ক্যারিয়ারের শেষ সময়টাতে একের পর এক নতুন বিতর্কে জড়াচ্ছেন বিরাট কোহলি। তারচেয়ে প্রায় অর্ধেক বয়সী অস্ট্রেলিয়ান ক্রিকেটারকে ধাক্কা দিয়ে ইতোমধ্যে শাস্তিও পেয়েছেন। সেই ঘটনার রেষ না কাটতেই আজ (শুক্রবার) কোহলিকে কেন্দ্র করে মুখোমুখি বিতণ্ডায় জড়ালেন দুই ভারতীয় ধারাভাষ্যকার। যশস্বী জয়সওয়াল রানআউট হওয়ার ঘটনায় কোহলি ‘স্কুলবালকের মতো ভুল’ করেছেন বলে মন্তব্য করেছেন সঞ্জয় মাঞ্জরেকার।
ভারতের ইনিংসের ৪১তম ওভারের ঘটনা। অজি পেসার স্কট বোল্যান্ডের বল মিড অনে ঠেলে দিয়ে দৌড় দেন জয়সওয়াল। তিনি নন-স্ট্রাইক প্রান্তে চলে এলেও, সেখানে থাকা কোহলি ফিল্ডারের দিকে তাকিয়ে নিজের জায়গাতেই ফিরে যান। এরপর প্যাট কামিন্সের ছুড়ে দেওয়া বলে অ্যালেক্স ক্যারি স্টাম্প ভেঙে ১০২ রানের জুটি ভাঙার উৎসবে মাতেন। সাধারণত এক্ষেত্রে স্ট্রাইকে থাকা ব্যাটার যদি রান নেওয়ার জন্য ডাকেন, তাহলে নন-স্ট্রাইকারের উচিৎ সেই ডাকে সাড়া দেওয়া। জয়সওয়াল আউট হওয়ার পর কোহলি হাত দিয়ে বোঝান তিনি ডাক শুনতে পাননি। সেই ভুল বোঝাবুঝি ভারতকে আরও বিপদে ফেলেছে।
এর আগে দলীয় মাত্র ৮ রানে রোহিত শর্মা এবং ৫১ রানে লোকেশ রাহুল ফিরলে সেই ধাক্কা সামলানোর চেষ্টা চালান কোহলি-জয়সওয়াল জুটি। ওপেনার জয়সওয়াল খেলছিলেন নিজের স্বাভাবিক ছন্দে, বিপরীতে নিখুঁত কাভার ড্রাইভ ও রক্ষণেও সাবলীল ছিলেন কোহলি। ফলে এই জুটিতেই ভারত দ্বিতীয় দিন শেষ করার আশা দেখছিল। কিন্তু জয়সওয়ালের (৮২) রানআউটে সব তছনছ। পরপরই কোহলি (৩৬) আউট হয়ে যান উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়ে। দিন শেষে ভারতের সংগ্রহ ৫ উইকেটে ১৬৪ রান।
আউট হয়ে ফেরার পথে কোহলিকে উদ্দেশ্য করে দুয়োধ্বনি দিয়েছে গুটিকয়েক দর্শক। তাকে কটাক্ষ করে মন্তব্য করতেও শোনা যায়। যা শুনে মেজাজ সংযত রাখতে পারেননি কোহলিও। ড্রেসিংরুমে ফেরার পথে আবারও বেরিয়ে এসে কে কী বলছে বোঝার চেষ্টা করেন। কিছু বলতেও দেখা যায় কোহলিকে। তবে জল বেশিদূর গড়ায়নি। এক নিরাপত্তারক্ষীর হস্তক্ষেপে উভয়ই শান্ত হয়, সেই স্থান ত্যাগ করেন কোহলিও।
এদিকে, দিনের খেলা শেষে স্টার স্পোর্টসের ধারাভাষ্যে থাকা ইরফান পাঠান ও সঞ্জয় মাঞ্জরেকারের আলোচনায় আসে কোহলি-জয়সওয়ালের ভুল বোঝাবুঝির বিষয়টি। প্রথমে সঞ্জয় বলেন, ‘শুধুমাত্র এটি বিরাট কোহলি হওয়ায়, আমরা তার দৃষ্টিকোণ থেকে বিষয়টি দেখছি। ফিল্ডারের দিকে তাকিয়ে সিঙ্গেল না নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়ে নিলেন, যা স্কুলবালকের (খুবই সাধারণ) মতো ভুল। নন-স্ট্রাইকার এই সিদ্ধান্ত নিতে পারে না। যদিও এখানে জয়সওয়ালের ভুল হয়ে থাকে, তাহলে ফিল্ডার কামিন্স বলটি নন-স্ট্রাইকে ছুঁড়ে মারত। কিন্তু কোহলি না দৌড়ানোয় জয়সওয়ালের হাতে আর কোনো সুযোগ ছিল না।’
মাঞ্জরেকারের যুক্তিতে একমত নন পাঠান। তিনি পাল্টা জবাবে বলেন, ‘ক্রিকেটে সত্যটা হচ্ছে যখন বল পয়েন্ট অঞ্চলে যাবে, তখন সিদ্ধান্তটি আসবে নন-স্ট্রাইকারের কাছ থেকে, সে অবশ্যই তাতে না বলতে পারবে।’ মাঞ্জরেকারও সেটি মানতে পারেননি, ‘ইরফান আমরা কথা বলছি সেই বলটি নিয়ে যেটা নন-স্ট্রাইকারের পেছনে।’ তখন অসন্তুষ্টি নিয়ে পাঠান বলে উঠেন, ‘ওকে, তুমি যদি আমাকে কথা বলতে না দাও, ঠিক আছে।’