চলতি বছর জুনের তৃতীয় সপ্তাহ থেকে জুলাইয়ের প্রথম সপ্তাহ ছিল সাফ চ্যাম্পিয়নশিপের সম্ভাব্য সময়সূচি। সেই অনুযায়ী আর মাত্র মাস দু’য়েক সময় থাকলেও এখনো ঠিক হয়নি ভেন্যু। ফলে আনুষ্ঠানিকভাবে খেলোয়াড় নিবন্ধনসহ কোনো কিছুই শুরু হয়নি। এতে জুনে সাফ মাঠে গড়ানো নিয়ে সংশয় তৈরি হয়েছে।
বাফুফের সাবেক সভাপতি কাজী সালাউদ্দিন সাফ সভাপতির দায়িত্বে। তিনিও আসন্ন সাফ সম্পর্কে সুনিশ্চিত করে কিছু বলতে পারলেন না, ‘ভেন্যু এখনো চূড়ান্ত কিছু হয়নি। মার্কেটিং পার্টনার বিভিন্ন বিষয় পর্যালোচনা করছে। সাফের পরবর্তী কংগ্রেস সভায় সিদ্ধান্ত আসবে।’
সাফের কংগ্রেস ২৪ মে নেপালের কাঠমান্ডুতে। সিনিয়র জাতীয় দলের একটি টুর্নামেন্ট আয়োজন কমপক্ষে দুই মাসের প্রস্তুতি প্রয়োজন আয়োজক ও অংশগ্রহণকারীদের। ২৪ মে সভার সিদ্ধান্তের অপেক্ষার অর্থ জুনে সাফ হওয়া অসম্ভবই। এ নিয়ে সাফ সভাপতির মন্তব্য, ‘সভার আগে আমার পক্ষে এ নিয়ে কিছু বলা সম্ভব নয়। সভায় উপস্থিত দেশগুলো তাদের মতামত রাখবে। এর ভিত্তিতেই সিদ্ধান্ত আসবে।’
সাফ চলতি বছর শুরুতে হোম অর অ্যাওয়ে ভিত্তিতে টুর্নামেন্ট আয়োজনের পরিকল্পনা করেছিল। মার্কেটিং পার্টনার স্পোর্টস ফাইভও এতে সম্মত ছিল। পরবর্তীতে সেই সিদ্ধান্ত থেকে সরে এসে বিগত সময়ের মতো একটি কেন্দ্রীয় ভেন্যুতে টুর্নামেন্ট আয়োজনের সিদ্ধান্ত হয়। মার্কেটিং পার্টনারের পছন্দের ভেন্যু ভারত ও বাংলাদেশ হলেও নানা বিবেচনায় এই দুই দেশ পিছিয়ে পড়ে। শ্রীলঙ্কা সাফ আয়োজনে আগ্রহ দেখায়। সাফের সভায় মার্কেটিং পার্টনারের মূল্যায়নের ভিত্তিতে শ্রীলঙ্কা স্বাগতিক এমন একটা আলোচনা হয়েছিল। শর্তসাপেক্ষ বিষয় থাকলেও শ্রীলঙ্কা ফুটবল ফেডারেশন তাদের অফিসিয়াল পেজে নিজেদের স্বাগতিক ঘোষণা করে।
শ্রীলঙ্কার ফুটবল ফেডারেশনের সভাপতি জাসওয়ার মাস খানেক আগে স্বাগতিক হওয়া নিয়ে বেশ জোরালো অবস্থানে ছিলেন। তিনিও এখন খানিকটা নরম সুরে, ‘২৪ মে নেপালের কাঠমান্ডুতে সাফের আরেকটি কংগ্রেস রয়েছে। সেই কংগ্রেসে সাফ থেকেই সাফ চ্যাম্পিয়নশিপের ভেন্যু ও অন্য বিষয়ে আনুষ্ঠনিক ঘোষণা আসবে।’
মার্কেটিং পার্টনার স্পোর্টস ফাইভ হোম অর অ্যাওয়ে থেকে আবার কেন্দ্রীয় ভেন্যুতে আসার বিষয়টি তেমন ইতিবাচক ছিল না। এরপর ভারত কিংবা বাংলাদেশকে কেন্দ্রীয় ভেন্যু হিসেবে না পাওয়ায় তারা আরো একটু ব্যাকফুটে। মার্কেটিং পার্টনারের সাপোর্ট ছাড়া সাফের পক্ষে টুর্নামেন্ট আয়োজন করা সম্ভবও নয়। জুনে সাফের অনিশ্চয়তার পেছনে এটাই মূল কারণ হিসেবে নানা মাধ্যমে জানা গেছে।
স্পোর্টস ফাইভের সঙ্গে নিবিড়ভাবে কাজ করছিলেন সাফের সাধারণ সম্পাদক আনোয়ারুল হক হেলাল। প্রায় এক দশক সাধারণ সম্পাদক থাকা হেলাল ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়ে ফেব্রুয়ারির শেষের দিকে পদত্যাগ করেন। ১ এপ্রিল থেকে দায়িত্ব নেন নেপালের পুরুষত্বম ক্যাটেল। নতুন সাধারণ সম্পাদকের শুরুতেই সাফ চ্যাম্পিয়নশিপের মতো বড় আসরের চ্যালেঞ্জ। জুনে সাফের সম্ভাব্য সময় হলেও নতুন সাধারণ সম্পাদক এখনো ঢাকার সাফ কার্যালয়ে পুরোপুরি থিতু হতে পারেননি। সপ্তাহ খানেকের মধ্যে সেক্রেটারি ঢাকায় আসবেন এমনটা জানালেন সভাপতি সালাউদ্দিন, ‘এএফসিতে দীর্ঘদিন চাকরিসূত্রে মালয়েশিয়া ছিল। সেখান থেকে সব কিছু গুছিয়ে এনে নেপালে সেটেল করছে। কয়েক দিনের মধ্যেই ঢাকায় থাকবে।’
১০ জুন ঢাকায় এশিয়ান কাপ বাছাইয়ের হোম ম্যাচের পর বাংলাদেশের পরিকল্পনায় ছিল সাফ টুর্নামেন্ট। জুনে সাফ না হলে বাংলাদেশের পরিকল্পনায় পরিবর্তন আসবে। সেক্ষেত্রে ৯ অক্টোবর বাংলাদেশে হংকংয়ের পরবর্তী হোম ম্যাচের আগে নির্ধারিত কোনো সূচি নেই।