ইসলাম ধর্মাবলম্বীদের জন্য ঈদ আল্লাহর পক্ষ থেকে অন্যতম এক নেয়ামত। যা পরিবারের সঙ্গে ভাগাভাগি করে নিতে নাড়ির টানে বাড়ির পানে ছুটতে চান বেশিরভাগ মানুষ। তবে ঈদকে কেন্দ্র করে ‘আবেগকে’ পেছনে রেখে গণমাধ্যমকর্মীদের ভাবতে হয় ভিন্নভাবে; ছুটতে হয় খবরের পেছনে। যখন সব অফিস-আদালত বন্ধ তখনও কর্মব্যস্ত থাকে গণমাধ্যমগুলোর অফিস। এ সময়ে দায়িত্বে থাকা গণমাধ্যমকর্মীদের ব্যস্ততা অন্য সাধারণ সময়ের তুলনায় বেশি।
ঈদের আনন্দ, পরিবারের সমাবেশ, মিষ্টি হাসি আর উৎসবের আমেজ—সবকিছুই ঈদ ঘিরে মানুষের জীবনে বিশেষ রং ছড়ায়। কিন্তু ঈদের দিনে যখন সবাই পরিবার-পরিজনের সঙ্গে সময় কাটায়, তখন গণমাধ্যমকর্মীরা তাদের দায়িত্ব পালন করতে অফিসে ব্যস্ত সময় পার করেন। ক্যামেরা, মাইক্রোফোন, কম্পিউটার আর নোটবুক নিয়ে তাদের ঈদ কাটে সংবাদ লেখায়, পরিবেশনায়, অনুষ্ঠান প্রযোজনায় অথবা প্রিন্ট মিডিয়ার কাজে।
গণমাধ্যমকর্মীদের জন্য ঈদ মানে সাধারণ ছুটির দিন নয়। অনলাইন নিউজ পোর্টাল, টেলিভিশন চ্যানেল, রেডিও স্টেশনগুলোতে ঈদের দিনেও ২৪ ঘণ্টা সংবাদ পরিবেশন চলে। তাই সংবাদকর্মী, ক্যামেরাপার্সন, এডিটর, প্রডিউসার, টেকনিশিয়ানসহ অনেকেই পরিবারের সঙ্গে ঈদ উদযাপন করতে পারেন না। সকাল থেকেই তাদের সংবাদ পরিবেশনে ব্যস্ত থাকতে হয়।
যেসব গণমাধ্যমকর্মী অফিসে ডিউটি করেন, তাদের অনেকেই পরিবারের সঙ্গে ভিডিও কল বা ফোনে কথা বলেন। মায়ের আক্ষেপ, বাবা-ভাইয়ের অভিমান, সন্তানের কান্না—সবই তারা মেনে নেন দায়িত্বের তাগিদে।
নিউজরুমে ঈদ উদযাপন :
ছুটি না পাওয়ায় গণমাধ্যমকর্মীদের যেমন আক্ষেপ থাকে, তেমনি সুযোগ থাকে সহকর্মীদের সঙ্গে ঈদ উদযাপন ও আনন্দ ভাগাভাগি করে নেওয়ার। এ সময় নিউজরুমগুলো হয়ে ওঠে পরিবারের অংশ। তবে সেটাও পূর্ণ আনন্দ দেয় না, কারণ মন পড়ে থাকে বাড়িতে।
দায়িত্বই প্রধান, তবুও থাকে মন খারাপ :
গণমাধ্যমকর্মীরা জানেন, তাদের কাজের মাধ্যমেই দেশবাসী ঈদের খবর, অনুষ্ঠান ও বিনোদন পেয়ে থাকেন। এই দায়িত্ববোধ গণমাধ্যমকর্মীদের অনুপ্রাণিত করে, কিন্তু তবুও ঈদের দিনে পরিবার থেকে দূরে থাকাটা কষ্টদায়ক। অনেকেই রাতের শিফট শেষে বাড়ি ফিরে পরিবারের সঙ্গে সময় কাটানোর চেষ্টা করেন, কিন্তু তখন ঈদের মূল আনন্দ অনেকটাই ফুরিয়ে যায়। ঈদের আনন্দে যখন সবাই মগ্ন, তখন গণমাধ্যমকর্মীদের পরিবারগুলোও তাদের প্রিয়জনকে ঘরে পেতে চায়।