২০২৩ সালের ৭ অক্টোবরের হামলা প্রতিহত করতে ব্যর্থতার দায় নিয়ে পদত্যাগ করেছেন ইসরায়েলের সেনাবাহিনীর গাজা ডিভিশনের উত্তরাঞ্চলীয় ব্রিগেডের কমান্ডার হাইম কোহেন। এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে ইসরায়েলের সংবাদমাধ্যম টাইমস অব ইসরায়েল।
ইসরায়েলের সেনাবাহিনীতে ব্রিগেডিয়ার পদমর্যাদার কর্মকর্তা ছিলেন কোনে। বুধবার গাজা ডিভিশনের দক্ষিণাঞ্চলীয় ব্রিগেডের কমান্ডার ইন চিফ মেজর জেনারেল ইয়ানিভ আসরের কাছে পদত্যাগপত্র দিয়েছেন তিনি।
তার পদত্যাগপত্রের একটি অনুলিপি পেয়েছে ইসরায়েলের অপর দৈনিক ইয়েদিওথ আহরোনোথ। পদত্যাগ পত্রে ব্রিগেডিয়ার কোহেন বলেছেন, “আমার ব্রিগেডের মূল দায়িত্ব ইসরায়েল-গাজা সীমান্ত এলাকাকে সুরক্ষিত রাখা। ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে যে ভয়াবহ হামলা আমাদের ব্যর্থতার পরিচায়ক। আমরা নিজেদের দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হয়েছি। এই ব্যর্থতার দায় নিয়েই আমি পদত্যাগ করছি।”
ইসরায়েলের গাজা ডিভিশন তিনটি ভাগ বা ব্রিগেডে বিভক্ত— উত্তর, কেন্দ্রীয় ও দক্ষিণ। ডিভিশনের দক্ষিণ ব্রিগেডের কমান্ডার ইয়ারোন ফিল্কেনমান এবং মধ্যাঞ্চলের কমান্ডার অ্যাভি রোসেনফোল্ড একই কারণ দেখিয়ে মার্চের শুরুতেই পদত্যাগ করেছিলেন।
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর সীমান্তে অতর্কিত হামলা চালিয়ে ইসরায়েলের ভূখণ্ডে ঢুকে পড়ে গাজা উপত্যকা নিয়ন্ত্রণকারী সশস্ত্র রাজনৈতিক গোষ্ঠী হামাসের প্রায় ১ হাজার যোদ্ধা। সেখানে এলোপাতাড়ি গুলি চালিয়ে ১ হাজার ২০০ জনকে হত্যার পাশাপাশি ২৫১ জনকে জিম্মি হিসেবে গাজায় ধরে নিয়ে যায় তারা।
আকস্মিক এই হামলার জবাব দিতে সেদিন থেকেই গাজায় অভিযান শুরু করে ইসরায়েলি বাহিনী। সেই অভিযানে এ পর্যন্ত নিহত হয়েছেন ৫০ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি। টানা ১৫ মাস গাজায় অভিযান চালানোর পর যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় ১৯ জানুয়ারি যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয় ইসরায়েল। তবে প্রায় ২ মাস যুদ্ধবিরতির পর গত ১৮ মার্চ থেকে ফের গাজায় অভিযান শুরু করেছে ইসরায়েলি বাহিনী।
গাজায় সামরিক অভিযান নিয়ে মতান্তরের জেরে এর আগে ২০২৪ সালের নভেম্বরে ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োয়াভ গ্যালান্তকে অপসারণ করেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু। তারপর ২১ জানুয়ারি ৭ অক্টোবরের হামলা ঠেকাতে ব্যর্থতার দায় স্বীকার করে পদত্যাগ করেন ইসরায়েলের সেনাপ্রধান জেনারেল হারেজি হালেভি।
জেনারেল হারেজি হালেভির বিদায়ের পর পদত্যাগ করেন ইসরায়েলের সামরিক গোয়েন্দা বিভাগের প্রধান আহারোন হালিভা এবং সামরিক বাহিনীর অপারেশন্স বিভাগের প্রধান ওদেদ বাসিউক।
এদিকে সামরিক বাহিনীর প্রথম সারির কর্মকর্তারা একের পর এক পদত্যাগ করতে থাকায় চাপ বাড়ছে নেতানিয়াহুর ওপর। ইসরায়েলে দিন দিনই তার পদত্যাগের দাবি শক্তিশালী হচ্ছে।
তবে নেতানিয়াহু ইসরায়েলের বিরোধী দলীয় রাজনীতিকদের এই দাবি আমলেই নিচ্ছেন না।