আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ২০২৫ আসর শুরু হতে আর মাত্র আড়াই মাসের মতো বাকি। প্রস্তাবিত সূচি এবং ভেন্যু প্রকাশ্যে এলেও, টুর্নামেন্টটি কোথায় হবে এখনও সেই অনিশ্চয়তা কাটেনি। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির আয়োজক পাকিস্তানের মাটিতে ভারত খেলতে যাবে না বলে সাফ জানিয়ে দিয়েছে। অন্যদিকে, হাইব্রিড মডেল ইভেন্টটি আয়োজনে কিছু শর্ত জুড়ে দিয়েছে পাকিস্তানও। এরই মাঝে অলোচনা এসেছে ‘পার্টনারশিপ’ বা সমতা ফর্মুলা।
প্রস্তাবিত সূচি অনুযায়ী– আগামী বছরের ১৯ ফেব্রুয়ারি থেকে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি হতে পারে পাকিস্তানের তিনটি ভেন্যু লাহোর, করাচি এবং রাওয়ালপিন্ডিতে। সে অনুযায়ী পূর্ণাঙ্গ সূচি প্রস্তুত করে আইসিসির কাছেও পাঠায় পিসিবি। তবে সেটি সেখানেই আটকে আছে। ভারত-পাকিস্তান দুই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী দেশ নিজেদের অবস্থানে অটল থাকায় চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে বেগে পেতে হচ্ছে আইসিসিকে।
উদ্ভূত পরিস্থিতিতে জটিলতা নিরসনে গত শুক্রবার সভা ডাকে আইসিসি। তাও মাত্র ১৫ মিনিটের কম সময়ের মাঝেই পণ্ড হয়ে গেছে। এমনকি কোনো সিদ্ধান্তও আসেনি সেখানে। শুধুমাত্র গণমাধ্যমগুলো সূত্রের বরাতে আইসিসি, পিসিবি ও বিসিসিআই বসে সমাধান করার ইঙ্গিত মিলেছে। এরই মাঝে পাকিস্তানের পক্ষ থেকে এসেছে ‘দীর্ঘমেয়াদী ফর্মুলা’। সেটিকে আবার পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম ‘জিও নিউজ’ ‘পার্টনারশিপ ফর্মুলা’ হিসেবে উল্লেখ করেছেন।
দুবাইয়ে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে পিসিবি সভাপতি মহসিন নাকভি বলেন, ‘আমরা কোনো একপক্ষীয় সিদ্ধান্ত মানব না। সমতার ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত আসতে হবে।’ পরবর্তীতে পিসিবির সূত্র বিশেষভাবে জিও নিউজের কাছে বলেছেন, আইসিসি ইভেন্টে পাকিস্তান ভারতে সফর করেছে, কিন্তু প্রতিবেশী দেশটি নিজেদের বেলায় সেটি মানছে না, এজন্য দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনায় বসতে হবে উভয়পক্ষকে। কেবল চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিই নয়, হাইব্রিড মডেল ভারতের মাটিতে হওয়া টুর্নামেন্টেও প্রয়োগ করতে হবে।
এদিকে, পিসিবি সভাপতি মহসিন আইসিসি সহযোগী দেশগুলোর কমিটির চেয়ারম্যান মুবাশির উসমানি ও এমিরেটস ক্রিকেট বোর্ডের সাবেক সচিবের সঙ্গেও কথা বলেছেন। সেই সভার বিষয়ে পিসিবির মিডিয়া বিভাগ এক্স (সাবেক টুইটার) হ্যান্ডলে জানিয়েছে, ‘চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা হয়েছে সভায়। নাকভি (পিসিবি সভাপতি) মুবাশিরকে বলেছেন– ‘‘পাকিস্তান নিজ দেশে টুর্নামেন্ট আয়োজনে পুরোপুরি প্রস্তুত। আমরা শান্তিপূর্ণ দেশ এবং আমাদের মানুষের ক্রিকেটের জন্য গভীর ভালোবাসা রয়েছে।’’’
বিসিসিআইয়ের উদ্বেগের বিষয়ে পিসিবি প্রধান বলেন, এই টুর্নামেন্ট আমাদের দেশের সম্মানের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। আমরা প্রতিটি দলকেই উষ্ণ অভ্যর্থনা জানাব এবং তাদের বিশ্বমানের অভিজ্ঞতা নিশ্চিত করতেও আমরা দৃঢ় প্রতিজ্ঞ। এটি কখনোই গ্রহণযোগ্য নয়, সবসময় ভারত চায় পাকিস্তান তাদের দেশে খেলতে যাক, আমরা সেটি মেনে নিই। কিন্তু নিজেদের বেলায় তারা পাকিস্তানে আসতে রাজি নয়। তখন অজুহাত দেখানো হয়। প্রতিটি দেশের জন্যই একই নিয়ম এবং তাদের একই আচরণ প্রাপ্য।’
এর আগে নিরাপত্তা শঙ্কার কথা উল্লেখ করে ভারতের বিদেশ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের এক মুখপাত্র জানান, ‘এ বিষয়ে (পাকিস্তানে গিয়ে খেলা) সম্পূর্ণ বিসিসিআইয়ের ব্যাপার, পাকিস্তানে দল পাঠানোর চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত তাদের হাতে রয়েছে।’ অন্যদিকে, বিসিসিআইয়ের সহ-সভাপতি রাজিব শুক্লা ভারতীয় সরকার চায় না উল্লেখ করে আইসিসির কাছে সরাসরি পাকিস্তানের না যাওয়ার সিদ্ধান্ত জানিয়েছেন। তবে পিসিবি সভাপতি তাদের নিরাপত্তা সংক্রান্ত উদ্বেগ উড়িয়ে দিয়েছেন। আন্তর্জাতিক দলগুলোকে নিয়ে গত ছয় বছর ধরে তাদের সিরিজ আয়োজনের কথা স্মরণ করিয়ে দেন মহসিন নাকভি