রোহিত শর্মা যে সিডনি টেস্টে খেলবেন না তা নিয়ে আগে থেকেই গুঞ্জন ছিল। একাদশ ঘোষণার পর দেখা যায় সেই গুঞ্জনই সত্যি হয়েছে। নিয়মিত অধিনায়ক বিশ্রাম নিয়েছেন নাকি খারাপ ফর্মের জন্য বাদ পড়েছেন এমন চর্চার মধ্যেই দলে ফেরানো হয় আরেক ওপেনার শুভমান গিলকে। কিন্তু তাতেও খুব একটা লাভ হলো না সফরকারীদের।
কার্যত বাঁচা-মরার টেস্টে আরও একবার ব্যাটিং ভরাডুবি ভারতের। অস্ট্রেলিয়ার পেস আগুনে পুড়ে ৭২ দশমিক ২ ওভার স্থায়ী হয়েছিল ভারতের ইনিংস। স্কোরবোর্ডে ১৮৫ রানের বেশি তুলতে পারেনি টিম ইন্ডিয়া। স্বাগতিক বোলারদের মধ্যে স্কট বোল্যান্ড সর্বোচ্চ ৪টি এবং মিচেল স্টার্ক ৩টি উইকেট শিকার করেছেন।
চলতি বোর্ডার-গাভাস্কার ট্রফিতে ভারত আর ব্যাটিং বিপর্যয় কার্যত সমার্থক হয়ে উঠেছে। পার্থ থেকে ব্রিসবেন, সর্বত্রই অজি বোলিং লাইন আপের সামনে গুঁড়িয়ে গিয়েছে কোহলিদের প্রতিরোধ। সেই ছবিই ফের দেখা গেল সিডনিতে।
টস জিতে শুরুতে ব্যাটিং বেছে নেন ভারত অধিনায়ক জসপ্রীত বুমরহা। কিন্তু সেই সিদ্ধান্ত ব্যুমেরাং হয়েছে। ফর্মে থাকা দুই ওপেনার যশস্বী জয়সওয়াল এবং কে এল রাহুল এদিন ব্যর্থ। মাত্র ১৪ বল খেলে চার রানে আউট হন রাহুল। অন্যদিকে ২৬ বল খেলে যশস্বীর সংগ্রহ মাত্র ১০ রান। ক্রিজে বেশ কিছুক্ষণ সময় কাটালেও ২০ রান করে আউট হয়ে যান দলে ফেরা শুভমান গিল।
ম্যাচের অষ্টম ওভারে ব্যাটিংয়ে নামেন বিরাট কোহলি। ভারতের স্কোর তখন ২ উইকেট হারিয়ে ১৭ রান। এমন পরিস্থিতিতে কোহলিকে হারালে সমস্যা আরও বাড়তে পারতো ভারতের। কোহলির খেলা ইনিংসের প্রথম বলটি করেন স্কট বোল্যান্ড। অফ স্টাম্পের সামান্য বাইরে থাকা বলে খোঁচা দেন কোহলি। বল চলে যায় স্লিপে দাঁড়ানো স্টিভেন স্মিথের হাতে। তিনি ক্যাচ ধরে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেন। পুরো অস্ট্রেলিয়া দলও উদযাপন শুরু করে দিয়েছে ততক্ষণে। যেন তারা অনেকটাই নিশ্চিত যে এটা আউট।
কিন্তু মাঠের আম্পায়ার সৈকত নিশ্চিত ছিলেন না ক্যাচ ঠিকভাবে নেওয়ার ব্যাপারে। তিনি তৃতীয় আম্পায়ারের সাহায্য নেন। সেই দায়িত্বে ছিলেন ওয়েস্ট ইন্ডিজের জোয়েল উইলসন। তিনি প্রযুক্তির সাহায্য নিয়ে বার বার রিপ্লে দেখেন। সেখানে দেখা যায় স্মিথ ক্যাচ নিলেও বল মাটিতে ছুঁয়ে ছিল। যে কারণে নট আউটের সিদ্ধান্ত জানান উইলসন। অবশ্য শূন্য রানে জীবন পাওয়া কোহলি ইনিংস লম্বা করতে পারেননি আজও। দিনের দ্বিতীয় সেশনে ৬৯ বলে ১৭ রান করে ওই বোল্যান্ডের বলেই স্লিপে ক্যাচ দিয়েছেন।
ভারতের হয়ে সর্বোচ্চ ইনিংসটা উইকেটকিপার ব্যাটার ঋষভ পন্তের। ৯৮ বলে মাত্র ৪০ রান করেন তিনি। একাধিকবার অজি পেসারদের বলে আঘাত পান তিনি। তা সত্ত্বেও ইনিংস গড়ার চেষ্টা করেছিলেন। তবুও ইনিংস আর দীর্ঘ করতে পারেননি। শেষদিকে ভারতের ইনিংসের রান ১৫০ এর গণ্ডি পার করেন অধিনায়ক বুমরাহ নিজে। মাত্র ১৭ বলে ২২ রান করেছেন। তিনটি বাউন্ডারির পাশাপাশি একটি ছক্কাও আসে তার ব্যাট থেকে। বুমরাহ ম্যাজিকেই ১৮৫ পর্যন্ত পৌঁছায় ভারতের রান।