অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে তাদেরই বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজ জিতেছে পাকিস্তান। তিন ম্যাচ সিরিজে তারা ২-১ ব্যবধানে জিতে ইতিহাস গড়েছে। অস্ট্রেলিয়ায় ওয়ানডে ফরম্যাটের দ্বিপাক্ষিক সিরিজে তৃতীয় কোনো এশিয়ান দেশ হিসেবে জয় পেল পাকিস্তান। চারবার এমন কীর্তি রয়েছে এশিয়ানদের, এর মধ্যে পাকিস্তান দু’বার। অধিনায়ক হিসেবে মোহাম্মদ রিজওয়ানও ইতিহাসের পাতায় নাম লিখিয়েছেন।
পার্থের অপ্টাস স্টেডিয়ামে আজ (রোববার) সিরিজ নির্ধারণী তৃতীয় ম্যাচে মুখোমুখি হয় পাকিস্তান ও অস্ট্রেলিয়া। আগে ব্যাট করে স্বাগতিক অজিরা শাহিন-নাসিম-হারিস রউফদের তীব্র বোলিং তোপে পড়ে। মাত্র ১৪০ রানেই থামে তাদের ইনিংস। যা ৮ উইকেট এবং ২৩.১ ওভার হাতে রেখেই পেরিয়েছে নতুন অধিনায়ক মোহাম্মদ রিজওয়ানের দল। এর আগে অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে দুই দলের দ্বিপাক্ষিক সিরিজে সর্বশেষ ২০০২ সালে ওয়ানডে সিরিজ জিতেছিল পাকিস্তান। ফরম্যাটটিতে আরেকটি সিরিজ জিততে তাদের অপেক্ষা করতে হলো ২২ বছর।
এই সিরিজটি ছিল আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অধিনায়ক হিসেবে রিজওয়ানের অভিষেক। নিজের নতুন এই যাত্রাটাই তিনি শুরু করলেন ইতিহাস গড়ে। এর আগে পাকিস্তানের অধিনায়ক হিসেবে অস্ট্রেলিয়ায় ফরম্যাটটিতে সিরিজ জয়ের রেকর্ড ছিল ওয়াকার ইউনিসের। ২০০২ সালের জুনেও তার নেতৃত্বে পাকবাহিনী জিতেছিল ২-১ ব্যবধানে। এই কীর্তি গড়ার দিক থেকে ওয়াকার ছিলেন এশিয়ার প্রথম কোনো অধিনায়ক।
নতুন করে জেতা রিজওয়ানসহ এশিয়ান দেশগুলোর মধ্যে বিশ্বচ্যাম্পিয়নদের মাটিতে সিরিজ জয়ের রেকর্ড রয়েছে চারজনের। দুই পাক অধিনায়ক বাদে বাকি দুজন হচ্ছেন– শ্রীলঙ্কার কুমার সাঙ্গাকারা ও ভারতের বিরাট কোহলি। শ্রীলঙ্কা ২০১০ সালে এবং ভারত ২০১৯ সালেও একই ব্যবধানে (২-১) অস্ট্রেলিয়াকে তাদের ঘরে ওয়ানডে সিরিজ হারিয়েছিল।
ইতিহাস গড়ার পথে মূল অবদান বোলারদের ছিল বলে জানিয়েছেন পাকিস্তানের দুই ফরম্যাটের অধিনায়ক রিজওয়ান, ‘এটি আমি এবং পাকিস্তান ভক্তদের জন্য বিশেষ মুহূর্ত। আমরা পুরো দলই খুশি। আমি কেবল প্রেজেন্টেশন ও টস করতে অধিনায়ক হইনি। আমি সবার কাছ থেকেই পরামর্শ নেওয়ার জন্য উন্মুক্ত, সেটি হোক অভিজ্ঞ কিংবা তরুণ কোনো ক্রিকেটার এবং নেপথ্যের কর্মী। এই জয়ের পুরো কৃতিত্ব বোলারদেরই দেব। অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে তাদের হারানো সহজ নয়। তবে সাইম আইয়ুব ও আব্দুল্লাহ শফিক একাধিকবার আমাদের দারুণ শুরু দিয়েছে। আমরা হারি কিংবা জিতি, সমর্থকদের প্রেরণা সবসময়ই প্রশংসনীয়।’
প্রসঙ্গত, তিনটি ম্যাচেই পাকিস্তান পাঁচজন পেসার নিয়ে খেলতে নেমেছিল। তাতেই বাজিমাত করেছে দলটি। তিন ম্যাচে হারিস-শাহিনরা ২৩টি উইকেট নিয়েছেন। ৩ ম্যাচে সর্বোচ্চ ১০টি শিকার হারিস রউফের। এ ছাড়া শাহিন ৮ এবং নাসিম শাহ ৫ উইকেট নিয়েছেন। সিরিজে ব্যাট হাতে সর্বোচ্চ ১২৫ রান করেছেন পাক ওপেনার সাইম আইয়ুব। আরেক ওপেনার আব্দুল্লাহ শফিক করেন ১১৩ রান। অন্যদিকে, অস্ট্রেলিয়ার কোনো ব্যাটারই তিন ম্যাচে সিরিজে ব্যক্তিগত ফিফটির দেখা পাননি।