ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেটে দারুণ পারফরম্যান্সের পর লম্বা সময় পর পাকিস্তান জাতীয় দলে ডাক পেয়েছেন খুশদিল শাহ। সুযোগ পেয়ে তা কাজেও লাগিয়েছেন ঝোড়ো ব্যাটিংয়ে। কিন্তু এরপরও তাকে স্বদেশি সমর্থকদের কাছে গালি শুনতে হয়েছে। তাকে উদ্দেশ্য করে গ্যালারি থেকে ‘পারচি–পারচি’ স্লোগান ওঠে। উর্দু ভাষায় বলা এই শব্দের অর্থ দাঁড়ায়– স্বজনপ্রীতি, যার মানে ক্রিকেটীয় পারফরম্যান্স ছাড়া কারও সুপারিশে দলে ডাক পাওয়া।
নিউজিল্যান্ডের কাছে পাকিস্তানের ৬০ রানের হারই কি দর্শকদের এমন আচরণে বাধ্য করেছে? কিন্তু খুশদিল শাহ–ই কেন এর শিকার। অবশ্য এর আগেও ‘পারচি’ স্লোগান শুনতে হয়েছে বাঁ-হাতি এই অলরাউন্ডারকে। এর আগে একই তিক্ত অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হয়েছেন আরেক পাকিস্তানি ওপেনার ইমাম-উল-হক। যা নিয়ে তিনি বিভিন্ন অনুষ্ঠানেও কথা বলেছেন। ‘পারচি’ বা স্বজনপ্রীতি বলে ডাকার কারণে তার পরিবার গ্যালারিতে বসে খেলাও দেখেন না!
এদিকে, নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে হারের ম্যাচে পাকিস্তানের হয়ে ব্যবধানটা কমিয়েছেন মূলত খুশদিল। ৩২১ রানের বড় লক্ষ্য তাড়ায় স্বাগতিকরা ১২৮ রানে ৫ উইকেট হারানোর পর তিনি ক্রিজে আসেন। এরপর বাবর আজমও আউট হলে পাকিস্তানের বড় হার ছিল নিশ্চিত। সেখান থেকে দলের ২৬০ রান পর্যন্ত যাওয়ার মূল অবদান তো খুশদিলেরই। বাবর যেখানে ধীরগতির ইনিংস (৯০ বলে ৬৪) খেলে পাকিস্তানের চাপ বাড়িয়েছেন তার বিপরীতে ৪৯ বলে ১৪০ স্ট্রাইকরেটে ৬৯ রান করেন খুশদিল। এ ছাড়া সালমান আগা ২৮ বলে ৪২ রানের ইনিংস খেলেছেন।
ভালো খেলেও দর্শকদের কাছে বিরূপ আচরণের শিকার হওয়া নিয়ে মুখ খুলেছেন খুশদিল শাহ। তিনি বলেন, ‘যদি আমি নিজের স্কোর বাড়ানোর মতো ইনিংস খেলতাম, তাহলে আমাকে ‘‘পারচি–পারচি’’ স্লোগান শুনতে হতো না। আমি আমার ক্যারিয়ারে কখনও নিজের জন্য খেলিনি। সবসময়ই দলের সাফল্যে অবদান রাখায় আমার পূর্ণ মনোযোগ থাকে। নিজের উইকেট নিয়ে না ভেবেই আমি স্কোর করার চেষ্টা করি।’
ম্যাচের শেষদিকেও জয়ের আশা ছিল জানিয়ে এই পাক অলরাউন্ডার বলেন, ‘নাসিম এবং আমি আলোচনা করছিলাম যে কীভাবে শেষ ওভার পর্যন্ত ম্যাচ নেওয়া যায়, তাহলে আমরা জিততেও পারি। কিন্তু কোনো উইকেট বাকি থাকল না, আমাদের প্রচেষ্টায় কমতি ছিল।’ আগে থেকেই দর্শকদের বিরূপ আচরণের কথা জানিয়ে খুশদিল আরও বলেন, ‘মানুষ দুই বছর ধরে আমাকে একই কথা শোনাচ্ছে। আমারও অভ্যাস হয়ে গেছে। তাই আমিও বলেছি– ‘‘চালিয়ে যাও, আরও কিছু স্লোগান বলো।’’’
আগামী ২৩ ফেব্রুয়ারি দুবাই স্টেডিয়ামে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির হাইভোল্টেজ ম্যাচে মুখোমুখি হবে দুই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী দেশ ভারত-পাকিস্তান। সেই ম্যাচটি হবে পাকিস্তানের জন্য বাঁচা-মরার। ইতোমধ্যে প্রথম ম্যাচ হেরে তারা টুর্নামেন্টে টিকে থাকা নিয়ে অনিশ্চয়তায় পড়েছে।