মাত্র আধাঘণ্টায় ৩৬ বিঘা জমির পানের বরজ পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। শুক্রবার (২৫ এপ্রিল) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে রাজশাহীর বাগমারা উপজেলার খোদাপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। এতে প্রায় ৬০ জন পানচাষি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন।
ফায়ার সার্ভিস বলছে, ধারণা করা হচ্ছে- বিড়ি বা সিগারেট থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়েছে। আগুনে কৃষকের ২০ লাখ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
স্থানীয়রা জানান, দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে খোদাপুর সরদারপাড়া বিলের পান বরজে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। জুমার নামাজের সময় হওয়ায় পানের বরজে কোনো লোকজন ছিল না। ওই বিলের পান বরজের দক্ষিণ পাশে আগুন জ্বলতে দেখে পান বরজের কয়েকজন কৃষক। তারা চিৎকার শুরু করলে গ্রামের আশপাশের লোকজন এসে আগুন নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করে। এ সময় বাগমারা এবং মোহনপুর ফায়ার সার্ভিসকে খবর দেওয়া হয়। ফায়ার সার্ভিস কর্মীদের সঙ্গে স্থানীয় লোকজন মিলে আগুন নিয়ন্ত্রণ আনার চেষ্টা করে। অবশেষে দুটি ইউনিটের দীর্ঘ সময়ের চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে।
খোদাপুর গ্রামের ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক ইমান আলী জানান, তখন জুমার নামাজের সময়। হঠাৎ বিলের পান বরজের দক্ষিণ পাশে আগুন দেখা যায়। মুহূর্তেই বড় আকার ধারণ করে ভয়াবহ রূপ নেয়। স্থানীয় কৃষক ও ফায়ার সার্ভিসের প্রচেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হয়েছে। কিন্তু তার আগেই আমাদের ২০ বিঘা জমির পান বরজ পুড়ে ছাই হয়ে গেছে।
স্থানীয় প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবুল কালাম আজাদ বলেন, আগুন নেভানোর সুযোগ পাওয়া যায়নি। মাত্র আঘা ঘণ্টার মধ্যে পান বরজ পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। তবে আগুনের সূত্রপাত জানা যায়নি। হঠাৎ করে আগুন লেগেছে। জমির আশপাশে কোনো বসতবাড়ি নেই। জমি থেকে প্রায় ৩০০ ফুট দূরে মানুষের ঘরবাড়ি।
এ বিষয়ে বাগমারা উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ মো. আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ৬০ জন পানচাষির ৩৬ বিঘা জমির পানের বরজ পুড়েছে। আমরা বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। তারা ব্যবস্থা নেবেন।
এ বিষয়ে ৫ নম্বর আউচপাড়া ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য শামসুল ইসলাম বলেন, আগুন দুপুরে লাগে। তখন সবাই জুমার নামাজের প্রস্তুতি নিচ্ছে। অনেক কৃষকের পানের বরজ আগুনে পুড়ে গেছে। তারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আগুন কীভাবে লেগেছে তা জানা যায়নি।
তবে বাগমারা ফায়ার সার্ভিসের সাব অফিসার মিজানুর রহমান বলেন, ২০ বিঘা জমির পানের বরজ পুড়ে গেছে। এতে ২২ জন কৃষকের ক্ষতি হয়েছে ২০ লাখ টাকা। ধারণা করা হচ্ছে- বিড়ি-সিগারেটের আগুন থেকে ঘটনার সূত্রপাত।
এ বিষয়ে বাগমারা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মাহবুবুল ইসলাম বলেন, ঘটনাটি সত্যিই মর্মান্তিক। কৃষি অফিসারের মাধ্যমে ভিজিট করে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের সহযোগিতার ব্যবস্থা করা হবে।