আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস ও শহিদ দিবস-২০২৫ আয়োজন উপলক্ষ্যে ছাত্র সংগঠনগুলোর সঙ্গে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের মতবিনিময় সভায় বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের নেতাকর্মীর উপস্থিতি থাকায় আপত্তি জানিয়েছে ৫ সংগঠন।
সংগঠনগুলো হলো- বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল, সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্ট, বিপ্লবী ছাত্র মৈত্রী এবং গণতান্ত্রিক ছাত্র কাউন্সিল।
রোববার (১৬ ফেব্রুয়ারি) বিকেল সোয়া ৫টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের আব্দুল মতিন ভার্চুয়াল ক্লাসরুমে এই সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সভায় উপস্থিত ছাত্রসংগঠনগুলোর কয়েকজন নেতার সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, সভায় শিবিরের উপস্থিতি নিয়ে আপত্তি তুলে পাঁচটি ছাত্রসংগঠন। তবে সেখানে ১০ থেকে ১২টি সংগঠনের নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নের দপ্তর সম্পাদক মেরাজ খান আদরের প্রেরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ১৯৭১ এর মহান মুক্তিযুদ্ধে গণহত্যায় জড়িত সংগঠন ইসলামী ছাত্রশিবিরকে আমন্ত্রণ জানানোয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের মতবিনিময় সভা বর্জন করেছে বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন ও অপরাপর ছাত্রসংগঠন।
বিবৃতিতে বলা হয়, সভায় বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন, কেন্দ্রীয় সংসদের সভাপতি মাহির শাহরিয়ার রেজা, সাধারণ সম্পাদক বাহাউদ্দিন শুভ এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সংসদের সদস্য এনামুল হাসান অনয় উপস্থিত ছিলেন। সভায় ছাত্রশিবিরের উপস্থিতির বিষয় নিশ্চিত হলে ছাত্র ইউনিয়ন, ছাত্রদল, ছাত্রফ্রন্ট, ছাত্র মৈত্রীসহ অপরাপর ছাত্র সংগঠনগুলো প্রতিবাদ জানায়। এক পর্যায়ে ছাত্র ইউনিয়নসহ বাকি সব ছাত্র সংগঠন সভা বর্জন করে মিটিং স্থল ত্যাগ করে।
ছাত্র ইউনিয়ন সভাপতি মাহির শাহরিয়ার রেজা বলেন, মহান মুক্তিযুদ্ধে গণহত্যাকারী সংগঠন ইসলামী ছাত্রশিবিরের সঙ্গে ছাত্র ইউনিয়ন কোনো আলোচনায় অংশগ্রহণ করতে পারে না। শুধু মুক্তিযুদ্ধে গণহত্যা নয়, ছাত্র শিবিরের সুদীর্ঘ সন্ত্রাসের ইতিহাস রয়েছে। ছাত্র ইউনিয়ন, ছাত্রদল, ছাত্র মৈত্রীসহ অনেক ছাত্র সংগঠনের কর্মীর রক্ত লেগে আছে এই ছাত্র শিবিরের হাতে। গণহত্যাকারী, সন্ত্রাসীর সঙ্গে কোরো আলোচনা নয়।
তবে ছাত্রসংগঠনের নেতারা বলেন, সভা আনুষ্ঠানিকভাবে শেষ হওয়ার পরেই ছাত্রনেতারা সভাস্থল ত্যাগ করেন।
জানা যায়, ছাত্রশিবিরের পক্ষে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক নুরুল ইসলাম সাদ্দাম, ঢাবি সভাপতি এসএম ফরহাদ এবং সেক্রেটারি জেনারেল মহিউদ্দিন খান।
আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস ও শহিদ দিবস-২০২৫ আয়োজক কমিটির আহ্বায়ক কলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক ছিদ্দিকুর রহমান খান বলেন, একুশে উদ্যাপন নিয়ে আমাদের সভা ছিল। সেখানে কোনো একটা ছাত্রসংগঠনের ব্যাপারে আপত্তি উঠেছ। তাদের সব কথাই শুনেছি আমরা। যে সমস্ত প্রশ্ন উঠেছে সেগুলো সমাধান করার এখতিয়ার এই কমিটির নেই। তাই তাদের পরামর্শ দিয়েছি যথাযথ ফোরামে তাদের কথা উপস্থাপনের জন্য। একুশে উদযাপনে তাদের কাছে সহযোগিতা চেয়ে মিটিং সমাপ্ত করেছি।