ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকা থেকে ইসরায়েলি জিম্মিদের মুক্তির আলোচনায় অগ্রগতি হয়েছে বলে জানিয়েছেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। সোমবার (ডিসেম্বর) ইসরায়েলি পার্লামেন্টে বক্তব্য দেওয়ার সময় তিনি এ তথ্য জানান। খবর টাইমস অব ইসরায়েল।
নেতানিয়াহু বলেন, ‘আমরা জিম্মিদের মুক্ত করতে বিভিন্ন পদক্ষেপ নিচ্ছি। যদিও সবকিছু প্রকাশ করা সম্ভব নয়, তবে কিছুটা অগ্রগতি হয়েছে। আমরা নিশ্চিত করতে চাই, জিম্মিদের সবাইকে তাদের বাড়িতে ফিরিয়ে আনতে আমাদের প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে।’
এর আগে ব্রিটিশ সংবাদ সংস্থা বিবিসিতে গাজায় যুদ্ধবিরতি চুক্তি নিয়ে ফিলিস্তিনের এক সিনিয়র কর্মকর্তা জানান, ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় হামাসের সঙ্গে ইসরায়েলের যুদ্ধবিরতি চুক্তি ৯০ শতাংশ সম্পন্ন হয়েছে।
উল্লেখ্য, গাজায় প্রায় ১৪ মাস ধরে ইসরায়েল ও হামাসের সংঘাত চলছে। ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের আক্রমণের পর ২৫১ জন ইসরায়েলিকে গাজায় জিম্মি করে নিয়ে যাওয়া হয়। ইসরায়েলের দাবি অনুযায়ী, তাদের মধ্যে ৯৬ জন এখনো জিম্মি এবং ৩৪ জন মারা গেছেন।
সম্প্রতি কাতার, মিসর ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় দোহায় ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে পরোক্ষ আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়েছে। আলোচনায় যুদ্ধবিরতি ও জিম্মি বিনিময় চুক্তি নিয়ে অগ্রগতির আশা দেখা দিয়েছে।
এ বিষয়ে হামাসসহ ফিলিস্তিনের অন্যান্য সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর পক্ষ থেকেও অগ্রগতির কথা বলা হয়েছে। তবে জিম্মিদের পরিবারগুলো যুদ্ধবিরতি প্রতিষ্ঠার প্রক্রিয়ায় সরকারের আন্তরিকতা নিয়ে প্রশ্ন তুলছে। সমালোচকদের অভিযোগ, প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু তার ডানপন্থি জোটের চাপে যুদ্ধ দীর্ঘায়িত করছেন এবং আলোচনা বিলম্বিত করছেন।
২০২৩ সালের নভেম্বরে এক সপ্তাহের যুদ্ধবিরতির পর থেকে দুপক্ষের আলোচনা নানা চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে। দীর্ঘস্থায়ী যুদ্ধবিরতি এবং যুদ্ধপরবর্তী শাসনব্যবস্থা নিয়ে দ্বন্দ্ব চুক্তির পথে বড় বাধা হয়ে আছে।
হামাসের সামরিক শাখা ইজ্জেদিন আল-কাসাম ব্রিগেড জানিয়েছে, ইসরায়েলের আক্রমণের ধরনের ওপর নির্ভর করে কিছু বন্দির ভাগ্য নির্ধারিত হবে। নেতানিয়াহু জিম্মিদের পরিবারের উদ্দেশে বলেন, ‘আপনাদের প্রিয়জনদের ফিরে পাওয়ার বিষয়ে আমরা সবসময় সচেষ্ট আছি। আশা হারাবেন না, আমরাও হারাব না।’
জিম্মি মুক্তির আলোচনার এই অগ্রগতি উভয় পক্ষের মধ্যে একটি দীর্ঘমেয়াদি সমাধানের আশা জাগাচ্ছে।