‘লাব্বাইক আল্লাহুমা লাব্বাইক’ ধ্বনি তুলে কাবা শরিফে প্রবেশ করেছে সুনামগঞ্জের জামালগঞ্জ উপজেলার শিশু রিফাত। তার পাশে রয়েছেন শিক্ষক ক্বারি আব্দুল কদ্দুস। সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হওয়া এই শিশুর কাবা শরিফে প্রবেশের দৃশ্য আবেগে আপ্লুত করেছে দেশ-বিদেশের বহু মানুষকে।
শিশু রিফাতের পবিত্র উমরাহ পালন অনেকের কাছেই বিস্ময়। সৌদি প্রবাসী চাঁদপুরের ব্যবসায়ী মো. শাহজাহান মিয়ার উদ্যোগে রিফাতসহ মোট ছয়জন এবার উমরাহ করার সুযোগ পেয়েছেন। তাদের মধ্যে রয়েছেন হতদরিদ্র তোতা মিয়া, বাবা-মা হারা প্রতিবন্ধী আনোয়ার মিয়া, রিফাতের শিক্ষক ক্বারি আব্দুল কদ্দুসসহ তার বাবা-মা।
সুনামগঞ্জের জামালগঞ্জ উপজেলার পশ্চিমপাড়া লম্বাবাঁক এলাকার নুরানিয়া মাদরাসার শিক্ষার্থী রিফাত সোশ্যাল মিডিয়ায় পরিচিতি পেয়েছিল জাতীয় মাছ পাঙাশ বলার জন্য। তার সাবলীল বাচনভঙ্গি এবং ইসলামী শিক্ষার প্রতি গভীর মনোযোগের জন্য তার ভিডিওগুলো তার শিক্ষক ক্বারি আব্দুল কদ্দুস পোস্ট করেছিলেন।
সম্প্রতি ক্বারি কদ্দুস আনোয়ার মিয়া উমরাহ করার আকাঙ্ক্ষা প্রকাশ করে একটি ভিডিও শেয়ার করেন। সেই ভিডিও দেখে আবেগাপ্লুত হয়ে সৌদি প্রবাসী শাহজাহান মিয়া নিজ উদ্যোগে তাদের উমরাহে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেন। গত ৫ ডিসেম্বর তারা মক্কায় পৌঁছান। সেখানে রিফাতকে পেয়ে সৌদি প্রবাসীদের মধ্যে আনন্দের জোয়ার বইতে দেখা গেছে। অনেকেই তাকে ঘিরে সেলফি তুলেছেন, কেউবা আবেগ ধরে রাখতে না পেরে জড়িয়ে ধরেছেন। প্রবাসীদের ভালোবাসায় সিক্ত হয়েছে রিফাত।
৮ দিন মক্কায় অবস্থানের পর ১২ ডিসেম্বর তারা মদিনায় পৌঁছান। মহানবী (সা.) এর স্মৃতিবিজড়িত এই পবিত্র ভূমি তাদের হৃদয়ে গভীর আবেগের ছাপ ফেলেছে। পবিত্র উমরাহ পালনের পর আগামী ১৮ ডিসেম্বর দেশে ফেরার কথা রয়েছে তাদের।
সৌদি প্রবাসী শাহজাহান মিয়ার এই উদ্যোগ শুধু রিফাতের জন্য নয়, সঙ্গে থাকা বাকি পাঁচজনের জীবনেও এক অবিস্মরণীয় অধ্যায় হয়ে থাকবে। ছোট্ট রিফাতের উমরাহ যাত্রা প্রমাণ করে, সামান্য সহযোগিতাও কারো জীবনে কতটা বড় পরিবর্তন আনতে পারে।
রিফাতের শিক্ষক ক্বারি আব্দুল কদ্দুস ঢাকা পোস্টকে জানান, চাঁদপুরের বাসিন্দা সৌদি প্রবাসী শাহজাহান ভাইয়ের অর্থায়নে আমাদের ৬ জনের উমরাহ হজের ব্যবস্থা হয়েছে। শাহজাহান ভাইসহ সবার জন্য দোয়া করেছি। এখানে যারা বাংলাদেশি আছেন তারা আমাদের খুব ভালোবাসা দিচ্ছেন।