বাংলাদেশে নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন আজ বলেছেন, বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ পরিস্থিতিতে যাই হোক না কেন, ঢাকা-বেইজিং সম্পর্ক উন্নয়নে চীনের প্রতিশ্রুতি অপরিবর্তিত রয়েছে। তিনি বলেন, ‘চীন আমাদের ঐতিহ্যগত বন্ধুত্বকে সুদৃঢ় করতে বন্ধুত্বপূর্ণ আদান-প্রদান ও বিভিন্ন ক্ষেত্রে পারস্পরিক স্বার্থে সহযোগিতাকে অধিকতর গভীর করতে বাংলাদেশের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করার জন্য আগ্রহী।’
বাংলাদেশে সফররত নৌ-বহরের কিউই জিগুয়াং ও জিং গ্যাংশান কমান্ডারদের নিয়ে তিনি চট্টগ্রাম নৌবাহিনীর এরিয়া কমান্ডার রিয়ার অ্যাডমিরাল মাসুদ ইকবাল, বাংলাদেশ নৌবাহিনীর ফ্লিট কমান্ডার রিয়ার অ্যাডমিরাল মো. মঈনুল হাসান ও চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল এস এম মনিরুজ্জামানের সঙ্গে সাক্ষাৎকালে এ মন্তব্য করেন।
বৈঠকে রাষ্ট্রদূত উচ্চমানের বেল্ট অ্যান্ড রোড সহযোগিতার পাশাপাশি দু’দেশের মধ্যে ব্যাপক কৌশলগত সহযোগিতামূলক অংশীদারিত্বকে এক নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাওয়ার ওপর জোর দেন। রাষ্ট্রদূত বলেন, চীন ও বাংলাদেশ ঐতিহ্যগতভাবে বন্ধুত্বপূর্ণ প্রতিবেশী ও ব্যাপক কৌশলগত সহযোগিতামূলক অংশীদার।
চীন-বাংলাদেশ বন্ধুত্ব ও সহযোগিতার বিষয়ে উভয় পক্ষ গভীরভাবে মতবিনিময় করেছে। উভয় পক্ষই চীন-বাংলাদেশ সম্পর্কের উন্নয়নে তাদের দৃঢ় আস্থা প্রকাশ করেছে এবং প্রতিরক্ষা ও নিরাপত্তা সহযোগিতা আরও জোরদার করার প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেছে।
এর আগে চীনা নৌবহর কিউই জিগুয়াং ও জিং গ্যাংশান বাংলাদেশে শুভেচ্ছা সফরে চট্টগ্রাম বন্দরে পৌঁছালে চীনের রাষ্ট্রদূত তাদের স্বাগত জানান। চীনা দূতাবাসের কূটনীতিকরা, এন্টারপ্রাইজ ও কনফুসিয়াস ইনস্টিটিউটের প্রতিনিধি ও এ দেশে অবস্থানরত চীনের নাগরিকরা স্বাগত অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। একটি উষ্ণ ও বন্ধুত্বপূর্ণ পরিবেশে চাইনিজ প্লান্ট আস্ক গ্রুপ ৮৩ চট্টগ্রাম বন্দরে নোঙ্গর করে।
এ সময় সেখানে উপস্থিত চীনারা বিপুল উৎসাহে চীন ও বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা উত্তোলন করে চীনা নৌবাহিনীর প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানায় এবং চীন-বাংলাদেশ বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের দীর্ঘায়ু কামনা করে।
নৌবহরের চারদিনের শুভেচ্ছা সফরকালে চীন ও বাংলাদেশ নৌবাহিনীর মধ্যে সহযোগিতা ও পারস্পরিক আস্থা বাড়াতে এবং অভিন্ন ভবিষ্যতে একটি সামুদ্রিক সম্প্রদায় গড়ে তুলতে অবদান রাখার জন্য দ্বিপাক্ষিক বৈঠক, জাহাজ খোলার দিন ও ডেক অভ্যর্থনাসহ ধারাবাহিক আয়োজন থাকবে।
চীনের নৌ-বহরের সর্বশেষ বাংলাদেশ সফরের চার বছর পর, এই সফরটি অনুষ্ঠিত হচ্ছে। বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার প্রতিষ্ঠার পর এটিই বাংলাদেশে প্রথম কোন রাষ্ট্রের নৌ-বহর সফর।
চীন-বাংলাদেশ বন্ধুত্ব ও সহযোগিতাকে আরও গভীর করতে সফরটি গুরুত্বপূর্ণ বলে জানিয়েছে চীনা দূতাবাস।