ভারতের ব্যবসায়িক জগতে এক বিরাট পরিবর্তন ঘটেছে। হুরুন ইন্ডিয়া রিচ লিস্ট ২০২৪-এ গৌতম আদানি এবার শীর্ষস্থান দখল করেছেন। এর ফলে তিনি ভারতের সর্বোচ্চ ধনী ব্যক্তি হিসেবে পরিচিত হয়েছেন। আগের বছর এই তালিকায় শীর্ষস্থানে থাকা মুকেশ আম্বানিকে এবার পেছনে ফেলেছেন আদানি।
হুরুনের প্রতিবেদন অনুযায়ী, আদানি পরিবারের মোট সম্পদ ১১ লাখ ৬০ হাজার কোটি রুপি। এই বিশাল সম্পদের মালিক হয়ে আদানি ভারতের ব্যবসায়িক জগতে এক নতুন ইতিহাস রচনা করেছেন।
গৌতম আদানির সম্পদের অবিশ্বাস্য বৃদ্ধি বর্তমানে ভারতীয় ব্যবসায় জগতের অন্যতম আলোচিত বিষয়। গত এক বছরে তার সম্পদ প্রায় ৯৫% বেড়েছে, যা অর্থনীতিবিদদের কাছেও বিস্ময়কর। ফলে, তিনি হুরুন ইন্ডিয়া রিচ লিস্টে শীর্ষ স্থান দখল করেছেন বলে এনডিটিভির খবরে বলা হয়েছে।
এই উত্থান আরও তাৎপর্যপূর্ণ হয়ে উঠেছে কারণ গত বছর হিনডেনবার্গ রিসার্চ আদানি গ্রুপের বিরুদ্ধে শেয়ার জালিয়াতির গুরুতর অভিযোগ তুলেছিল। এই প্রতিবেদনের পর আদানি গ্রুপের শেয়ারের দাম কমে গিয়েছিল এবং কোম্পানির ভবিষ্যৎ নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিল। কিন্তু এরপর থেকে আদানির সম্পদ দ্রুত বেড়েছে, যা অনেকের কাছেই অবাক করা।
হুরুন রিচ লিস্টের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ৬২ বছর বয়সী গৌতম আদানি ও তাঁর পরিবার হিনডেনবার্গের অভিযোগ মধ্য থেকে বেরিয়ে এসে চলতি বছরের তালিকায় শীর্ষ স্থান দখল করেছেন। তিনি নিজের চেষ্টায় উদ্যোক্তা হয়েছেন। গত ৫ বছরে শীর্ষ ১০ ধনীর মধ্যে তাঁর সম্পদই সবচেয়ে দ্রুতগতিতে বেড়েছে।
হুরুনের প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, গত এক বছরের আদানি গোষ্ঠীর সব কটি কোম্পানির শেয়ারের দামই উল্লেখযোগ্য পরিমাণে বেড়েছে। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, আদানি পোর্টসের শেয়ারের দাম ৯৮ শতাংশ বেড়েছে। মূলত সুবিধার সর্বোচ্চ ব্যবহার এবং নতুন বন্দর ও কনটেইনার টার্মিনালের প্রস্তাবিত অধিগ্রহণের কারণে শেয়ারের এই মূল্য বৃদ্ধি।
হুরুনের সর্বশেষ তালিকা অনুযায়ী, ভারতীয় শিল্পপতি মুকেশ আম্বানি দ্বিতীয় স্থান অধিকার করেছেন। তাঁর মোট সম্পত্তির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে প্রায় ১০ লক্ষ ১৪ হাজার কোটি রুপিতে।
এদিকে, টাইমস অব ইন্ডিয়ার প্রতিবেদন অনুযায়ী, ভারতে বিলিয়নিয়ারদের সংখ্যা ব্যাপক হারে বেড়েছে। বর্তমানে দেশটিতে ৩৩৪ জন বিলিয়নিয়ার রয়েছেন, যা দেশের জন্য একটি নতুন রেকর্ড। হুরুনের প্রতিবেদনে এই তথ্য উঠে এসেছে।
গৌতম আদানি ও মুকেশ আম্বানির পর ধনীদের তালিকায় রয়েছেন এইচসিএল টেকনোলজির শিব নাদার ও তাঁর পরিবার। তাঁদের সম্পদের পরিমাণ ৩ লাখ ১৪ হাজার কোটি রুপি।
চতুর্থ স্থান রয়েছেন সিরাম ইনস্টিটিউটের সাইরাস এস পুনাওয়ালা ও তাঁর পরিবার। তাঁদের সম্পদ ২ লাখ ৮৯ হাজার কোটি রুপি। পরের স্থানে থাকা সান ফার্মাসিউটিক্যালসের দিলীপ সাংভির সম্পদের মূল্য ২ লাখ ৪৯ হাজার কোটি রুপি।
ভারতের ব্যবসায়িক জগতে নতুন এক অধ্যায়ের সূচনা করেছেন কাইভাল্য ভোহরা। মাত্র ২২ বছর বয়সে ৫০০ কোটি ডলার মূল্যমানের স্টার্টআপ কোম্পানি জেপটোর সহপ্রতিষ্ঠাতা হিসেবে তিনি দেশের সবচেয়ে কম বয়সী বিলিওনিয়ারের খেতাব অর্জন করেছেন।