স্লোভাকিয়ার কাছ থেকে হুমকি পেয়েছে ইউক্রেন। এ নিয়ে নতুন দুশ্চিন্তায় রাশিয়ার সঙ্গে যুদ্ধরত দেশটি। কারণ, স্লোভাকিয়া যদি হুমকিটি বাস্তবে রূপান্তর করে তবে শরণার্থী নিয়ে আরও বিপাকে পড়বেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। খবর বিবিসির।
স্লোভাকিয়ায় থাকা ইউক্রেনীয় শরণার্থীদের জন্য আর্থিক সহায়তা অনেকখানি কমানোর হুমকি দিয়েছেন স্লোভাক প্রধানমন্ত্রী রবার্ট ফিকো। তিনি ১ লাখ ৩০ হাজারেরও বেশি ইউক্রেনীয় শরণার্থীর আর্থিক সহায়তা কমানোর হুমকি দিয়েছেন। জাতিসংঘ শরণার্থী সংস্থা (ইউএনএইচসিআর) জানিয়েছে, স্লোভাকিয়ায় বর্তমানে ১ লাখ ৩০ হাজারের বেশি ইউক্রেনীয় শরণার্থী আশ্রয় নিয়েছেন।
হুমকির পেছনের কারণ
ইউক্রেন নতুন বছরের ১ জানুয়ারি থেকে একটি গ্যাস পাইপলাইন বন্ধ করেছে, এই পাইপলাইনটি দিয়ে দীর্ঘদিন ধরে মধ্য ইউরোপে রাশিয়ার প্রাকৃতিক গ্যাস সরবরাহ হয়ে আসছিল। এই সরবরাহ ব্যবস্থার প্রধান প্রবেশদ্বার ছিল স্লোভাকিয়া। পাইপলাইনটির মাধ্যমে ট্রানজিট ফি বাবদ ৫০ কোটি ইউরো আয় করত স্লোভাকিয়া। এখন পাইপলাইন বন্ধ হয়ে যাওয়ায় দেশটি এ আয় হারানোর ঝুঁকিতে পড়েছে। আর তারই জেরে ইউক্রেনের সঙ্গে হঠাৎ করে সম্পর্কের অবনতি ঘটতে চলেছে স্লোভাকিয়ার।
স্লোভাক প্রধানমন্ত্রী ফিকো ইউক্রেনের পাইপলাইন বন্ধের পদক্ষেপকে ‘নাশকতা’ বলে বর্ণনা করেছেন। তিনি বলেন, ইউক্রেনে বিদ্যুৎ রপ্তানি বন্ধের প্রস্তাব দেবেন তিনি। একই সঙ্গে শরণার্থী সহায়তা কমানোর ওই হুমকি দেন তিনি।
২০১৪ সালে রাশিয়া ক্রিমিয়া উপদ্বীপ নিজেদের অংশীভূত করে নেওয়ার পরের বছর ইউক্রেন দেশটি থেকে গ্যাস কেনা বন্ধ করে দেয়। এরপর মস্কো ও কিয়েভের মধ্যকার বিপর্যস্ত সম্পর্ক ইউরোপে রাশিয়ার গ্যাস রপ্তানির সবচেয়ে পুরোনো পাইপলাইনটি বন্ধ হওয়ার ক্ষেত্রে মূল ভূমিকা রাখে। বুধবার এক বিবৃতিতে ইউক্রেনের জ্বালানিমন্ত্রী জেওরমান হালুশচেঙ্কো বলেন, ‘রাশিয়ার গ্যাসের ট্রানজিট বন্ধ করে দিয়েছি আমরা। এটি একটি ঐতিহাসিক ঘটনা। রাশিয়া তার বাজার হারাচ্ছে, তারা আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়বে।’
স্লোভাক প্রধানমন্ত্রী ফিকো অভিযোগ করে বলেন, ইউক্রেনের এ সিদ্ধান্তের কারণে গ্যাস সরবরাহ ব্যবস্থায় জড়িত থাকা অন্যান্য দেশ থেকে ট্রানজিট ফি ববাদ পেয়ে আসা অর্থ স্লোভাকিয়া পাবে না। এতে স্লোভাকিয়ার বিপুল অঙ্কের আর্থিক ক্ষতি হবে। এ ক্ষেত্রে স্লোভাকিয়ার জন্য একমাত্র বিকল্প হচ্ছে, ট্রানজিট চুক্তি নবায়ন করা অথবা আর্থিক ক্ষতি পুষিয়ে নিতে ক্ষতিপূরণ দাবি করা। ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি গত মাসে রাশিয়াকে অর্থায়ন ও ইউক্রেনকে দুর্বল করে পুতিনকে সহায়তা করার জন্য ফিকোকে দায়ী করেছিলেন। তিনি বলেছিলেন, ইউক্রেনীয়দের ভোগান্তি আরও বাড়ানোর রাশিয়ার চেষ্টায় ফিকো স্লোভাকিয়াকেও টেনে আনছেন।
আর এখন স্লোভাকিয়া ইউক্রেনের বিরুদ্ধে পাল্টা অভিযোগ করে শরণার্থীদের সহায়তা কমানোসহ বিদ্যুৎ রপ্তানি বন্ধের হুমকি দিল।