সিরিয়ার ক্ষমতাচ্যুত প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদকে উৎখাত করা বিদ্রোহী গোষ্ঠী হায়াত তাহরির আল-শামের (এইচটিএস) সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ রাখছে যুক্তরাষ্ট্র। এ গোষ্ঠীটি বর্তমানে সিরিয়ার একটি বিশাল অংশ নিয়ন্ত্রণ করছে এবং তাদের সঙ্গেই যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তারা নিয়মিত যোগাযোগ করছেন।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির এক প্রতিবেদনে রোববার (১৫ ডিসেম্বর) এ তথ্য নিশ্চিত করেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিংকেন ।
বিবিসির প্রতিবেদন অনুযায়ী, মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী শনিবার (১৪ ডিসেম্বর) এক বিবৃতিতে বলেন, সিরিয়ার বিদ্রোহী গোষ্ঠী এইচটিএসের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছে যুক্তরাষ্ট্র, যা আসাদ সরকারের পতনের পর অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে।
ব্লিংকেন জানান, তাদের সঙ্গে যোগাযোগের মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্র সিরিয়ার ভবিষ্যৎ শাসনব্যবস্থা এবং জনগণের প্রতি বার্তা পাঠানোর চেষ্টা করছে।
ব্লিংকেন আরও বলেন, আমরা চাই সিরিয়ার জনগণ সফল হোক এবং এর জন্য আমরা তাদের সহযোগিতা করতে প্রস্তুত আছি। যদিও এই যোগাযোগ নিয়ে বিস্তারিত তথ্য শেয়ার করা হয়নি, তবে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এটি নিশ্চিত করেছেন যে, এইচটিএস এবং অন্য বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলোর সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ক বজায় রাখা হচ্ছে।
এদিকে, এক সময়ে আল-কায়েদার সঙ্গে সম্পৃক্ত এই এইচটিএস ২০১৮ সালে যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে বিদেশি সন্ত্রাসবাদী সংগঠন হিসেবে চিহ্নিত হয়েছিল। তবে, তাদের সঙ্গে যোগাযোগের ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তাদের ওপরে আইনগত কোনো বিধিনিষেধ নেই।
এই গোষ্ঠীটি দামেস্ক দখলের পর সিরিয়ায় নিরাপত্তা এবং রাজনৈতিক পরিবর্তনের জন্য কাজ করছে এবং তাদের বিরুদ্ধে উগ্রবাদীদের সম্পর্ক বিচ্ছিন্ন করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।
হায়াত তাহরির আল-শাম (এইচটিএস) গোষ্ঠীর নেতা আহমাদ আল-শারা শুক্রবার (১৩ ডিসেম্বর) এক ভিডিও বার্তায় সিরিয়ার জনগণকে তাদের ‘অসাধারণ ভূমিকার’ জন্য অভিনন্দন জানিয়েছেন। তিনি বলেন, এই বিজয়ের জন্য সিরিয়ার মহান জনগণকে ধন্যবাদ। আমরা সবাই মিলে একটি নতুন এবং শক্তিশালী সিরিয়া গড়তে কাজ করছি।
শারা তার বক্তব্যে সংখ্যালঘু এবং নারীদের অধিকার সুরক্ষার বিষয়ে ইতিবাচক মনোভাব প্রকাশ করেছেন। এই মন্তব্যকে যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তারা ইতিবাচক হিসেবে দেখছেন। মার্কিন এক কর্মকর্তা জানান, শারা নারীদের এবং সংখ্যালঘুদের অধিকার নিয়ে খুবই ভালো দৃষ্টিভঙ্গি প্রকাশ করেছেন। এটি সিরিয়ার ভবিষ্যৎ গঠনে গুরুত্বপূর্ণ বার্তা দেয়।
বিশ্লেষকদের মতে, শারার এমন বক্তব্য আন্তর্জাতিক মহলের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে এবং এটি এইচটিএসকে একটি প্রগতিশীল রাজনৈতিক শক্তি হিসেবে উপস্থাপনের চেষ্টা হতে পারে। তবে, গোষ্ঠীটির অতীত কর্মকাণ্ড এবং তাদের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নিয়ে এখনো প্রশ্ন রয়ে গেছে।