ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলে ভয়াবহ বন্যায় বহু লোকের প্রাণহানি হয়েছে। এছাড়াও একটি জাতীয় উদ্যানের ছয়টি বিপন্ন প্রজাতির গন্ডার এবং অন্যান্য বন্যপ্রাণী পানিতে ভেসে গেছে। মঙ্গলবার সরকারি কর্মকর্তারা এ কথা জানিয়েছেন।
‘ব্রহ্মপুত্র এবং এর উপনদীর পানিস্তর বেশিরভাগ জায়গায় বিপদসীমার নীচে’ উল্লেখ করে আসাম রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা একটি বিবৃতিতে বলেছেন, বন্যা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে শুরু করেছে।
রাজ্যের দুর্যোগ কর্মকর্তাদের মতে, মে মাসের মাঝামাঝি থেকে ৩,০০০ গ্রাম জুড়ে ১.৮ মিলিয়নেরও বেশি মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে,পাশাপাশি ৭২ জন নিহত হয়েছে।
জুন থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত দক্ষিণ এশিয়া জুড়ে বর্ষা গ্রীষ্মের তাপ থেকে রেহাই দেয় এবং পানি সরবরাহ বৃদ্ধি পায় তবে ব্যাপক মৃত্যু এবং ধ্বংসও ডেকে আনে।
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বৃষ্টি ও বন্যার তীব্রতা বেড়েছে,বিশেষজ্ঞরা বলছেন,জলবায়ু পরিবর্তন সমস্যাকে আরও বাড়িয়ে তুলছে।
পানি কমার সাথে সাথে কাজিরাঙ্গা জাতীয় উদ্যান সহ বন্যপ্রাণীর উপরও বন্যার প্রভাব দেখা যাচ্ছে।
‘বন্যা মানুষ এবং প্রাণীকে একইভাবে প্রভাবিত করেছে’ উল্লেখ করে শর্মা বলেন, অফিসাররা‘সবাইকে সাহায্য করার জন্য চব্বিশ ঘন্টা কাজ করছেন’।
সোমবার শর্মা সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি আটকে পড়া গন্ডার শাবকের একটি ভিডিও পোস্ট করেছেন,পানিতে গলা পর্যন্ত ডুবে আছে। তিনি বলেছেন,তিনি ‘অবিলম্বে এটি উদ্ধারের নির্দেশ দিয়েছেন’।
কাজিরাঙ্গা বিশ্বের অবশিষ্ট এক-শিংওয়ালা গন্ডারের দুই-তৃতীয়াংশের আবাসস্থল, যা আন্তর্জাতিক ইউনিয়ন ফর কনজারভেশন অফ নেচার লাল তালিকায় অরক্ষিত হিসাবে শ্রেণীবদ্ধ।
২০১৮ সালের গণনা অনুসারে পার্কটিতে ২,৪১৩টি গন্ডার রয়েছে।
বন্যপ্রাণী কর্মকর্তারা জানিয়েছেন,সাম্প্রতিক দিনগুলোতে ছয়টি গন্ডারের পাশাপাশি কয়েক হাজার হরিণ মারা গেছে।
পার্কের একজন সিনিয়র কর্মকর্তা বলেছেন,‘যদিও প্রাণীদের আশ্রয়ের জন্য উঁচু জায়গা রয়েছে,তবে উচ্চ বন্যা পার্কটিকে প্রভাবিত করলে প্রাণীরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়।’
কাজিরাঙ্গা একটি ইউনেস্কোর বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থান, প্রায় প্রতি বছরই প্লাবিত হয়,যা পানির সরবরাহ এবং পার্কের পরিবেশগত ভারসাম্যকে পুনরায় পূরণ করতে সহায়তা করে।