদ্ধের মাত্রা বাড়ার পেছনে দায়ী।