চাঁপাইনবাবগঞ্জে চাঁদাবাজি, হয়রানি ও নির্যাতনের অভিযোগে তিন পুলিশ সদস্যের নামে মামলা হয়েছে। এই মামলায় পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
বুধবার (১৬ অক্টোবর) দুপুরে চাঁপাইনবাবগঞ্জের চিফ জুডিশিয়াল আদালতের চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর আমলি আদালতের বিচারক সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আশরাফুল হক এ আদেশ দেন।
আজ চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর আমলি আদালতে মামলাটি করেন ডা. ইসমাইল হোসেন। তার বাড়ি চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলার নয়াগোলাহাট এলাকায় এবং তিনি বর্তমানে ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা হাসপাতালে কনসালটেন্ট (অর্থো-সার্জারি) হিসেবে কর্মরত।
মামলায় তিনজন আসামির নাম উল্লেখ করা হয়েছে। তারা হলেন, চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা গোয়েন্দা সংস্থার সাবেক উপ পিরদর্শক (এসআই) আবু আব্দুল্লাহ জাহিদ, কনস্টেবল খাদেমুল ইসলাম এবং গোমস্তাপুর থানার সাবেক ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জসিম উদ্দিন। এছাড়া অজ্ঞাতনামা আরও ৫ থেকে ৬ জনকে আসামি করা হয়েছে।
মামলার নথি ও আদালত সূত্রে জানা যায়, জেলা গোয়েন্দা সংস্থার সাবেক এসআই আবু আব্দুল্লাহ জাহিদ ডা. ইসমাইল হোসেনকে বিভিন্ন সময় ভয়-ভীতি দেখিয়ে চাঁদা দাবি করেন। ডা. ইসমাইল চাঁদা দিতে অপরগতা প্রকাশ করলে গত ১২/০৬/১৯ তারিখে চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলার শান্তিমোড় এলাকায় অবস্থিত সেবা ক্লিনিকে ডা. ইসমাইল হোসেনের চেম্বারে এসে হট্টগোল সৃষ্টি করে। একপর্যায়ে ডা. ইসমাইল হোসেনকে গালিগালাজ করে সাবেক এসআই আবু আব্দুল্লাহ জাহিদ শার্টের কলার চেপে ধরে মারধর করে। পরবর্তী সময়ে ডা. ইসমাইলকে বিভিন্ন মামলার ভয় দেখিয়ে হয়রনি করেন।
মামলার বাদী ডা. ইসমাইল হোসেন বলেন, চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা ডিবির সাবেক এসআই জাহিদ বহুদিন ধরে চাঁদা নেওয়ার জন্য চাপ দিচ্ছিল। আমি তাকে চাঁদা না দিলে সেবা ক্লিনিকে আমার ওপর হামলা করে। তার সঙ্গে একজন কনস্টেবল ছিল খাদেমুল, সেও আমার ওপর হামলা করে। এই হামলার সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ আমার কাছে সংগ্রহ করা আছে। আমাকে আরও বেশি হয়রানি করার জন্য সেই সময়েরে গোমস্তাপুর থানার ওসি জসীম উদ্দিনকে দিয়ে আমার অফিসে হানা দিয়েছিল। আমাকে অফিস থেকে বের করে দিয়েছিল। এছাড়া বিভিন্নভাবে হয়রানি করেছিল।
বাদী পক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট নূরে আলম সিদ্দীকি আসাদ বলেন, সাবেক ডিবি কর্মকর্তা এসআই আবু আব্দুল্লাহ জাহিদ চাঁপাইনবাবগঞ্জে কর্মরত অবস্থায় ত্রাসের রাজনীতি কায়েম করেছিলেন। তিনি বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষকে হয়রানি, চাঁদাবাজি ও নির্যাতন করেছেন। তিনি চাঁপাইনবাবগঞ্জের চিকিৎসক সমাজের ওপর আঘাত করেছেন এবং তাদের কাছে চাঁদা চেয়েছেন। গত ২০১৯ সালের দিকে এসআই জাহিদ তার বাহিনীকে নিয়ে গিয়ে ডা. ইসমাইলের কাছে চাঁদা দাবি করেছেন এবং চাঁদা না পেয়ে ডা. ইসমাইলকে শারীরীক ভাবে লাঞ্ছিত করেছেন। এছাড়া সেই সময় আমার মক্কেল গোমস্তাপুর স্বাস্থ কমপ্লেক্সে চাকরি করতেন, সেখানে গিয়েও তাকে নানাভাবে হয়রানি করেছেন।
তিনি আরও বলেন, মামলাটি তদন্তের জন্য পিবিআইকে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। আগামী ১৭ ডিসেম্বরের মধ্যে পিবিআইকে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের জন্য নির্দেশ দিয়েছেন।