নিজেদের পণ্যের ওপর আরও ১০ শতাংশ শুল্ক আরোপের প্রতিবাদে যুক্তরাষ্ট্রের কৃষিপণ্যের ওপর পাল্টা শুল্ক আরোপ করেছে চীন। তবে দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র লিন জিয়ান জানিয়েছেন, তারা এ বিষয়টি সমাধানে ওয়াশিংটনের সঙ্গে আলোচনা করতে রাজি আছেন।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ক্ষমতা নিয়েই মেক্সিকো-কানাডা ও চীনের ওপর শুল্ক আরোপ করেন। যা আজ মঙ্গলবার (৪ মার্চ) থেকে কার্যকর হবে জানান তিনি।
ফেনটানিল নামক একটি ওষুধ অবাধে উৎপাদন ও যুক্তরাষ্ট্রে পাচারের অভিযোগ তুলে চীনা পণ্যের ওপর আরও ১০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেন ট্রাম্প। এরআগেও দেশটির পণ্যে ১০ শতাংশ শুল্ক ছিল। এতে করে দেশটির পণ্যে ২০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছে যুক্তরাষ্ট্র।
এই শুল্ক আরোপ থেকে সরে আসার আহ্বান জানিয়ে চীনা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র বলেন, “যে কোনো বাণিজ্য যুদ্ধের শেষ পরিণতি পর্যন্ত লড়াই করবে চীন। আমরা যুক্তরাষ্ট্রকে বলব বুলিংয়ের চেহারাটা সরিয়ে, দেরি হওয়ার আগে সঠিক আলোচনা ও সহযোগিতায় ফিরে আসুন।”
সংবাদমাধ্যম বিবিসি জানিয়েছে, চীন এবার যুক্তরাষ্ট্রের কৃষিপণ্যের ওপর শুল্ক আরোপ করে মূলত ট্রাম্পকে টার্গেট করেছে। কারণ দেশটির কৃষকরা তাকে ভোট দিয়েছেন। এখন চীনের শুল্ক আরোপের কারণে তারা ক্ষতিগ্রস্ত হলে সেটির চাপ পড়বে ট্রাম্পের ওপর।
যুক্তরাষ্ট্রের কৃষকদের উৎপাদিত কৃষিপণ্য যেমন— মুরগি, গরুর মাংস, শূকরের মাংস এবং সয়াবিনের সবচেয়ে বড় বাজার হলো বেইজিং। আগামী ১০ মার্চ থেকে এই সব পণ্য চীনে প্রবেশের ক্ষেত্রে ১০ থেকে ১৫ শতাংশ শুল্ক লাগবে।
আইকিওন কমোডিটিসের ওলে হো বার্তাসংস্থা রয়টার্সকে বলেছেন, “এই শুল্ক বৃহৎ ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রের জন্য নেতিবাচক। এটি দামের ওপর অমার্জিত প্রভাব ফেলবে। বিশ্বব্যাপী সয়াবিন ও ভূট্টার পর্যাপ্ত যোগান রয়েছে যেগুলো চীন আমদানি করতে পারবে। বিষয়টি যুক্তরাষ্ট্রের জন্যই একটি ইস্যু। কারণ তাদের উৎপাদিত ৩০ শতাংশ সয়াবিন চীনে আসে।”
বেইজিংয়ের আশা কৃষিপণ্যের ওপর শুল্ক আরোপ ট্রাম্পের ওপর ‘সম্ভাব্য আলোচনার আগে’ কিছু চাপ সৃষ্টি করবে।
পাল্টাপাল্টি শুল্ক আরোপের মাধ্যমে বিশ্বের দুই বৃহৎ অর্থনীতির দেশের মধ্যে পূর্ণ বাণিজ্যিক যুদ্ধ শুরুর শঙ্কা তৈরি হয়েছে। তবে চীন এক্ষেত্রে দুটি বিষয়ের ইঙ্গিত দিয়েছে। প্রথমত তারা বাণিজ্য যুদ্ধে লড়াই করতে প্রস্তুত আছে। দ্বিতীয়টি হলো— তারা আলোচনা করতে চায়।