বর্তমানে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে যাচাইবাছাই ছাড়াই তথ্যগ্রহণ এবং তা বিশ্বাস করার প্রবণতা উদ্বেগজনকভাবে বাড়ছে। এই প্রবণতাকে ‘ব্রেন রট’ বলা হচ্ছে, যা মানুষের মস্তিষ্কের কার্যকারিতা ক্ষতিগ্রস্ত করে এবং তাদের মানসিক ও বুদ্ধিবৃত্তিক অবস্থার অবনতি ঘটায়।
বিশেষজ্ঞদের মতে, এই প্রবণতা তরুণদের পড়াশোনা, মনোযোগ এবং সৃজনশীলতা কমিয়ে দেয় এবং মানসিক চাপ, হতাশা ও উদ্বেগকে বাড়িয়ে তোলে।
ব্রেন রট মূলত ডিজিটাল মিডিয়ার অত্যধিক ব্যবহার ও আসক্তির ফলস্বরূপ তৈরি হচ্ছে, যা জেনারেশন আলফা এবং জেনারেশন জেডের মধ্যে বেশি দেখা যায়। তবে বর্তমানে এটি অন্যান্য বয়সী জনগণের মধ্যে ছেয়ে যাচ্ছে। অক্সফোর্ডের বর্ষসেরা শব্দ হিসেবে ‘ব্রেন রট’ নির্বাচিত হয়েছে এবং এর ব্যবহার ২৩০ শতাংশ বেড়েছে।
এই প্রবণতা দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোতে বিশেষভাবে উদ্বেগজনক। বাংলাদেশ, ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে এই সমস্যার মিল লক্ষ্য করা যাচ্ছে। সোশ্যাল মিডিয়ার অতিরিক্ত ব্যবহার এবং নিম্নমানের কন্টেন্টের প্রতি ঝোঁক এসব দেশের তরুণ সমাজকে ‘ব্রেন রট’-এর দিকে নিয়ে যাচ্ছে।
বিশেষজ্ঞরা জানান, এই প্রবণতা তরুণদের সৃজনশীলতা এবং মানসিক শক্তিকে দুর্বল করে দিচ্ছে।
বাংলাদেশে মোবাইল ফোনের সহজলভ্যতা এবং সোশ্যাল মিডিয়ার বৃদ্ধিপ্রাপ্ত ব্যবহার এই সমস্যা বাড়িয়ে দিয়েছে। বিশেষত, টিকটক, ফেসবুক রিলসসহ বিভিন্ন প্ল্যাটফর্মে সময় কাটানো তরুণদের পড়াশোনা এবং মনোযোগে নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে।
ভারত এবং পাকিস্তানে এই সমস্যা আরও তীব্র আকার ধারণ করেছে। বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করছেন, এই ডিজিটাল আসক্তি তরুণদের মানসিক অবসাদ এবং সামাজিক বিচ্ছিন্নতা বাড়িয়ে দিচ্ছে।
এই সমস্যা সমাধানে পরিবার এবং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোকে ডিজিটাল নিয়ন্ত্রণে মনোযোগী হতে হবে। সামাজিক মিডিয়ার অতিরিক্ত ব্যবহার থেকে বিরত থাকার জন্য সচেতনতা এবং যথাযথ নীতিমালা গ্রহণ করা জরুরি।