অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা মাহফুজ আলমের ফেসবুক পোস্টের কড়া প্রতিবাদ জানিয়েছে ভারত। এ ছাড়া এ বিষয়ে ঢাকার কাছে আনুষ্ঠানিক প্রতিবাদ জানিয়েছে দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
শুক্রবার (২০ ডিসেম্বর) পরররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নিয়মিত সাপ্তাহিক প্রেস ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানান দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল।
জয়সওয়াল বলেন, ‘নয়াদিল্লি সংশ্লিষ্ট সবাইকে প্রকাশ্য মন্তব্য করার সময় দায়িত্বশীল হওয়ার পরামর্শ দিতে চায়। এ বিষয়ে বাংলাদেশি কর্তৃপক্ষের কাছে আমাদের তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছি। আমরা জেনেছি, ওই পোস্টটি ইতোমধ্যে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। তবে আমরা সবাইকে মনে করিয়ে দিতে চাই, জনসমক্ষে মন্তব্য করার সময় সংশ্লিষ্ট সব পক্ষকে আরও সতর্ক থাকা উচিত।’
তিনি আরও বলেন, ‘ভারত বারবার বাংলাদেশের জনগণ এবং অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে তোলার আগ্রহের ইঙ্গিত দিয়েছে। কিন্তু এ ধরনের মন্তব্য জনসমক্ষে দায়িত্বশীল মন্তব্যের গুরুত্বকে স্মরণ করিয়ে দেয়।’
পিটিআইয়ের খবরে বলা হয়েছে, বর্তমানে মুছে ফেলা এক সাম্প্রতিক ফেসবুক পোস্টে উপদেষ্টা মাহফুজ আলম বলেছিলেন, শেখ হাসিনাকে প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে সরে যেতে বাধ্য করা বিদ্রোহকে ভারতের স্বীকৃতি দেওয়া উচিত।
সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে চলা সহিংস বিক্ষোভের জেরে শেখ হাসিনা পদত্যাগ করেন। এরপর আগস্ট মাসে তিনি একটি সামরিক বিমানে করে ঢাকা থেকে পালিয়ে ভারতে আশ্রয় নেন।
এদিকে বাংলাদেশে হিন্দু ও অন্যান্য সংখ্যালঘুদের ওপর সহিংস হামলার ঘটনায় বৃহস্পতিবারও উদ্বেগ জানিয়েছে নয়াদিল্লি। তারা বলেছে, সংখ্যালঘুদের জীবন ও স্বাধীনতা রক্ষা করার প্রধান দায়িত্ব ঢাকার অন্তর্বর্তী সরকারের।
ভারতের পররাষ্ট্রসচিব বিক্রম মিশ্রির সাম্প্রতিক বাংলাদেশ সফরের পরপরই দেশটির পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী কীর্তিবর্ধন সিং রাজ্যসভায় এ উদ্বেগের কথা ব্যক্ত করেন।
তিনি আরও বলেন, ‘বাংলাদেশে হিন্দু ও অন্যান্য সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার বিষয়ে ভারতের উদ্বেগ বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে বিভিন্ন উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক ও আলোচনা সভায় বারবার জানানো হয়েছে।’
গত ৫ আগস্ট হাসিনা সরকারের পতনের পর থেকে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে টানাপোড়েন চলছে। এমন পরিস্থিতিতে গত ৯ ডিসেম্বর ঢাকা সফর করেন ভারতের পররাষ্ট্রসচিব বিক্রম মিশ্রি। তার সফর ছিল নয়াদিল্লি ও ঢাকার মধ্যে প্রথম শীর্ষ পর্যায়ের কূটনৈতিক যোগাযোগ। তিনি ড. ইউনূস, পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন ও পররাষ্ট্রসচিব জসীম উদ্দিনের সঙ্গে দেখা করেন।