আরেকটি ক্রিকেটীয় বছর শেষপ্রান্তে। বাংলাদেশ জাতীয় দলও শেষ আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলে ফেলল আজ (শনিবার)। এই মুহূর্তে দাঁড়িয়ে হয়তো পুরো বছরে বাংলাদেশ ক্রিকেটের প্রাপ্তি-অপ্রাপ্তি নিয়ে আলোচনা উঠবে। তার আগে জাতীয় বিজয় দিবসের মাস ডিসেম্বরে সুখকর স্মৃতি তৈরি করেছে বাংলাদেশ। এই মাসেই লাল-সবুজের প্রতিনিধিরা তিনটি বড় জয় পেয়েছে।
শুরুটা হয়েছে বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের (বিপিএল) ফ্র্যাঞ্চাইজি রংপুর রাইডার্সকে দিয়ে। প্রথমবার ক্যারিবীয় দ্বীপে আয়োজিত গ্লোবাল সুপার লিগে সোহান-সৌম্য-রিশাদ ও শেখ মেহেদীরা ইতিহাস গড়ে শিরোপা জিতেছে। পাঁচটি দেশের একটি করে ফ্র্যাঞ্চাইজি প্রথম এই বৈশ্বিক আসরে অংশ নিয়েছিল। ৬ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত প্রতিযোগিতার ফাইনালে মুখোমুখি হয় অস্ট্রেলিয়ান ফ্র্যাঞ্চাইজি ভিক্টোরিয়া ক্রিকেট একাডেমি ও রংপুর রাইডার্স।
টাইগার ওপেনার সৌম্য সরকারের দুর্দান্ত ব্যাটিংয়ে ম্যাচটি রংপুর ৫৬ রানে জিতেছে। আগে ব্যাট করতে নেমে তার ৮৬ রানের (৫৪ বল) সুবাদে ১৭৮ রানের বড় সংগ্রহ পায় বিপিএলের দলটি। ১৭৯ রানের লক্ষ্য তাড়ায় ভিক্টোরিয়া শুরুতে ঝড়ের আভাস দিলেও হারমিত সিং, শেখ মেহেদী, সাইফ হাসান ও রিশাদ হোসেনদের তোপে তারা ১২২ রানেই অলআউট হয়ে যায়। ৫৬ রানের জয় লাল-সবুজের প্রতিনিধিদের ডিসেম্বরে প্রথম আনন্দের উপলক্ষ্য এনে দেয়।
এর দু’দিন পরই (৮ ডিসেম্বর) বাংলাদেশ পায় এশিয়ান ক্রিকেটের শ্রেষ্ঠত্ব। ভারতীয় যুবাদের ৫৯ রানে হারিয়ে টানা দ্বিতীয়বার অনূর্ধ্ব-১৯ এশিয়া কাপের চ্যাম্পিয়ন হয়েছে বাংলাদেশ। রোমাঞ্চকর ফাইনালের মহারণে আগে ব্যাট করা যুব টাইগাররা সংগ্রহ করে ১৯৮ রান। সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত ৪৭ রান করেন রিজান হোসেন। এ ছাড়া শিহাব জেমস ৪০ ও ফরিদ হাসানের ৩৯ রানে বাংলাদেশ লড়াকু পুঁজি পায়। লক্ষ্য তাড়ায় আজিজুল হাকিম তামিম ও দেবাশীষ দেবার বোলিং তোপে ১৩৯ রানেই অলআউট হয়ে যায় ভারত।
বাংলাদেশ জাতীয় দলের হাত ধরে এসেছে আরেকটি ঐতিহাসিক সিরিজ জয়। গত ১৬ ডিসেম্বর ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ৬ বছর পর টি-টোয়েন্টি সিরিজ জিতেছে লিটন-তাসকিনদের দল। আজ ছিল সেই সিরিজের তৃতীয় ও শেষ টি-টোয়েন্টি। ম্যাচটিতে ৮০ রানের বড় জয়ে প্রথমবারের মতো ক্যারিবীয়দের হোয়াইটওয়াশ করল টাইগাররা। ২০১২ সালে আয়ারল্যান্ডের পর তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজে প্রতিপক্ষকে তাদের মাঠেই ধবলধোলাইয়ের স্বাদ পেল বাংলাদেশ। ভারত, পাকিস্তান এবং ইংল্যান্ডের পর চতুর্থ দল হিসেবে তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজে তারা ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ধবলধোলাই করল।
এদিন সেন্ট ভিনসেন্টে টস জিতে আগে ব্যাট করতে নেমে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৭ উইকেট হারিয়ে ১৮৯ রান সংগ্রহ করে বাংলাদেশ। দলের হয়ে ৪১ বলে সর্বোচ্চ অপরাজিত ৭২ রান করেন জাকের আলি। জবাবে তাড়া করতে নেমে ১৬.৪ ওভারে মাত্র ১০৯ রানে অলআউট হয় ওয়েস্ট ইন্ডিজ। বাংলাদেশের হয়ে ২১ রানে ৩ উইকেট শিকার করে ইনিংসের সেরা বোলার রিশাদ হোসেন। এ ছাড়া তাসকিন ও মেহেদি দুটি করে এবং তানজিম সাকিব ও হাসান মাহমুদ একটি করে উইকেট পেয়েছেন।