সিরিয়ায় বাশার আল আসাদ সরকারের পতনের মধ্য দিয়ে সে দেশে দীর্ঘ ১৩ বছরের গৃহযুদ্ধের অবসান ঘটেছে। তবে পরিস্থিতি এখনো স্বাভাবিক নয়। দেশটির সামনে রয়েছে নানা অনিশ্চয়তা। বিভিন্ন বিদ্রোহী গ্রুপ এবং আন্তর্জাতিক স্বার্থ গোষ্ঠীর চাপে পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে উঠেছে। এমন অবস্থায় শান্তিপূর্ণভাবে দামেস্কের ক্ষমতা হস্তান্তর প্রক্রিয়া নিয়ে এক বৈঠক করেছে আরব দেশগুলো।
কাতার ভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা জানিয়েছে, আরব লিগের উদ্যোগে এই বৈঠকের আয়োজন করে প্রতিবেশী দেশ জর্ডান। এতে অংশ নেয় জর্ডান, সৌদি আরব, ইরাক, লেবানন, মিসর, সংযুক্ত আরব আমিরাত, বাহরাইন ও কাতারের পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা।
বৈঠকে সিরিয়ায় শান্তিপূর্ণ ক্ষমতা হস্তান্তর প্রক্রিয়ায় সমর্থন দেওয়ার বিষয়ে একমত হয়েছে আরব লিগের দেশগুলো। বন্দরনগরী আকাবায় অনুষ্ঠিত বৈঠক শেষে শনিবার এ ঘোষণা দিয়েছে তারা। যৌথ ঘোষণায় বলা হয়, সিরিয়ার নতুন সরকারকে অবশ্যই অন্তর্ভুক্তিমূলক হতে হবে এবং সব ‘রাজনৈতিক ও সামাজিক শক্তির’ প্রতিনিধিত্ব থাকতে হবে।
যৌথ ঘোষণায় সিরিয়ার বিদ্রোহীদের সতর্ক করে দিয়ে বলা হয়, নাগরিকরা যেন জাতিগত, গোষ্ঠীগত ও ধর্মীয় বৈষম্যের শিকার না হন। একইসঙ্গে দামেস্কে সব নাগরিকের জন্য ন্যায্যতা ও সমতা প্রতিষ্ঠার আহ্বান জানায় আরব লীগ।
যৌথ ঘোষণায় বলা হয়, জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের ২২৫৪ রেজুলেশনের মূলনীতি অনুযায়ী জাতিসংঘ ও আরব লিগের সমর্থন নিয়ে সিরিয়ার রাজনৈতিক প্রক্রিয়া এগিয়ে নেওয়া উচিত। সিরিয়া সংকট আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে সমাধানে ঘোষিত পথনকশার ভিত্তিতে ২০১৫ সালে এই রেজুলেশন গৃহীত হয়েছিল।
বৈঠকের ফাঁকেই জাতিসংঘের সিরিয়া-বিষয়ক বিশেষ দূত গেইর পিডারসন, ইউরোপীয় ইউনিয়নের পররাষ্ট্রনীতি-বিষয়ক প্রধান কাজা কালাসের সঙ্গে আলাপ করেন আরব দেশগুলোর পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা। আলোচনা হয় যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন ও তুরস্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাকান ফিদানের সঙ্গেও। ধারণা করা হচ্ছে, সিরিয়ার পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে তুরস্ক সেখানে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।