২০২২ সালের ফেব্রুয়ারির শেষ দিকে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে এখন পর্যন্ত মোট ৬ লাখ ৫১ হাজার ৮১৪ সেনা রুশ সেনা নিহত হয়েছেন বলে দাবি করেছে ইউক্রেনের সেনাবাহিনী। সোমবার ইউক্রেনীয় সেনাবাহিনী থেকে দেওয়া এক বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়েছে এ তথ্য।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, গত ৩১ মাসে সাড়ে ছয় লাখেরও বেশি রুশ সেনাকে নিহতের পাশাপাশি রুশ বাহিনীর ৮ হাজার ৮৬৯টি ট্যাংক, ১৭ হাজার ৪৭৬টি সাঁজোয়া যান, ২৫ হাজার ৪৯৫টি সাধারণ যানবাহন, ১৮ হাজার ৭৯৫টি গোলাবারুদের মজুত, ১ হাজার ২০৫টি মাল্টিপল রকেট লাঞ্চার সিস্টেম, ৭৬২টি এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম, ৩৬৯ টি যুদ্ধবিমান, ৩২৮টি হেলিকপ্টার, ১৬ হাজার ১৮৬টি ড্রোন, ২৮টি যুদ্ধজাহাজ ও গানবোট এবং একটি সাবমেরিন ধ্বংস করেছে ইউক্রেনীয় সেনারা।
রাশিয়ার সামরিক বাহিনী বা দেশটির প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে এই দাবির কোনো প্রতিক্রিয়া জানানো হয়নি, তবে সোমবার যেদিন এই বিবৃতি দিয়েছে ইউক্রেনের সেনাবাহিনী, সেই দিনই রুশ বাহিনীর ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় ইউক্রেনের দোনেৎস্কে ৩ জন নিহত ঝাপোরিজ্জিয়ায় ১৬ জন আহত হয়েছেন।
নিহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে; কারণ ইউক্রেনের দুর্যোগ মোকাবিলা দপ্তরের কর্মীরা বলেছেন, দোনেৎস্ক এবং ঝাপোরিজ্জিয়ার যে দুই এলাকায় হামলা হয়েছে, সেগুলো ঘণবসতিপূর্ণ এবং ধ্বংস্তূপের নিচে অনেকে চাপা পড়েছেন বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
২০১৫ সালে সাক্ষরিত মিনস্ক চুক্তির শর্ত লঙ্ঘণ, ক্রিমিয়াকে রুশ ভূখণ্ড হিসেবে স্বীকৃতি না দেওয়া এবং যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন সামরিক জোট ন্যাটোর সদস্যপদের জন্য ২০২২ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে সামরিক অভিযান শুরু করে রুশ বাহিনী, যা এখনও চলছে। রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন এ অভিযানের নির্দেশ দিয়েছিলেন।
প্রায় তিন বছরের যুদ্ধে দোনেৎস্ক, লুহানস্ক, ঝাপোরিজ্জিয়া এবং খেরসন— এই চার প্রদেশের দখল করেছে রাশিয়া। মস্কোর প্রস্তাব— কিয়েভ যদি ক্রিমিয়াসহ এই চার প্রদেশকে রুশ ভূখণ্ড হিসেবে স্বীকৃতি দেয়, তাহলে ইউক্রেনে সামরিক অভিয়ানের সমাপ্তি ঘোষণা করা হবে। অন্যদিকে কিয়েভের বক্তব্য, রাশিয়া যদি অধিকৃত অঞ্চলগুলো থেকে সেনা প্রত্যাহার করে নেয়, শুধু তাহলেই শান্তি সংলাপে বসবে ইউক্রেন।