জুলাই গণঅভ্যুত্থানের পরাজিত শক্তি আবার ফিরে আসতে এ দেশের হাজার বছরের সম্প্রীতির বন্ধন বিনষ্ট করতে ষড়যন্ত্র করছে। তাদের এই ষড়যন্ত্রের সঙ্গে হাত মিলিয়েছে আমাদের প্রতিবেশী আরেকটি দেশ। তাদের এই ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে সম্মিলিত সনাতনী জাগরনী জোটের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাস কাজ করেছে। এর মধ্যে সরকার তাকে রাষ্ট্রদোহী মামলায় গ্রেপ্তার করেছে। আমাদের সমাজে যদি আরও চিন্ময় থাকে তাদেরও গ্রেপ্তার করতে হবে।
শুক্রবার (২৯ নভেম্বর) বিকেলে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে আন্তঃধর্মীয় সম্প্রীতি পরিষদ (আসপ) আয়োজিত সম্প্রীতির বন্ধন শীর্ষক মানববন্ধন ও সমাবেশে বক্তারা এসব কথা বলেন। প্রধান অতিথির বক্তব্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুজীব বিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যান জামিলুন্নেছা বলেন, ‘আমরা মুসলিম, হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান সবাই মানুষ হিসেবে এই দেশে জন্মগ্রহণ করেছি। এ দেশ আমাদের সবার। আমরা সবাই মিলে এ দেশকে গড়ব। কোনো অপশক্তির ষড়যন্ত্রে সম্প্রতি বিনষ্ট করে দেশের অগ্রগতি থামানো যাবে না।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশ্ব ধর্ম ও সংস্কৃতি বিভাগের অধ্যাপক আবু সায়েম সরকারের প্রতি আহ্বান রেখে বলেন, ‘যদি কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান দেশের হাজার বছরের সম্প্রতি বিনষ্ট করতে চায় তবে তাদের কঠিনভাবে দমন করতে হবে। প্রতিবেশী দেশের চোখ রাঙানিতে পিছপা হওয়া যাবে না।’
বিএনপির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক জয়ন্ত কুমার কুণ্ডু বলেন, জুলাই গণঅভ্যুত্থানের পরাজিত শক্তিরা থেমে নেই। তাদের কাজ সব সময় ষড়যন্ত্রের সঙ্গে বসবাস করা। তারা দেশের ২ সহস্রাধিক মানুষ খুন করেছে। শত শত মানুষ গুম করেছে। তারা আবার ফিরে আসতে দেশের সাম্প্রদায়িক সম্প্রতি বিনষ্ট করতে ষড়যন্ত্র করছে। জুলাই-আগস্ট অভ্যুত্থানের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রকারীদের তাদের বিরুদ্ধে সোচ্চার থাকতে হবে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক সুকোমল বড়ুয়া বলেন, এই দেশে হাজার বছরের যে সম্প্রতি চলছে সেটি বিনষ্ট হবে না। এটা আমাদের দেশ, আমরা এ দেশেই থাকব। হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান সবাই এ দেশে থাকব। যারা দেশের পরাজিত শক্তি তারা পালিয়ে গেছে। এই অশুভ শক্তি এখন দেশের ধর্মীয় সম্প্রতি বিনষ্ট করতে চাচ্ছে। এটা হতে দেওয়া যাবে না। আমরাই এ দেশে থাকব। আওয়ামী পতিত সরকারের অপপ্রয়াস এ দেশে আর টিকবে না।
সভাপতির বক্তব্যে যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. এমএ মজিদ বলেন, ৫২ বছরের ইতিহাসে আমাদের প্রতিবেশী দেশ কখনো আমাদের ভালো করেছে বলে মনে হয় না। যখনই দেশে স্থিতিশীলতা আসে, এগিয়ে যাই তখনই ষড়যন্ত্র করে আমাদের থামিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করে। আমরা কারও প্ররোচনা আর ষড়যন্ত্রে পা দেব না। স্বাধীনতার চেতনা আর সম্প্রীতির বন্ধনে আরও এগিয়ে যাব। আর এই সম্প্রীতির বন্ধনে বিভেদ সৃষ্টি করতে যারা ষড়যন্ত্র করবে তাদের এই দেশে জায়গা হবে না।
এ সময় মানববন্ধনে আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপির সহ-ধর্মবিষয়ক সম্পাদক অমলেন্দু, জাতীয়তাবাদী দলের জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য দেবাশীষ রায় কুন্ডু, পূজা উদযাপন কমিটির সাধারণ সম্পাদক সমীর কুমার বসু, পূজা উদযাপন কমিটির দপ্তর সম্পাদক গোবিন্দ কুন্ডু, গিওর সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ (অব.) জীবন কুমার সাহা প্রমুখ।