২২ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের শেষ ম্যাচ হয়েছিল। এরপর জাতীয় ফুটবল দলের এশিয়ান কাপ বাছাইয়ের প্রস্তুতির জন্য ঘরোয়া ফুটবলের শীর্ষ স্তরের খেলা স্থগিত ছিল। ৪৫ দিন পর আগামীকাল ফেডারেশন কাপ দিয়ে আবার ঘরোয়া ফুটবল মাঠে ফিরছে।
আগামীকাল ফেডারেশন কাপের দুই কোয়ালিফায়ার ম্যাচ। ময়মনসিংহে রফিকউদ্দিন আহমেদ ভূইয়া স্টেডিয়ামে ব্রাদার্স ইউনিয়ন মুখোমুখি হবে রহমতগঞ্জের। দুপুর পৌনে তিনটায় একই সময় কুমিলায় ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত স্টেডিয়ামে ঢাকা আবাহনীর প্রতিপক্ষ বসুন্ধরা কিংস। দেড় মাস পর ঘরোয়া ফুটবল ফিরছে গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচ দিয়ে। অথচ দুই স্টেডিয়ামের মাঠই যথেষ্ট মানসম্মত পর্যায়ে নেই।
এবার ঘরোয়া ফুটবল শুরু থেকেই মাঠের মান নিয়ে ছিল আলোচনায়। স্বল্প সময় পাওয়ায় বাফুফে মাঠের কাজ করতে পারেনি বলে সেই সময় পাশ কাটিয়েছিল। দেড় মাস ঘরোয়া ফুটবল স্থগিত থাকলেও এই সময়ও তারা মাঠের মান উন্নয়নের মনোযোগ দেয়নি। উল্টো অবহেলা দৃশ্যমান হয়েছে। আগামীকাল গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচের আগে মাত্র ঘাস কাটার কাজ শেষ হয়েছে। যা ফুটবলের নিয়ম অনুযায়ী আরো কয়েক দিন আগেই হওয়ার কথা ছিল।
কিংস অ্যারেনা ছাড়া এবারের মৌসুমে তুলনামূলক ভালো মাঠ ময়মনসিংহের রফিকউদ্দিন আহমেদ ভূইয়া স্টেডিয়ামের। ময়মনসিংহ ফুটবল অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মুকুলের আন্তরিক উদ্যোগেই মূলত মাঠের অবস্থা ভালো ছিল এত দিন। দীর্ঘ বিরতির পর গুরুত্বপূর্ণ খেলা অথচ ফেডারেশন মাঠে পানি দেয়ার ব্যবস্থা করতে পারেনি বিগত কয়েক দিন। চৈত্রর খরতাপে মাঠ আরো শুষ্ক হয়েছে।
ময়মনসিংহ ফুটবল এসোসিয়েশনের সভাপতি মুকুল বলেন, ‘পানি একটু কম দেয়া হয়েছে। ২২ এপ্রিল ময়মনসিংহে ফাইনাল রয়েছে। ফাইনালে সুন্দর মাঠ উপহার দেয়ার চেষ্টা করব।’ মুকুল নিজ উদ্যোগে মাঠকর্মী, পানি আরো অনেক ব্যয় করে থাকেন। পরবর্তীতে সেগুলো ফেডারেশন পরিশোধ করে আবার বকেয়াও রাখে। কুমিল্লার অবস্থাও একই রকম। আগামীকাল খেলার আগে আজও চলেছে ঘাস কাটার কাজ।
আজ বিকেলে কুমিল্লা শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত স্টেডিয়ামে অনুশীলন করেছে ঢাকা আবাহনী। দলটির হেড কোচ মারুফুল হক বলেন, ‘আজ ঘাস কাটা শেষ হয়েছে। মাত্র ঘাস কাটা শেষ হওয়ায় মাঠ একটু স্লো থাকবে।’
ফুটবলে উন্নত বিশ্বের ক্লাবগুলোর নিজস্ব মাঠ থাকে। তারাই সেগুলো ব্যবস্থাপনা করে। বাংলাদেশে বসুন্ধরা কিংস ছাড়া অন্য কোনো ক্লাবের নিজস্ব ভেন্যু নেই। জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের কাছ থেকে অনুমতি নিয়ে ফেডারেশন বিভিন্ন জেলা স্টেডিয়ামে খেলা পরিচালনা করে। এশিয়ান ফুটবল কনফেডারেশনের নিয়ম রক্ষার্থে হোম-অ্যাওয়ে দেখানোর জন্য ক্লাবগুলোকে স্টেডিয়াম বন্টন করা হয়। মাঠ ব্যবস্থাপনা ও উন্নয়নের দায়িত্ব নিয়ে ফেডারেশন-ক্লাবগুলোর ‘ইদুর-বিড়াল’ খেলা হয় প্রায়ই।
মাঠের খেলা ফুটবল। মাঠের উপর খেলা অনেকাংশে নির্ভর করে। মাঠের মান ভালো না হলে ঘরোয়া ফুটবলের মানও বাড়বে না। ঘরোয়া ফুটবলে খেলার মান সঠিক না হলে জাতীয় দলের আন্তর্জাতিক ম্যাচেও প্রভাব পড়বে। অথচ মাঠের দিকে নজরই নেই ফেডারেশনের। বাফুফের অনেকগুলো স্ট্যান্ডিং কমিটি করলেও এখনো গ্রাউন্ডস কমিটিই করতে পারেনি। সহ-সভাপতি সাব্বির আহমেদ আরেফকে গ্রাউন্ডসের বিষয় দেখভাল করার কথা বললেও আনুষ্ঠানিক চিঠি না পাওয়ায় তারও সরাসরি দায়িত্ব নেই। বাফুফে প্রশাসনিক খাতে অনেক এক্সিকিউটিভ নিয়োগে লাখ লাখ টাকা ব্যয় করে অথচ মাঠের উন্নয়নের সময় তাদের বাজেট থাকে না।