লক্ষ্মীপুরের রায়পুরে বসতঘরে ঢুকে হামলার ঘটনায় অস্ত্রধারী ‘কিশোর গ্যাং’ সদস্যদের বিচারের দাবিতে মানববন্ধন করা হয়েছে। শনিবার (১২ এপ্রিল) সকালে রায়পুর থানার সামনে লক্ষ্মীপুর-চাঁদপুর সড়কে ভূক্তভোগী পরিবারের ব্যানারে এ আয়োজন করা হয়। এসময় বিক্ষোভ মিছিলও করা হয়েছে। ব্যানারে ১৪ জন কিশোরের ছবি দেখা যায়। সেখানে দাবি করা হয়, ওই কিশোরদের দৌরাত্ম্যে মানুষজন অতিষ্ট।
এসময় বক্তব্য রাখেন মাওলানা মাহবুবুর রহমান, বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের জেলা সংগঠক রায়হান হোসেন ও ভুক্তভোগী রাজিয়া বেগম প্রমুখ। এসময় তারা ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে বিচারের দাবি জানিয়েছেন। শতাধিক নারী-পুরুষ এতে অংশ নেয়।
স্থানীয়রা জানিয়েছে, ৩ এপ্রিল উপজেলার দক্ষিণ ইউনিয়নের উদমারা গ্রামে এলাহি বক্স পাটওয়ারী বাড়ির জাহাঙ্গীর আলমের ঘরে ঢুকে কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যরা হামলা চালায়। এতে কুপিয়ে ও পিটিয়ে জাহাঙ্গীর আলম, তার ছোট ছেলে জাবেদ হোসেন, মেয়ে শারমিন আক্তার ও ভাই আবুল কাশেমকে আহত করা হয়। এ ঘটনায় ৭ এপ্রিল সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আমলী অঞ্চল রায়পুর আদালতে জাহাঙ্গীরের স্ত্রী রাজিয়া বেগম বাদি হয়ে একটি মামলা দায়ের করেন।
মামলায় অভিযুক্তরা হলেন, জোবায়ের হোসেন, তানভীর হোসেন, নাবিল হোসেন, মো. সাব্বির, আব্দুর রহিম, পারভেজ, ছাব্বির হোসেন, মো. শাকিল, মো. রুবেল ও অজ্ঞাত ১৫ জন।
মামলা সূত্রে জানা যায়, মামলায় ৯ জনের নাম উল্লেখ ও ১৫ জনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়। বাড়ির সামনে বাদীর ছেলে জাবেদ সুপারি গাছ দিয়ে একটি মাচা তৈরি করে। ৩ এপ্রিল সন্ধ্যায় জাবেদসহ তার বন্ধুরা সেখানে বসে ছিল। তখন কে বা কাহারা ঢিল ছোঁড়ে। এতে তারা প্রতিবাদ করলে অভিযুক্তরা এসে জাবেদকে মারধরের চেষ্টা করে। পরে তাদের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। এর জের ধরেই রাতে দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে বাদীর বসতঘরে ঢুকে অভিযুক্তরা হামলা চালায়। এসময় তারা পিটিয়ে ও কুপিয়ে ৪ জনকে আহত করে। আদালত ঘটনাটি আমলে নিয়ে এফআইআর দাখিলের জন্য রায়পুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) নির্দেশ দেয়।
রাজিয়া বেগম বলেন, অভিযুক্তরা আমার স্বামীসহ ৪ জনকে পিটিয়ে ও কুপিয়ে আহত করেছে। এরমধ্যে ৩ জনকে ঢাকায় চিকিৎসা করানো হয়। মামলার পর অভিযুক্তরা গা ঢাকা দিয়েছে। এতে তাদের বক্তব্য জানা যায়নি।
রায়পুর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নিজাম উদ্দিন ভূঁইয়া বলেন, অপরাধীদের ছাড় দেওয়া হবে না। অভিযুক্তদের গ্রেপ্তারে পুলিশ চেষ্টা করছে।