স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, সরকার সকল দুষ্কৃতকারীকে চিহ্নিত করে তাদের বিরুদ্ধে অভিযান চালাবে। দেশের আইনশৃঙ্খলা রক্ষার স্বার্থে দল-মত নির্বিশেষে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে উদ্বেগ প্রকাশ করে বলা হয়, সরকার যখন বিচারের সুস্পষ্ট অঙ্গীকার নিয়ে জাতিসংঘকে সত্য অনুসন্ধানে আহ্বান জানিয়েছে এবং বিচারপ্রক্রিয়া শুরু করেছে, ঠিক সেই সময়ে কিছু অতি উৎসাহী ও স্বার্থান্বেষী মহল আইন নিজের হাতে তুলে নিচ্ছে। এমনকি বিভিন্ন ক্ষেত্রে প্রতিবাদের নামে প্রতিষ্ঠান ঘেরাও, জোরপূর্বক পদত্যাগ, ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ, বেআইনি তল্লাশি, লুটপাট, চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি, ঢালাওভাবে মামলা গ্রহণে পুলিশের ওপর চাপ প্রয়োগ, আদালতে আসামিকে আক্রমণ করে অস্থিতিশীলতা সৃষ্টির চেষ্টা করছে।
সরকার স্পষ্ট করে জানিয়েছে যে, জননিরাপত্তা বিঘ্ন করা কোনোভাবেই সহ্য করা হবে না। দেশের আইন-শৃঙ্খলা রক্ষার স্বার্থে সকল দুষ্কৃতকারীকে চিহ্নিত করে তাদের বিরুদ্ধে অচিরেই আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
সরকারের পক্ষ থেকে স্পষ্ট করে জানিয়ে দেওয়া হয়, ‘জননিরাপত্তা বিঘ্নকারী এসব কার্যকলাপের বিরুদ্ধে উপযুক্ত আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। সরকার সকল দুষ্কৃতকারীকে চিহ্নিত করে তাদের বিরুদ্ধে অচিরেই অভিযান চালাবে এবং দল-মতনির্বিশেষে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।
সরকার জনগণকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় সহযোগিতা করতে আহ্বান জানিয়েছে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দেওয়া এক বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়েছে। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, দেশের আইনশৃঙ্খলা রক্ষার স্বার্থে সবার সহযোগিতা প্রয়োজন।সরকার জনগণকে আশ্বস্ত করে বলেছে যে, মামলা হওয়া মানে সবার গ্রেপ্তার নয়। সরকার জানিয়েছে, যেসব মামলা হবে, সেগুলোতে সঠিকভাবে তদন্ত করে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সরকার আরও জানিয়েছে যে, সরকারের পক্ষ থেকে তল্লাশি ও মামলা গ্রহণে প্রচলিত আইন যথাযথভাবে মেনে চলা হবে এবং হয়রানিমূলক পদক্ষেপ দূর করার ব্যবস্থা নেয়া হবে।
“বিজ্ঞপ্তিতে আরও উল্লেখ করা হয়েছে যে, কোনো ব্যক্তির বিরুদ্ধে অভিযোগ থাকলে তা সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ এবং দপ্তরে অবহিত করতে হবে। কোনো প্রতিষ্ঠান ঘেরাও বা সহিংস কর্মকাণ্ডে জড়িত হওয়া কঠোরভাবে নিষিদ্ধ। সরকার নিশ্চিত করে যে, সমস্ত তদন্ত ও মামলা প্রক্রিয়া প্রচলিত আইন অনুযায়ী পরিচালিত হবে এবং কোনো ধরনের হয়রানি সহ্য করা হবে না।”
৫ আগস্ট, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতৃত্বে দেশব্যাপী গণঅভ্যুত্থানের ফলে কর্তৃত্ববাদী সরকার ক্ষমতাচ্যুত হয়েছে। জনগণের এই অবিশ্বাস্য শক্তির প্রদর্শনের মাধ্যমে দেশে একটি নতুন অধ্যায়ের সূচনা হয়েছে।
গণঅভ্যুত্থানের সময় পতিত সরকার জনগণের আন্দোলন দমনে নিষ্ঠুরভাবে বল প্রয়োগ করেছে, যার ফলে বহু নিরপরাধ মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন এবং আহত হয়েছেন। দীর্ঘদিন ধরে চলা দুর্নীতি, অপহরণ, গুম ও বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের মতো নানা নির্যাতনের ফলে জনগণের মধ্যে সরকারের প্রতি প্রচণ্ড ক্ষোভ বিরাজ করছিল।
এই পরিস্থিতিতে, গণঅভ্যুত্থানের পর দায়িত্ব গ্রহণকারী অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ঘোষণা করেছে যে, তারা পূর্ববর্তী সরকারের সময়ে ঘটে যাওয়া সকল অপরাধের বিচার করবে। সরকারের এই সিদ্ধান্তে জনগণের মধ্যে আশার সঞ্চার হয়েছে।”