ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা ভূখণ্ডে অবিরাম হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েল। টানা প্রায় ১৮ মাস ধরে চালানো এই আগ্রাসনে এখন পর্যন্ত নিহত হয়েছেন ৫০ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি।
এর মধ্যে গত ২০ দিনেই গাজায় প্রায় ৫০০ শিশুকে হত্যা করেছে ইসরায়েল। সোমবার (৭ এপ্রিল) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা আনাদোলু।
গাজার মিডিয়া অফিসের রোববার প্রকাশিত এক বিবৃতি অনুসারে, গত ২০ দিনে ইসরায়েলি বাহিনী গাজা উপত্যকায় ৪৯০ জন ফিলিস্তিনি শিশুকে হত্যা করেছে। বেসামরিক নাগরিকদের বিরুদ্ধে চলমান গণহত্যার অংশ হিসেবে শিশুদের ওপর চালানো এই হত্যাকাণ্ডের নিন্দা জানিয়েছে মিডিয়া অফিস।
এক বিবৃতিতে মিডিয়া অফিসটি শিশুদের বিরুদ্ধে হত্যাযজ্ঞকে “আধুনিক সময়ের মানবতাবিরোধী সবচেয়ে ভয়াবহ অপরাধগুলোর মধ্যে একটি” হিসাবে বর্ণনা করেছে। একইসঙ্গে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে গাজায় অসহায় বেসামরিক নাগরিকদের ওপর নৃশংস গণহত্যা চালিয়ে যাওয়ার অভিযোগও করেছে তারা।
মিডিয়া অফিস বলছে, গাজায় ইসরায়েলি বিমান হামলার প্রধান লক্ষ্যবস্তু ছিল শিশুরা। বিবৃতিতে বলা হয়েছে, “গত বিশ দিনে ইসরায়েল শিশুদের ওপর এক মর্মান্তিক গণহত্যা চালিয়েছে, ধারাবাহিক বর্বর হামলায় ৪৯০ শিশু নিহত হয়েছে। এতে এই সময়ের মধ্যে মোট শহীদের সংখ্যা ১৩৫০ জনে দাঁড়িয়েছে।”
বিবৃতিতে ইসরায়েলি দাবিও প্রত্যাখ্যান করা হয়েছে। মূলত ইসরায়েল দাবি করেছিল, বেসামরিক হতাহতের ঘটনা কেবল আকস্মিক। গাজার মিডিয়া অফিস বরং যুক্তি দিয়ে বলেছে, প্রাণহানির এই পরিসংখ্যানগুলো আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন করে ফিলিস্তিনি শিশুদের লক্ষ্যবস্তু করার একটি ইচ্ছাকৃত, পদ্ধতিগত নীতিকেই প্রতিফলিত করে।
গত সপ্তাহান্তে নেতানিয়াহু গাজায় আক্রমণ আরও বাড়ানোর ঘোষণা দেন। এছাড়া ফিলিস্তিনি এই ছিটমহল থেকে ফিলিস্তিনিদের উচ্ছেদের বিষয়ে ট্রাম্পের পরিকল্পনা বাস্তবায়নের প্রচেষ্টাও চলছে। ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে গাজায় নৃশংস ইসরায়েলি আক্রমণে প্রায় ৫০ হাজার ৭০০ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন, যাদের বেশিরভাগই নারী ও শিশু।
এর আগে গত বছরের নভেম্বরে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত গাজায় যুদ্ধাপরাধ এবং মানবতাবিরোধী অপরাধের জন্য ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু এবং তার সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্টের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে।
অবরুদ্ধ এই ভূখণ্ডে আগ্রাসনের জন্য আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে গণহত্যার মামলার মুখোমুখিও হয়েছে ইসরায়েল।