পাকিস্তানের বিরোধী দল পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফের (পিটিআই) নেতা ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের মুক্তি, সরকারের পদত্যাগ ও সংবিধানের ২৬তম সংশোধনী বাতিলের দাবিতে রাজধানী ইসলামাবাদ অবরোধ করেছেন দলটির নেতাকর্মীরা। বিক্ষোভে উত্তাল ইসলামাবাদ থেকে পিটিআইয়ের কর্মী-সমর্থকদের ছত্রভঙ্গ করতে স্বয়ংক্রিয় আগ্নেয়াস্ত্র থেকে গুলি ছুড়েছে দেশটির নিরাপত্তা বাহিনী। হাজার হাজার নেতাকর্মী ইসলামাবাদের প্রাণকেন্দ্র ডি-চকে পৌঁছানোর পর সেখানে আইনশৃঙ্খলাবাহিনীর সাথে ভয়াবহ সংঘর্ষ হয়েছে।
কাতার-ভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরার প্রতিনিধি কামাল হায়দার ডি-চক থেকে বলেছেন, বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে পাক রেঞ্জার্সের সদস্যরা স্বয়ংক্রিয় অস্ত্র থেকে গুলি ছুড়েছেন। তিনি বলেন, এ সময় বিক্ষোভকারীদের লক্ষ্য করে তীব্র কাঁদানে গ্যাসের শেলও ছোড়া হয়েছে। ডি-চকের আকাশে কাঁদানে গ্যাসের ঘন মেঘ তৈরি হয়েছে।
হায়দার বলেন, নিরাপত্তাবাহিনীর তীব্র গুলি ও কাঁদানে গ্যাসের শেলের ব্যবহারে বিক্ষোভকারীরা পিছু হটলেও পরবর্তীতে আবারও ডি-চকে ফিরেছেন। ইসলামাবাদে চরম উত্তেজনাপূর্ণ পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।
‘‘আমরা আহত কয়েকজন বিক্ষোভকারীদের নিয়ে যেতে দেখেছি। তারা বলছেন, আহতের সংখ্যা প্রচুর হলেও তারা ডি-চক ছাড়বেন না। সেখানে আরও বেশিসংখ্যক মানুষের সমাগম হতে পারে বলে প্রত্যাশা করা হচ্ছে…। সরকার কীভাবে এই পরিস্থিতি মোকাবিলা করে, সেটি গুরুত্বপূর্ণ।’’
আল-জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ডি-চকে জড়ো হওয়া পিটিআই সমর্থকদের দ্রুত ছত্রভঙ্গ করার লক্ষ্যে রেঞ্জার্সের সদস্যরা তাজা গুলি চালিয়েছে। তাজা গুলির পাশাপাশি কাঁদানে গ্যাসের শেলও ব্যবহার করছে রেঞ্জার্স।
ইসলামাবাদের চারপাশের সড়ক-মহাসড়কে আইনশৃঙ্খলাবাহিনীর বসানো প্রতিবন্ধকতা গুঁড়িয়ে দিয়ে মঙ্গলবার সকালের দিকে ইসলামাবাদের প্রাণকেন্দ্র ডি-চকে পৌঁছান পিটিআইয়ের হাজার হাজার কর্মী-সমর্থক। সেখানে পৌঁছে কন্টেইনারে উঠে তারা ইমরান খানের মুক্তির দাবিতে বিভিন্ন ধরনের স্লোগান দেন এবং পিটিআইয়ের পতাকা উত্তোলন করেন।
ইমরান খানের স্ত্রী বুশরা বিবির নেতৃত্বে কর্মী-সমর্থকের বিশাল একটি বহর এখনও ইসলামাবাদ থেকে কয়েক কিলোমিটার দূরে রয়েছে। কর্তৃপক্ষের কঠোর প্রতিক্রিয়ার কারণে এই বহরের ইসলামাবাদ অভিমুখী গতি কমিয়ে দেওয়া হয়েছে।
এদিকে, খাইবার পাখতুনখাওয়া প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী ও পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফের (পিটিআই) নেতা আলী আমিন গান্দাপুর পিটিআইয়ের দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত কর্মী-সমর্থকদের ডি-চকে অবস্থান কর্মসূচি পালনের ঘোষণা দিয়েছেন।
পিটিআই প্রধানের ঘনিষ্ট এই সহযোগী বলেছেন, ‘‘ইমরান খান নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত আমরা ফিরে যাব না। এটা আমাদের দেশ। এই দেশকে স্বাধীন করতে আমাদের পূর্বপুরুষেরা আত্মত্যাগ করেছেন।’’