ব্লাড ক্যান্সারে আক্রান্ত ভারতীয় দলের সাবেক সতীর্থ অংশুমান গায়কোয়াড়ের চিকিৎসার জন্য নিজের পেনশনের অর্থ দিতে প্রস্তুত বলে জানিয়েছেন দেশটির বিশ^কাপ জয়ী অধিনায়ক কপিল দেব। পাশাপাশি গায়কোয়াড়ের চিকিৎসায় ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডকে (বিসিসিআই) এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছেন কপিল।
গত এক বছর ধরেই ব্লাড ক্যান্সারের সাথে লড়ছেন ভারতের সাবেক কোচ ৭১ বছর বয়সী গায়কোয়াড়। বর্তমানে লন্ডনে এক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন তিনি। গায়কোয়াড়কে দেখে এসে দ্য মিড ডে’তে এক কলামে সাবেক সতীর্থ সন্দীপ পাতিল লিখেছেন, চিকিৎসার জন্য আর্থিক সহায়তা প্রয়োজন গায়কোয়াড়ের। বিষয়টি বিসিসিআইকেও জানিয়েছেন পাতিল।
ডি ডে’তে পাতিলের কলামটি চোখে পড়ে কপিলের। তাই গায়কোয়াড়কে আর্থিক সহায়তা দেওয়ার ঘোষনা দেন তিনি। ক্রীড়া সাময়িকী স্পোর্টস্টারকে কপিল বলেন, ‘এটা খুবই দুঃখ ও হতাশাজনক। আমি গায়কোয়াড়ের সাথে খেলেছি, এজন্য আমি ব্যথিত। এই অবস্থায় দেখার ব্যাপারটি সহ্য করতে পারছি না। কারও কষ্ট করা উচিত নয়। আমি জানি বোর্ড তাকে সহায়তা করবে। আমি তার চিকিৎসায় সহযোগিতার হাত বাড়াতে প্রস্তুত। তার পরিবার চাইলে পেনশনের টাকা দিয়ে দিতে পারি আমি।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা কাউকে বাধ্য করছি না। গায়কোয়াড়ের জন্য যেকোন সাহায্য আপনার হৃদয় থেকে আসতে হবে। খেলার সময় কয়েকজন ভয়ংকর পেস বোলারকে সামলাতে গিয়ে মুখে ও বুকে আঘাত পেয়েছিল সে। এখন আমাদের তার পাশে দাঁড়ানোর সময় এসেছে। আমি নিশ্চিত, আমাদের ক্রিকেট ভক্তরা তাকে হতাশ করবে না। তার সুস্থতার জন্য সবার প্রার্থনা করা উচিত।’
সাবেক ক্রিকেটারদের আর্থিক সমস্যায় বিসিসিআইয়ের এগিয়ে না আসার পেছনে ব্যবস্থাপনা ঘাটতির বিষয়টি তুলে ধরেন কপিল। তিনি বলেন, ‘দুর্ভাগ্যবশত, আমাদের কোন ব্যবস্থা নেই। এই প্রজন্মের ক্রিকেটাররা অনেক অর্থ আয় করে। সাপোর্ট স্টাফের সদস্যরাও ভালো বেতন পেয়ে থাকে। আমাদের সময়ে বোর্ডের এত অর্থ ছিল না। এখন যেহেতু বোর্ডের অনেক অর্থ, তাই সাবেক সিনিয়র ক্রিকেটারদের দেখভাল করা উচিত তাদের।’
তিনি আরও বলেন, ‘মানুষ তাদের জন্য কোথায় টাকা পাঠাবে? যদি একটা ট্রাস্ট গঠন করা হয়, তাহলে সেখানে টাকা রাখা যেত। কিন্তু আমাদের সেই ব্যবস্থা নেই। আমাদের একটি ট্রাস্ট গড়ে তোলা উচিত। আমার মনে হয় বিসিসিআই এমন কিছু করতে পারে। তারা সাবেক ও বর্তমান খেলোয়াড়দের দেখাশুনা করবে।’
১৯৭৫ সাল থেকে ১৯৮৭ সাল পর্যন্ত ভারতের হয়ে ৪০টি টেস্ট ও ১৫টি ওয়ানডে খেলেছেন গায়কোয়াড়। টেস্টে ১৯৮৫ রান ও ওয়ানডেতে ২৬৮ রাান করেন তিনি। ১৯৯০এর শেষ দিকে এবং ২০০০ সালে ভারতের কোচের দায়িত্ব পালন করেন গায়কোয়াড়। তার অধীনে শাহজাহতে জনপ্রিয় কোকা-কোলা কাপের শিরোপা জিতে ভারত। এছাড়া দিল্লিতে পাকিস্তানের বিপক্ষে ঐতিহাসিক টেস্ট ম্যাচে জয় পায় টিম ইন্ডিয়া। দিল্লি টেস্টের দ্বিতীয় ইনিংসে একাই ১০ উইকেট নিয়েছিলেন স্পিনার অনিল কুম্বলে।