খুলনার কয়রার দক্ষিণ বেদকাশি এলাকায় শাকবাড়িয়া নদী থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের দায়ে ড্রেজার মালিককে ১ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। শনিবার (২১ সেপ্টেম্বর) দুপুরে কয়রা উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট বিএম তারিক-উজ-জামান ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে এই জরিমানা আদায় করেন।
এর আগে কোস্টগার্ডের সদস্যরা শাকবাড়িয়া নদী থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের সময় পাঁচজনকে আটক করে। পরে জরিমানা আদায়ের মধ্যদিয়ে তাদেরকে সতর্ক করে ছেড়ে দেওয়া হয়।
স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, কয়রায় নদী থেকে অবৈধ বালু উত্তোলনের পেছনে একটি শক্তিশালী চক্র রয়েছে। সরকার পতনের পূর্বেও যেভাবে বালু উত্তোলন হতো, সরকার পতনের পরেও তারা রয়েছে বহাল তবিয়তে। সরকার পতনের পরে শুধু চক্রের সদস্য পরিবর্তন হয়েছে। ওই চক্রের মধ্যে স্থানীয় প্রভাবশালী ব্যক্তি, রাজনৈতিক নেতা, সরকারি কর্মকর্তাসহ অনেকেই যুক্ত রয়েছেন। অবৈধ বালু তোলার মাধ্যমে অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হচ্ছেন কতিপয় ব্যক্তি আর ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে সাধারণ মানুষ।
উপজেলার দক্ষিণ বেদকাশী ইউনিয়নের জোড়শিং, গোলখালী, আংটিহারা নামক স্থানে নদীতে কোনো চর না থাকলেও ড্রেজার মেশিন বসিয়ে দেদারসে বালু উত্তোলন ও বিক্রয় করে আসছে তারা। বাঁধের কাছ থেকে বালু খনন করার কারণে ঝুঁকির মধ্যে পড়েছে ওই এলাকার নদীরক্ষা বাঁধ। স্থানীয় প্রশাসন মাঝেমধ্যে ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান চালালেও অবৈধ এ কার্যক্রম বন্ধ হয় না। এ অবস্থায় নদী তীরের বেড়িবাঁধ ও আবাদি জমিগুলো ভাঙনের কবলে পড়ছে।
কয়রা উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) বিএম মো. তারিক-উজ-জামান ঢাকা পোস্টকে বলেন, শাকবাড়িয়া নদী থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনকালে অভিযান চালিয়ে ড্রেজারসহ পাঁচ শ্রমিককে আটক করে কোস্টগার্ডের সদস্যরা। কোস্টগার্ডের নিয়মিত টহলকালে আংটিহারা এলাকায় বালু উত্তোলনকালে তাদেরকে আটক করা হয়। ড্রেজার মালিকের নাম লেখা ছিল হারুণ এবং ফারুক। সংবাদ পেয়ে উত্তর বেদকাশি ফাঁড়ি থেকে ফোর্স নিয়ে দ্রুত সেখানে যায় পুলিশ। সেখানে গিয়ে দেখা যায় তারা বালু উত্তোলন করছেন। পরবর্তীতে ড্রেজারের সুতানী মাতু শেখকে ১ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়। পরে জরিমানা পরিশোধ করেছেন তারা। এরপর তাদেরকে সতর্ক করা হয়েছে। তারা পরবর্তীতে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করবে না মর্মে জানিয়েছেন। সেইসঙ্গে তারা স্বীকার করেছেন এভাবে বালু উত্তোলন করা অবৈধ।
বালু উত্তোলনের পেছনে প্রভাবশালী মহল রয়েছে স্থানীয়দের অভিযোগের বিষয়ে তিনি বলেন, আমরা নিয়মিতভাবে অভিযান পরিচালনা করি। অবৈধ বালু উত্তোলনের বিষয়ে সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টা না থাকলে সমাজকে সঠিকভাবে নিয়ে আসা সম্ভব না। এ জন্য সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টার প্রয়োজন।