যশোরের মনিরামপুরে একমাসে ২৯টি সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন শিক্ষার্থীসহ ৯ জন। আহত হয়েছেন প্রায় অর্ধশত। এরমধ্যে সবচেয়ে বেশি মোটরসাইকেল দুর্ঘটনা।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, মনিরামপুর উপজেলায় মোটরসাইকেল, নসিমন-করিমন, ট্রাক্টর, বালুর ট্রাক, ব্যাটারিচালিত ভ্যান ও ইজিবাইকের সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। এ ছাড়াও ফিটনেসবিহীন বাস ও ট্রাক বরাবরই দাপিয়ে বেড়াচ্ছে। সড়কে চলাচলরত অধিকাংশ যানবহনের চালকরা অদক্ষ। সড়কে চলার নিয়ম কানুন না জানায় প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনার কবলে পড়ছেন তারা। এতে কখনো নিজেই মৃত্যুমুখে পতিত হচ্ছেন, আবার অন্যকে মারছেন।
সরকারের পক্ষ থেকে মহাসড়কে ছোট অবৈধ যানবাহন চলাচল বন্ধের ঘোষণা দেওয়া হলেও তা বাস্তবায়ন হয়নি। ফলে দিন দিন বাড়ছে দুর্ঘটনা। আর সড়কে ঝরছে তাজা প্রাণ।
মনিরামপুর ফায়ার সার্ভিস স্টেশনসহ নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা গেছে, গত ২১ ডিসেম্বর মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় উপজেলার হালসা গ্রামের ছবেদ আলী সরদারের ছেলে আফজাল হোসেন (৩৫), ১৫ ডিসেস্বর রাজারহাট-চুকনগর মহাসড়কের মনিরামপুরের চালকিডাঙ্গা এলাকায় দুই মোটরসাইকেল মুখোমুখি সংঘর্ষে উপজেলার দেলুয়াবাটি গ্রামের আহাদ আলী মোড়লের ছেলে সপ্তম শ্রেণিতে পড়ুয়া আসবাবুর রহমান (১৭) ও সদর উপজেলার ঝাউদিয়া গ্রামের মুনছুর আলীর ছেলে হাফিজুর রহমান (৫৫), গত ৯ ডিসেম্বর রাজগঞ্জ এলাকায় ট্রাকচাপায় উপজেলার চন্ডীপুর গ্রামের কোমর আলী শেখের ছেলে শেখ আব্দুল লতিফ (৫৫), রাজারহাট-চুকনগর মহাসড়কে উপজেলার পেয়ারাতলা মোড়ে মোটরসাইকেল ও পিকআপের মুখোমুখি সংঘর্ষে গত ২১ নভেম্বর মোটরসাইকেল আরোহী কলেজছাত্রী মুন্সিখানপুর গ্রামের ইলিয়াস হোসেনের মেয়ে ফারজানা ইয়াসমিন রিমি (২০) এবং একই গ্রামের হাসান আলীর ছেলে মারুফ হোসেন (১৮) নিহত হন।
এর আগে গত ১১ ডিসেম্বর একই স্থানের প্রায় একশ গজ দূরে ট্রাকের ধাক্কায় উপজেলার মধুপুর গ্রামের আবু মুছার স্ত্রী রিক্তা পারভীন (২৫) নিহত হন এবং তার তিন বছরের মেয়ে নুসরাত ও স্বামী আহত হন। গত ১ ডিসেম্বর ভাংড়ি ব্যবসায়ী সামছুর রহমান (৫৫), এ ছাড়া নভেম্বরে ট্রলিচাপায় কোদলাপাড়া গ্রামের মনিরুল ইসলামের ৭ বছরের ছেলে আরাফাত হোসেন নিহত হন। এসব সড়ক দুর্ঘটনায় প্রায় অর্ধশত আহত হয়েছেন।
সড়কে প্রাণহানির ঘটনায় উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছেন শিক্ষার্থীদের অভিভাবকসহ সাধারণ মানুষ। সড়কে প্রাণহানি রোধে এবং দুর্ঘটনা এড়াতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কার্যকরী ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি উঠেছে।
স্থানীয় আসাদুজ্জামান, রফিকুল ইসলামসহ অনেকেই বলেন, সড়কে যে হারে দুর্ঘটনা বেড়েছে, তাতে সন্তানকে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পাঠিয়ে বাড়ি ফিরে না আসা পর্যন্ত চিন্তায় থাকতে হয়।
মনিরামপুর ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের দায়িত্বরত কর্মকর্তা সাফায়েত হোসেন জানান, নভেম্বরে ও ডিসেম্বরে ২৯টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৪৯ জন আহত হয়েছেন।