ফ্যাসিস্ট হাসিনার আমলে কোনো নারী নিপীড়নের বিচার হয়নি উল্লেখ করে ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক সাইফুল আলম নীরব বলেছেন, আমরা স্পষ্ট করে বলতে চাই, গত সাড়ে ১৫ বছর নারীর প্রতি যে নির্যাতন, নারীর প্রতি যে নির্মমতা অথবা যে গণধর্ষণের ঘটনাগুলো ঘটেছে সেগুলোর কিন্তু গণমাধ্যমে খুব ফলাও করে প্রচার করা হয়নি।
তিনি বলেন, আপনারা দেখেছেন, ২০১৮ সালে নোয়াখালীর সুবর্ণচরে ধানের শিষে ভোট দেওয়ার কারণে আমার বোন পারুলকে কীভাবে গণধর্ষণ করেছে আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীরা, তার বিচার নিশ্চিত হয়নি।
মঙ্গলবার (১১ মার্চ) রাজধানীর মধুবাগ মাঠে ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির আওতাধীন ৩৬ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপি আয়োজিত ইফতার বিতরণ ও দোয়া মাহফিল উপলক্ষ্যে এক অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
সাইফুল আলম নীরব বলেন, আমরা ভুলে যাইনি সিলেটের এমসি কলেজে স্বামীকে বেঁধে রেখে ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীরা গণধর্ষণ করেছে। তার বিচার এখনো নিশ্চিত করা যায়নি। গত সাড়ে ১৫ বছর যে নারীর প্রতি নিপীড়ন, ধর্ষণ, অথবা আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি যেগুলো এ দেশের মানুষ ভুলে যায়নি। ধর্ষণ, নারী নিপীড়নের বিচার দ্রুততম সময়ে নিশ্চিত করেন। অবশ্যই আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি উন্নতি করতে হবে। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি না করেন তাহলে আমরা আপনাদের দিকে আঙুল তুলতে বাধ্য হবো।
তিনি আরও বলেন, অবৈধ সম্পদ সমাজে বিশৃঙ্খলা ও অপকর্মে সহায়তা করে। কারণ আওয়ামী লীগের মন্ত্রী-এমপিরা তো হাজার কোটি টাকা লুট করেছে। আর তারা দুর্নীতিবাজ, লুটপাটকারীদের এমপি-মন্ত্রী বানিয়ে ১৫ বছর অরাজকতা প্রতিষ্ঠা করেছিল।
নীরব বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারের দায়িত্ব নেওয়ার ছয় মাসেও দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ও রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলোতে এখন পর্যন্ত স্থিতিশীল অবস্থায় ফিরে আসেনি। দেশের বিভিন্ন স্থানে অরাজকতা, বিশৃঙ্খলা, খুন, ধর্ষণ ও মব সন্ত্রাসে জনগণের জানমালের নিরাপত্তাকে দুর্বিষহ করে তুলেছে। এর দায় এ অন্তর্বর্তী সরকারকেই নিতে হবে।
বিএনপির এ নেতা আরও বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারের কিছু উপদেষ্টারা বিএনপির নাম শুনলে ও নির্বাচনের কথা বললেই তাদের গায়ে জ্বালা ধরে যায়। তারা কেন জানি নির্বাচনকে মেনে নিতে পারে না। গত ১৭ বছর ধরে বিএনপি আন্দোলন সংগ্রাম করছে বাংলাদেশে একটি গণতান্ত্রিক সরকার এবং জনগণের ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠা করার জন্য। কিন্তু অন্তর্বর্তী সরকারের কিছু কিছু উপদেষ্টা বলছেন রাষ্ট্রীয় সংস্কার এবং স্বৈরাচারের বিচার না হওয়া পর্যন্ত নির্বাচনে যাবেন না তারা।
যুবদলের সাবেক এ সভাপতি বলেন, স্বৈরাচার শেখ হাসিনা ও তার দোসরদের বিচার এদেশের প্রত্যেকটি সাধারণ মানুষ চায়, আমরাও চাই। স্বৈরাচারের বিচার এবং সংস্কারের সঙ্গে নির্বাচনের কোনো সম্পর্ক থাকতে পারে না।
সাইফুল আলম নীরব আরও বলেন, বিএনপি জনগণের ভোটে ক্ষমতায় গেলে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নেতৃত্বে আমরা একটি সুস্থ ধারার রাজনীতির পরিবেশ তৈরি করব। বাংলাদেশের মানুষের প্রত্যেকটি দাবি পূরণ করতে সাধারণ মানুষকে সঙ্গে নিয়ে আমরা কাজ করব। মানুষের বাক স্বাধীনতা বিচার বিভাগের স্বাধীনতা থেকে শুরু করে স্বৈরাচারের রেখে যাওয়া ধ্বংসস্তূপ হওয়া রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলোকে মেরামতের জন্য কাজ করব। এ জন্যই বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান রাষ্ট্র কাঠামো মেরামতের ৩১ দফার রূপরেখা দিয়েছেন।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন, হাতিরঝিল থানা বিএনপির আহ্বায়ক নাজমুল হক মাসুম, ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির সদস্য মনিরুল ইসলাম রাহিমী, কেন্দ্রীয় যুবদলের সাবেক যোগাযোগ বিষয়ক সম্পাদক গিয়াস উদ্দিন মামুন, হাতিরঝিল থানা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক আশরাফুল ইসলাম অপু, ৩৫ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি মাহমুদুল হক মাধু, ৩৫ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সাধারণ সম্পাদক কামরুল ইসলাম কিংকং, সাবেক সাধারণ সম্পাদক শ্যামলী খান, সিনিয়র সহ-সভাপতি সাব্বির আহমেদ, হাতিরঝিল থানা যুবদলের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক, জাফর ইমাম তরফদার মন্টু, সাবেক প্রচার সম্পাদক মেছের হোসেন, ৩৫ নম্বর ওয়ার্ড যুবদলের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক আল হেলাল হৃদয়।