মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পদাঙ্ক অনুসরণ করে এবার বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) থেকে বেরিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছে লাতিন আমেরিকার দেশ আর্জেন্টিনা। বুধবার আর্জেন্টিনার প্রেসিডেন্টের কার্যালয়ের একজন মুখপাত্র ডব্লিউএইচও থেকে দেশটির বেরিয়ে যাওয়ার বিষয়ে জানিয়েছেন।
তিনি বলেছেন, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা থেকে বেরিয়ে আসবে আর্জেন্টিনা। সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে মুখপাত্র ম্যানুয়েল অ্যাডোরনি বলেছেন, স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনার বিষয়ে গভীর বিভাজনের ওপর ভিত্তি করে—বিশেষ করে (কোভিড -১৯) মহামারির সময়ের বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ভূমিকার কারণে প্রেসিডেন্ট জাভিয়ের মিলেই সংস্থাটি থেকে আর্জেন্টিনাকে প্রত্যাহার করে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
মুখপাত্র বলেছেন, কোনও আন্তর্জাতিক সংস্থাকে আমাদের সার্বভৌমত্বে হস্তক্ষেপ করার অনুমতি দেবে না আর্জেন্টিনা।
এর আগে, গত ২০ জানুয়ারি প্রেসিডেন্টের শপথ নেওয়ার পরপরই জাতিসংঘের স্বাস্থ্য বিষয়ক এই সংস্থা থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে প্রত্যাহার করে নেওয়ার ঘোষণা দেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। ট্রাম্পের পদক্ষেপের বিষয়ে জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা উদ্বেগ প্রকাশ করেন। তারা বলেন, বিশ্বজুড়ে স্বাস্থ্যখাতের শীর্ষ স্থানীয় দেশ হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থানকে দুর্বল এবং পরবর্তী মহামারির বিরুদ্ধে লড়াই করা আরও কঠিন করে তুলবে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের এই সিদ্ধান্ত।
শপথ নেওয়ার প্রায় আট ঘণ্টা পর জারি করা নির্বাহী আদেশে ট্রাম্প বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে প্রত্যাহারের বেশ কয়েকটি কারণ উল্লেখ করেন। যার মধ্যে রয়েছে— ডব্লিউএইচওর ‘কোভিড-১৯ মহামারির ভুল ব্যবস্থাপনা’ এবং ‘জরুরিভাবে প্রয়োজন এমন সংস্কারে ব্যর্থতা।’
তিনি বলেন, বৈশ্বিক এই জনস্বাস্থ্য সংস্থাটি যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে ‘অন্যায়ভাবে বেশি অর্থপ্রদানের’ দাবি করে। এছাড়া চীন এই সংস্থায় কম অর্থ প্রদান করে বলেও অভিযোগ করেন তিনি।
দেশটির প্রভাবশালী দৈনিক নিউইয়র্ক টাইমসের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ট্রাম্পের এই পদক্ষেপটি অপ্রত্যাশিত নয়। ট্রাম্প কার্যত ২০২০ সাল থেকেই ডব্লিউএইচওর বিরুদ্ধে বিষোদগার করেন। সেসময় তিনি করোনাভাইরাস মহামারি নিয়ে সংস্থাটিকে আক্রমণ করেছিলেন এবং এতে যুক্তরাষ্ট্রের তহবিল বন্ধ করার হুমকিও দিয়েছিলেন।
এর জেরে ২০২০ সালের জুলাই মাসে বৈশ্বিক এই সংস্থাটি থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে প্রত্যাহার করার জন্য আনুষ্ঠানিক পদক্ষেপ গ্রহণ করেছিলেন ট্রাম্প।