অদূর ভবিষ্যতেও ভারত এবং চীনের মাঝে সমস্যা দেখা দেবে, তবে সেসব সমস্যা কোনও ধরনের সংঘাত ছাড়াই সমাধানের উপায়ও আছে। বুধবার ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর চিরবৈরী প্রতিবেশি চীনের সঙ্গে সমস্যা ও সমাধানের বিষয়ে এই মন্তব্য করেছেন।
২০২০ সালে সীমান্তে উভয় দেশের সৈন্যদের মাঝে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এই সংঘর্ষে ভারতীয় ২০ ও চীনের চার সৈন্য নিহত হন। তখন থেকে প্রতিবেশী দুই দেশের হিমালয় সীমান্তে টহল দেওয়া ঘিরে অচলাবস্থা তৈরি হয়। গত বছরের অক্টোবরে সীমান্তের অচলাবস্থার অবসানে উভয় দেশ একটি চুক্তিতে পৌঁছায়।
সীমান্তের ওই সংঘাত বাণিজ্য ও প্রযুক্তি থেকে শুরু করে আকাশপথের ভ্রমণসহ দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের বিভিন্ন বিষয়ের ওপর প্রভাব ফেলে। অলাভজনক সংস্থা এশিয়া স্যোসাইটির এক আলোচনায় অংশ নিয়ে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর বলেন, আমরা জানি, ভারত ও চীনের মধ্যে … কমপক্ষে অদূর ভবিষ্যতেও সমস্যাগুলো থাকবে। তবে এসব সমস্যার সমাধান করার উপায় আছে। ২০২০ সালে যা ঘটেছিল তার সমাধানেরও উপায় ছিল।
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিও গত সপ্তাহে বলেছিলেন, আস্থা, উদ্দীপনা এবং শক্তি চীনের সঙ্গে সমীকরণে ফিরে আসবে। বিভেদ কখনও বিরোধে পরিণত হবে না, সেটি নিশ্চিত করাই উভয় দেশের নজরে রয়েছে।
জয়শঙ্কর বলেছেন, আমরা এটা অক্টোবর থেকে অনুভব করছি…সম্পর্কের কিছুটা উন্নতি হয়েছে…। আমরা ধাপে ধাপে সম্পর্ক পুনরায় স্থাপন করতে পারি কি না, সেই চেষ্টা করছি। ২০২০ সালের ওই ঘটনার মতো এমন কিছু ক্ষয়ক্ষতি আর যাতে না ঘটে, আমরা সেটি নিশ্চিত করার চেষ্টা করছি।
ভারত ও চীনের মধ্যে রয়েছে ৩ হাজার ৮০০ কিলোমিটার দীর্ঘ সীমান্ত। যার বেশিরভাগই অচিহ্নিত। এই সীমান্ত নিয়ে ১৯৬২ সালে স্বল্পকালীন এক রক্তক্ষয়ী যুদ্ধে লিপ্ত হয়েছিল দুই দেশ।
উভয় দেশের সৈন্যরা প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখা (এলএসি) নামে পরিচিত ডি ফ্যাক্টো সীমান্তে যেকোনও ধরনের আগ্নেয়াস্ত্রের ব্যবহার এড়াতে দীর্ঘদিনের প্রোটোকল মেনে চলেন। কিন্তু বিতর্কিত এই সীমান্ত এলাকায় চীন-ভারতের সৈন্যরা প্রায়ই সংঘাতে জড়িয়ে পড়েন।
গত বছর রাশিয়ায় ব্রিকসের শীর্ষ সম্মেলনের ফাঁকে বৈঠক করেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং। ২০২০ সালের সীমান্ত সংঘাতের পর দুই রাষ্ট্রনেতার মাঝে প্রথম আনুষ্ঠানিক আলোচনা হয় সেই বৈঠকে। যেখানে দ্বিপাক্ষিক যোগাযোগ ও সহযোগিতা বৃদ্ধি এবং সম্পর্কের উন্নতির জন্য সংকটের সমাধানে রাজি হয়েছিলেন তারা।