অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের অর্থ ও বাণিজ্য উপদেষ্টা ড.সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেছেন, রপ্তানির তথ্য শিগগিরই সমন্বয় করা হবে এবং রপ্তানি আয়ের লক্ষ্য নির্ধারণের পর একটি প্রক্রিয়াও তৈরি করা হবে।
রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর কর্মকর্তাদের সঙ্গে আজ এক বৈঠকে তিনি এসব কথা বলেন।
বৈঠক শেষে অর্থ উপদেষ্টা আজ তার মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমরা রপ্তানির তথ্যসহ বিস্তারিত বিষয় নিয়ে আলোচনা করেছি। ইবিপি ও জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)-এর রপ্তানি তথ্যের মধ্যে যথেষ্ট গরমিল ছিল। আমি তাদের (ইপিবি) শেষ সময় পর্যন্ত রপ্তানির তথ্য সমন্বয় করতে বলেছি। যত তাড়াতাড়ি সম্ভব তা করা হবে। আমি তাদের (ইপিবি) একটি প্রক্রিয়াও তৈরি করতে বলেছি।’
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়েরও উপদেষ্টা ড.সালেহউদ্দিন বলেন, শিগগিরই ইপিবি’র বোর্ড সভা অনুষ্ঠিত হবে। সেখানে সব বিষয় চূড়ান্ত করা হবে।
তিনি বলেন, ইপিবি কর্মকর্তারা রপ্তানি লক্ষ্যমাত্রা চূড়ান্তকরণ ও তথ্য সমন্বয়ে কাজ করছেন। বোর্ড সভায় সব বিষয় অনুমোদন পেতে পারে।
ড.সালেহউদ্দিন বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংক ও এনবিআর-এর এএসওয়াইসিইউডিএ’র রপ্তানি তথ্যের মধ্যে যে ফাঁরাক রয়েছে, চুড়ান্ত তথ্যে তা সমন্বয় করা হবে।
৩ জুলাই বাংলাদেশ ব্যাংক ২০২৩-২৪ অর্থবছরের জুলাই-এপ্রিল সময়ের জন্য ব্যালেন্স অফ পেমেন্টস (বিওপি) তথ্য প্রকাশ করেছে। এতে পুনর্মিলিত খসড়া রপ্তানি তথ্য ব্যবহার করা হয়েছে। যাতে দেখা গেছে, দেশের রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি)’র পূর্বের প্রতিবেদনে প্রকাশিত অংকের চেয়ে এটি প্রায় ১৪ বিলিয়ন ডলার কম।
এটি দেখায় যে জুলাই-এপ্রিল মেয়াদে রপ্তানি ৬.৮ শতাংশ কমেছে। কিন্তু ইপিবি প্রাথমিকভাবে ৩.৯৩ শতাংশ বৃদ্ধির কথা জানায়।
সমন্বিত রপ্তানি জিডিপি গণনার উপর কোন প্রভাব ফেলবে কিনা-জানতে চাইলে উপদেষ্টা বলেন, জিডিপি সাধারণত উৎপাদন পদ্ধতির উপর ভিত্তি করে নির্ধারণ করা হয়, যেখানে ১৯টি খাত যুক্ত থাকে।
তিনি আরো বলেন, ‘সুতরাং আশা করি, এটি জিডিপিতে তেমন কোন প্রভাব ফেলবে না। বিস্তারিত পরে জানানো হবে। আপনারা পরে এটি সম্পর্কেও জানতে পারবেন।’
ছেঁড়া-জরাজীর্ণ মুদ্রা ও ব্যাংক নোট বিশেষকরে ১০ টাকা, ৫ টাকা ও ২০ টাকার মূল্যমানের সম্ভাব্য সরকারী পদক্ষেপ সম্পর্কে অন্য এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এটি প্রায়শই ঘটে। কারণ, দেশবাসী প্রায়শই তাদের নোটগুলিকে সঠিকভাবে সংরক্ষণ করতে পারে না। কিন্তু, মার্কিন ডলারের ক্ষেত্রে নোটের এমনটা বিশ্বের কোথাও দেখা যায় না।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এই সাবেক গভর্নর বলেন, তিনি বর্তমান কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নরের কাছে বিষয়টি উত্থাপন করবেন। কারণ, নতুন নোটগুলি না থাকলে এখনই পুরনো মুদ্রা ও ব্যাংক নোট প্রতিস্থাপন করা যাবে না।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সম্প্রতি উপদেষ্টা পরিষদ কর্তৃক কালো টাকা সাদা করার বিধান বাতিল করায় বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার বিভিন্ন ক্ষেত্রে তাৎক্ষণিকভাবে কাজ করছে।
তিনি আরো বলেন, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর বিভিন্ন ব্যাংকের বোর্ড পুনর্গঠন করে তাদের মধ্যে গতি আনতে কাজ করছেন।
অন্য এক প্রশ্নের জবাবে ড. সালেহউদ্দিন বলেন, পরিকল্পনা উপদেষ্টা এডিপি সংশোধনের জন্য প্রয়োজনীয় সব কাজ করবেন। এতে ইআরডি সব ধরনের সহযোগিতা করবে।
তিনি বলেন, জাতীয় বাজেট সংশোধন করা হবে এবং অবশ্যই অপ্রয়োজনীয় ব্যয় সংকোচনের মাধ্যমে তা যৌক্তিক করা হবে।
এ মাসে বা বিশ্বব্যাংক ও আইএমএফ গ্রুপের বার্ষিক বৈঠকের আগে এটি হবে কিনা-জানতে চাইলে অর্থ উপদেষ্টা কোন মন্তব্য করেনি।
বৈঠকে বাণিজ্য সচিব মো. সেলিম উদ্দিন ও ইপিবি’র ভাইস চেয়ারম্যান মো. আনোয়ার হোসেনসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।