সৌদি আরবে সড়ক দুর্ঘটনায় ময়মনসিংহের গফরগাঁও উপজেলার দুই যুবক নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় নিহতদের বাড়িতে চলছে শোকের মাতম। মরদেহের অপেক্ষায় চলছে স্ত্রী-সন্তানদের আহাজারি।
নিহতরা হলেন- গফরগাঁও উপজেলার পাগলা থানা এলাকার পাইথল গ্রামের বদরুদ্দিন তোতা মিয়ার ছেলে সুমন মিয়া (৩৮)। তিনি এক ছেলে ও এক মেয়ে সন্তানের জনক। অপরজন কুরচাই গ্রামের আবু সাঈদের ছেলে ইকরাম (২৪)। তিনি এক সন্তানের জনক।
এর আগে ২১ ডিসেম্বর সৌদি আরবের সময় বেলা ১১টার দিকে মদিনা শহরে ময়লার গাড়িকে পেছন থেকে আরেকটি গাড়ি ধাক্কা দিলে চার বাংলাদেশি শ্রমিক নিহত হন। এতে আরও দুজন হয়েছেন বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট সূত্র।
নিহত ইকরামের বাবা আবু সাঈদ বলেন, আমার ছেলে ইকরাম এক সন্তানের বাবা। এক বছর আগে সংসারের হাল ধরতে সৌদি আরবের মদিনায় গিয়েছিল। সেখানে ইকরাম রাস্তা পরিষ্কারের কাজ করত। ঘটনার দিন সকালে কাজ করে ময়লার গাড়িতে করে ৮/১০ জন বাসায় ফিরছিল। ফেরার পথে পেছন থেকে অন্য গাড়ি ধাক্কা দেয়। এতে ঘটনাস্থলেই আমার ছেলে ইকরামসহ চারজন মারা যায়। এ সময় আহত হয় আরও দুজন। চারজনের একজন আমার ছেলে ইকরাম। আরেকজন সুমন মিয়া, সে গফরগাঁও উপজেলার পাইথল গ্রামের বাসিন্দা। অপর দুজন টাঙ্গাইল জেলার বাসিন্দা বলে জানতে পেরেছি।
তিনি আরও বলেন, ছেলের মৃত্যুর খবর পাওয়ার পর থেকেই বাড়িতে শোকের মাতম চলছে। ছেলের মা বারবার মূর্ছা যাচ্ছে। ছেলের স্ত্রী রুনা শোকে পাথর হয়ে গেছে। কারও সঙ্গে কোনো কথা বলছে না। আমার ছেলের দুই বছরের এক সন্তান রয়েছে। সে শুধু সবার মুখের দিকে তাকিয়ে থাকে। মরদেহ আনার জন্য কাগজপত্র তৈরি করছি।
নিহত ইকরামের বড় বোন শাহিনুর বলেন, আমি ঢাকায় বসবাস করি। ভাইয়ের মৃত্যুর খবরে বাড়িতে এসেছি। আমার ভাই কাজে বের হওয়ার সময় সবার সঙ্গে কথা বলেছে, কে কেমন আছে জানতে চেয়েছে। আমার সেই ভাই কথা বলার কয়েক ঘণ্টা পরেই মারা গেছে। ভাই আর আমাদের সঙ্গে কথা বলবে না।
পাইথল গ্রামের নিহত সুমনের চাচা শাহিন মিয়া বলেন, সুমন এক যুগ ধরে সৌদি আরবের মদিনায় শ্রমিক হিসেবে কাজ করছে। গত দুই বছর আগে ছুটিতে বাড়ি এসেছিল। এভাবে তার মৃত্যু পরিবারের কেউ মেনে নিতে পারছে না। তার স্ত্রী, এক ছেলে ও এক মেয়ে রয়েছে। বাড়িতে শোকের মাতম চলছে। স্ত্রী-সন্তানরা মরদেহের অপেক্ষায় আছে।
বুধবার (২৫ ডিসেম্বর) পাগলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফেরদৌস আলম বলেন, নিহতদের মরদেহ আনার প্রক্রিয়া চলছে। তবে কখন বা কবে আসবে, তা এখনই বলা যাচ্ছে না।