লেবাননে বিমান হামলা চালিয়ে হিজবুল্লাহ প্রধান হাসান নাসরুল্লাহকে হত্যা করেছে ইসরায়েল। এর আগের সপ্তাহ থেকে নেতানিয়াহুর বাহিনী দক্ষিণ লেবাননে ব্যাপক বিমান হামলা শুরু করে। এর প্রেক্ষাপট তৈরি হয় হিজবুল্লাহর ব্যবহৃত পেজার, ওয়াকিটকি ও রেডিও ডিভাইস বিস্ফোরণের মাধ্যমে। তখন ইহুদিবাদীদের হুঁশিয়ারি করে প্রতিশোধের হুংকার দেন নাসরুল্লাহ।
তার শেষ ভাষণ হাসান নাসরুল্লাহ বলেন, হিজবুল্লাহ সবসময় গাজার মুসলিম ভাইদের পাশে থাকবে। আর সেই শপথ আমরা ৮ অক্টোবর, ২০২৩ থেকে গ্রহণ করেছি। শত বাধা ও প্রতিবন্ধকতা শর্তেও আমরা পিছিয়ে যাইনি, এক মুহূর্তের জন্য আমাদের গাজার অসহায় ভাই-বোনদের ভুলে যাইনি। নেতানিয়াহু, গালান্ট এবং ইসরায়েলের সেনাবাহিনীকে বলছি, তোমরা কখনোই উত্তরাঞ্চলের বসতিগুলো ফিরিয়ে নিতে পারবে না।
ইহুদিবাদী ইসরায়েলের পেজার ও ওয়াকিটকি হামলার লক্ষ্য ছিল হামাস ও হিজবুল্লাহর মতো প্রতিরোধ যোদ্ধাদের দুই ফ্রন্টকে আলাদা করা। কিন্তু তারা কী সফল হয়েছে? আমরা শহীদদের, তাদের পরিবারের, আহতদের, এবং অনুগত জনগণের পক্ষ থেকে বলছি- যতক্ষণ না গাজার ওপর আক্রমণ বন্ধ হয়, হিজবুল্লাহকে কোনোভাবেই থামানো যাবে না।
ইসরায়েল মাত্র ২ মিনিটে ৫ সহস্রাধিক মানুষকে হত্যা করতে চেয়েছিল। এ জন্য তারা কোনো নিয়মকানুনের তোয়াক্কা করেনি। কোথায়, কীভাবে নিরীহ মানুষ মারা যাচ্ছে, ইসরায়েল একবারও তা ভাবেনি।
একসাথে ঘটানো এই বিস্ফোরণে কত মানুষ আহত হতে পারে, হাসপাতালগুলোয় তাদের চিকিৎসা দিতে পারবে কি না, এই বিষয়গুলো তারা উপেক্ষা করে গেছে। একে আমরা কী বলব? কোনো সন্দেহ নেই এটি বড় ধরনের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড ও গণহত্যা। আমরা একে মঙ্গলবার এবং বুধবারের গণহত্যা বলব। এটি লেবানন, তার জনগণ, প্রতিরোধ, সার্বভৌমত্ব এবং নিরাপত্তার বিরুদ্ধে এক বড় নির্লজ্জ হামলা।
ইসরায়েল নাশকতার মাধ্যমে লেবাননে একযোগে হাজার হাজার পেজারের বিস্ফোরণ ঘটিয়েছে। এই হামলায় দখলদাররা সকল নিয়ম, আইন ও সীমারেখা অমান্য করেছে। কোনো নৈতিকতা, মানবিকতা বা আইন মানেনি। এমনকি হাসপাতালেও বিস্ফোরণ ঘটিয়েছে তারা। ফার্মেসি, বাজার, দোকান, বাড়ি, গাড়ি এবং রাস্তায়ও বিস্ফোরণ ঘটিয়েছে, যেখানে অনেক সাধারণ মানুষ, নারী ও শিশুরাও ছিল।