আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির নবম আসরের আয়োজক পাকিস্তান। কিন্তু পাকিস্তানের মাটিতে খেলতে ভারত আগ্রহী না থাকার কারনে, চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি ‘হাইব্রিড মডেলে’ আয়োজনের চিন্তা করছে ক্রিকেটের নিয়ন্ত্রক সংস্থা ইন্টারন্যাশনাল ক্রিকেট কাউন্সিল (আইসিসি)। কিন্তু ‘হাইব্রিড মডেলে’ চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি আয়োজনে রাজি নয় পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড (পিসিবি)। পুরো টুর্নামেন্টই ঘরের মাঠে আয়োজনে বদ্ধপরিকর তারা।
পিসিবির খসড়া সূচি অনুযায়ী, আগামী বছর ১৯ ফেব্রুয়ারি থেকে ৯ মার্চ পর্যন্ত অনুষ্ঠিত হবে আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি। আট দলের টুর্নামেন্টে ‘এ’ গ্রুপে স্বাগতিক ও বর্তমান চ্যাম্পিয়ন পাকিস্তানের সাথে থাকছে বাংলাদেশ, ভারত ও নিউজিল্যান্ড। ‘বি’ গ্রুপে আছে- অস্ট্রেলিয়া, ইংল্যান্ড, দক্ষিণ আফ্রিকা ও আফগানিস্তান।
২০০৮ সালে মুম্বইয়ে জঙ্গি হামলার পর থেকেই পাকিস্তান সফর থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয় ভারত। এরপর আর কখননওই পাকিস্তান সফর করেনি ভারতীয় ক্রিকেট দল। শুধুমাত্র আইসিসি বা এসিসি’র কোন ইভেন্টে একে অপরের মুখোমুখি হয় তারা।
এবার আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি খেলতে পাকিস্তান সফরে যেতে রাজি নয় ভারত। যদিও এখনও সরাসরিভাবে কিছু জানায়নি ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড (বিসিসিআই)। কিন্তু পাকিস্তানের মাটিতে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে খেলতে অনিচ্ছার কথা সংবাদমাধ্যমে জানিয়েছে বিসিসিআই।
সূত্র মতে, পাকিস্তানের মাটিতে ভারতের না খেলার ইচ্ছায় চিন্তায় পড়ে গেছে আইসিসি। এজন্য বিকল্প পরিকল্পনা করতে বাধ্য হচ্ছে আইসিসিকে। ১৯ থেকে ২২ জুলাই কলম্বোতে আইসিসির বার্ষিক সম্মেলনে এই বিষয়টি এখন সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। ঐ সভায় পাকিস্তানের পাশাপাশি অন্য দেশে টুর্নামেন্টটি আয়োজনের সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা করবে আইসিসি।
আইসিসির সভায়, পাকিস্তানে মাটিতে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে খেলার বিষয়টি নিশ্চিত করতে বলা হবে বিসিসিআইকে। স্বাভাবিকভাবেই সরকারী অনুমতি না থাকার বিষয়টি তুলে ধরবে বিসিসিআই। এরপর পাকিস্তানের সাথে যৌথ আয়োজক হিসেবে সংযুক্ত আরব আমিরাতকে নিয়ে টুর্নামেন্টটি হাইব্রিড মডেলে আয়োজনের আলোচনা বসবে তারা।
সাধারণত নিজেদের সিদ্ধান্তের কথা লিখিত বা ব্যাখ্যা দিয়ে জানায় না ভারত সরকার। শেষ পর্যন্ত পাকিস্তানের মাটিতে ভারত খেলতে না চাইলে টুর্নামেন্টটি জটিলতার মুখে পড়বে। এ অবস্থায় আকস্মিক পরিকল্পনা করছে আইসিসি। পাকিস্তানের পাশাপাশি অন্য দেশেও টুর্নামেন্ট আয়োজনের বাজেট আইসিসি বৈঠকের আলোচনা হবে।
এর আগে, গত এশিয়া কাপে বাংলাদেশ ও শ্রীলংকার সমর্থন থাকার পরও পাকিস্তানে দল পাঠায়নি ভারত। এই পরিস্থিতিতে অন্যান্য বোর্ডগুলিতে প্রভাব ফেলে আর্থিক বিষয়টি। তখন লজিষ্টিক বিষয়কে মাথায় রেখে করাচিতে বেশিরভাগ ম্যাচ আয়োজন করে দুবাইয়ে বাকী খেলার সূচি করা। শেষ পর্যন্ত শ্রীলংকায় অনুষ্ঠিত হয় ভারতের সব ম্যাচসহ আরো কয়েকটি।তবে ঝামেলা এড়াতে রাওয়ালপিন্ডি এবং লাহোর ভেন্যুকে খসড়া সূচিতে রেখেছে পাকিস্তান। আলাদা গ্রুপে পাকিস্তান এবং ভারতকে রাখার বিষয়েও আলোচনা হয়েছিলো। কিন্তু একই গ্রুপে থাকছে দু’দল।
যদি টুর্নামেন্টটি হাইব্রিড মডেলেই অনুষ্ঠিত হয়, তাহলে সেমিফাইনাল এবং ফাইনাল ম্যাচ আয়োজনের সুযোগ হারাবে আয়োজক পাকিস্তান। পিসিবির খসড়া সূচি অনুযায়ী, আগামী বছরের ১৯ ফেব্রুয়ারি করাচি জাতীয় স্টেডিয়ামে উদ্বোধনী ম্যাচ দিয়ে পর্দা উঠবে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির। ৯ মার্চ লাহোরের গাদ্দাফি স্টেডিয়ামে হবে ফাইনাল। কলম্বোর বসতে যাওয়া সভায় সমাধান হলে শীঘ্রই টুর্নামেন্টের সূচি প্রকাশ করবে আইসিসি।