বিচারের মুখোমুখি করতে ফ্যাসিবাদের নায়িকা শেখ হাসিনাকে দেশে আনা হবে বলে মন্তব্য করেছেন জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা মুহাম্মদ শাহজাহান। বুধবার (২৫ ডিসেম্বর) দুপুরে নোয়াখালী জিলা স্কুল মাঠে নোয়াখালী শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের কর্মী সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন।
মুহাম্মদ শাহজাহান বলেন, শোনা যায় শেখ হাসিনা দেশে আসবে। ফ্যাসিবাদের নায়িকা শেখ হাসিনা দেশে আসতে পারবে, তবে বিচারের মুখোমুখি করতে তাকে দেশে আনা হবে। রাজনীতি করতে তাকে দেশে আনা হবে না। শেখ হাসিনা অবৈধ প্রধানমন্ত্রী। বাংলাদেশের জনগণের রায়ে সংসদ গঠিত হয়নি। শেখ হাসিনার বড় উপহার হচ্ছে তিনি অনেকগুলো খুনের মাস্টারমাইন্ড। শেখ হাসিনার যদি নিরপেক্ষ ও আন্তর্জাতিক মানদণ্ডে বিচার করা হয়, তাহলে যেই ফাঁসির মঞ্চে শহীদ নিজামীকে ঝুলিয়েছিল, বাংলাদেশের মানুষ দেখবে শেখ হাসিনাও সেই ফাঁসির মঞ্চে ঝুলবে। এটা বাংলাদেশের মানুষ দেখবে। এছাড়া বাংলাদেশের এ মাটিতে আবার ফ্যাসিবাদ ফিরিয়ে আনার জন্য শেখ হাসিনাকে আসতে দেওয়া হবে না।
তিনি বলেন, শেখ মুজিবের আমলে যুদ্ধাপরাধের মীমাংসিত ইস্যুকে ইস্যুতে পরিণত করে আলেম-ওলামাদের ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছে। বিডিআর বিদ্রোহের নামে পিলখানায় ৫৭ জন অফিসারকে হত্যা করে ফ্যাসিবাদের রাস্তা তৈরি করেছিল শেখ হাসিনা। যারা নেতাকর্মী রেখে পালিয়ে যায় তারা দেশ প্রেমিক রাজনীতিবিদ হতে পারে না।
মুহাম্মদ শাহজাহান বলেন, শেখ হাসিনা সরকার গুম, খুন, নির্যাতন ও সেনাবাহিনীর অফিসারদের হত্যার মাধ্যমে নির্বাচন ব্যবস্থা ধ্বংস করে দিয়ে চাকরির নামে ঘরে ঘরে লাশ উপহার দিয়েছে। ১০ টাকার চালের পরিবর্তে অর্থনীতি ব্যবস্থার ভেঙে দিয়ে কৃত্রিম দুর্ভিক্ষ তৈরি করেছে। আদালতে আলেম-ওলামাদের ডান্ডা বেড়ি পড়িয়ে নেওয়া হয়েছে। সাংবাদিকদের কলমে লিখতে বাধা দিয়ে শেখ হাসিনা বাকস্বাধীনতা ও ধর্মীয় স্বাধীনতা হরণ করে বাংলাদেশকে দাসের জাতীতে পরিণত করেছে।
সম্মেলনে শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আতিকুর রহমান প্রধান বক্তা হিসেবে বলেন, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আমরা আবেদন জানাবো। বিগত সময়ে যে সকল শ্রমিক হত্যা হয়েছে সেগুলো তদন্ত করে ট্রাইব্যুনাল গঠন করতে হবে। শ্রমিক লীগের নেতাদের কারণে শ্রমিকদের সব জায়গায় চাঁদা দিয়ে চলতে হয়েছে। যারা শ্রমিকদের নিপীড়ন, নির্যাতন ও হত্যা করেছে তাদের অবিলম্বে নিষিদ্ধ করতে হবে। শ্রমিক সংগঠনের মাধ্যমে যে সকল নেতারা কোটিপতি হয়েছে, অবৈধ টাকার পাহাড় গড়েছে তাদের গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনতে হবে।
তিনি বলেন, নতুন বাংলাদেশে আর কোনো চাঁদাবাজি চলবে না। যেখানে চাঁদাবাজি হবে সেখানে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে। চাঁদাবাজরা যেন আর মাথা তুলে দাঁড়াতে না পারে। শ্রমিকদের অধিকারের জন্য ৫৩ বছরে শ্রমিকরা কোনো কল্যাণ পায়নি। আপনারা এমন একটা সংস্কার করুন যেন শ্রমিকদের আর নিপীড়ন হতে না হয়, বিনা চিকিৎসায় মরতে না হয়।
নোয়াখালী জেলা শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের সভাপতি অ্যাডভোকেট জহিরুল আলমের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক মো. রেজওয়ানুল হকের সঞ্চালনায় সম্মেলনে জামায়াতে ইসলামীর নোয়াখালী জেলা আমির মাওলানা ইসহাক খন্দকার, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের সভাপতি আব্দুস সালাম, চট্টগ্রাম মহানগর শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের আমির এ.এস.এম লুৎফুর রহমান প্রমুখ বক্তব্য দেন।
সম্মেলনে নোয়াখালী জেলা জামায়াতের নায়েবে আমির মাওলানা নিজাম উদ্দিন ফারুক, মাওলানা সাইয়েদ আহাম্মদ, জেলা জামায়াতের সেক্রেটারি মাওলানা বোরহান উদ্দিন , ইসলামী ছাত্রশিবির নোয়াখালী শহর সেক্রেটারি ছাত্রনেতা হাবিবুর রহমান আরমান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।