ফুটবলে কোচই সর্বেসর্বা। প্রতিপক্ষ, ফর্মেশন ও পছন্দ অনুযায়ী কোচই খেলোয়াড় নির্বাচন করেন। বাংলাদেশ জাতীয় দলেও এই রীতি অনুসরণ হয়ে আসছে। তবে সাম্প্রতিক সময়ে জাতীয় দলের কোচ হ্যাভিয়ের ক্যাবরেরা দল নির্বাচন নিয়ে প্রশ্ন উঠে অনেক। তাই বাফুফের জাতীয় দল কমিটির আজকের সভায় একটি সিলেকশন কমিটি করার দাবি উঠেছে।
বাফুফে সভাপতি তাবিথ আউয়ালের নেতৃত্বে জাতীয় দল কমিটির প্রথম সভা আজ অনুষ্ঠিত হয়েছে। তিনি ব্যক্তিগত সফরে ইংল্যান্ড থাকায় এই সভা অনলাইনে অনুষ্ঠিত হয়। জাতীয় দল কমিটির একাধিক সদস্য একটি সিলেকশন কমিটির প্রয়োজনীয়তা উথাপন করেন। কমিটির চেয়ারম্যান ও বাফুফে সভাপতি তাবিথ আউয়াল বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে শুনলেও কোনো সিদ্ধান্ত নেননি।
স্পেনিশ কোচ হ্যাভিয়ের ক্যাবরেরা বাংলাদেশ জাতীয় দলের দায়িত্বে তিন বছরের বেশি সময়। প্রাথমিক স্কোয়াডে তার খেলোয়াড় নির্বাচন নিয়ে প্রায়ই প্রশ্ন উঠে। অনেকে ঘরোয়া লিগে নিয়মিত খেলছেন এবং ভালো পারফরম্যান্স করলেও প্রাথমিক স্কোয়াডেও জায়গা পান না। অন্য দিকে যারা ক্লাবে অনিয়মিত তাদের অনেকে আবার জাতীয় দলে খেলেন। এ রকম বিষয়টি বাফুফের বর্তমান জাতীয় দল কমিটির অনেকের কাছেই প্রশ্ন জেগেছে। তাই তাদের কয়েকজনের মতামত, প্রাথমিক স্কোয়াড ঘোষণার আগে কোচ সিলেকশন কমিটির কাছে তালিকা দেবে। সিলেকশন কমিটির পর্যবেক্ষণ থাকলে কোচকে অবহিত করবে। দুই পক্ষ পর্যালোচনার পরই তালিকা প্রকাশ হবে। এতে কোচ আরো বাড়তি জবাবদিহিতার মধ্যে থাকবে বলে মনে করেন তারা।
বাফুফে কর্তাদের ধারণা, ব্যক্তি ভেদে ভিন্ন। হ্যাভিয়ের ক্যাবরেরাকে সিলেকশন কমিটির মাধ্যমে আরো বেশি জবাবদিহিতায় রাখতে চান অন্য দিকে নারী দলের বৃটিশ কোচ পিটার বাটলার যার ওপর সিনিয়র খেলোয়াড়দের বিস্তর অভিযোগ। তাকে নিয়ন্ত্রণ/পর্যবেক্ষণের জন্য নেই তেমন কোনো উদ্যোগ। তবে আজকের সভায়, একটি মৌলিক প্রশ্নও উথাপন হয়েছে। জাতীয় দল বলতে নারী-পুরুষ উভয় বোঝায় তাহলে নারী জাতীয় দল এই কমিটির অধীনে কেন নয়? এই বিষয়টি সামনের নির্বাহী সভাতেও উঠতে পারে।
এএফসিতে আজকের মধ্যে কোচ, ম্যানেজারের নাম প্রেরণের ডেডলাইন ছিল। ডেডলাইনের দিনই কেন সভা এমন প্রশ্নও উঠেছে। বাফুফে নির্বাহী কমিটির কয়েকজন কর্মকর্তা জাতীয় দলের ম্যানেজার হতে আগ্রহ প্রকাশ করলেও বাফুফে সভাপতি জবাবদিহিতা ও পেশাদারিত্ব নিশ্চিত করতে কমিটির বাইরে থেকে ম্যানেজার নিয়োগ দেয়ার যুক্তি তুলে ধরেন সভায়। নির্বাহী কমিটির কর্মকর্তারা দলের সঙ্গে পর্যবেক্ষক/দলনেতা হিসেবে থাকতে পারবেন। আমের খান পুনরায় বাংলাদেশ দলের ম্যানেজারের দায়িত্ব পেয়েছেন।
২৮ ফেব্রুয়ারি থেকে বাংলাদেশের এশিয়া কাপ বাছাইয়ের প্রস্তুতি শুরু হবে। সেই প্রস্তুতির জন্য জাতীয় দলের কোচিং স্টাফ নিয়ে আলোচনা হয়েছে। ফিজিও, ট্রেইনার, গোলরক্ষক ও সহকারী কোচ চার জন নিয়োগ দেয়া হবে। এই চার জনই বিদেশি হচ্ছেন এটা আজকের সভায় চূড়ান্ত হয়েছে। তাদের আর্থিক বিষয়াদি আলোচনা করে দুই এক দিনের মধ্যে এদের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে ফেডারেশন।