জার্মান পত্রিকা দের স্পিগেলের সঙ্গে দীর্ঘ সাক্ষাৎকার দিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। বৃহস্পতিবার (২৭ মার্চ) এটি প্রকাশ করা হয়েছে। এই সাক্ষাৎকারে জুলাই অভ্যুত্থান, সরকার প্রধানের দায়িত্ব গ্রহণ, শেখ হাসিনার দুঃশাসন, সংস্কার প্রস্তাবনাসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করেছেন তিনি।
এছাড়া উঠে এসেছিল মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের দ্বারা দাতব্য সংস্থা ইউএসএইড বন্ধ করার বিষয়টি। যেখান থেকে কক্সবাজারে থাকা রোহিঙ্গারা সহায়তা পায়। যদিও এটির বিরুদ্ধে আদালত রায় দিয়েছে। দের স্পিগেলের সাংবাদিক লরা হোফলিঙ্গার ড. ইউনূসকে এ ব্যাপারে প্রশ্ন করেন। এছাড়া তাকে জিজ্ঞেস করেন বিশ্বের অনেক গণতান্ত্রিক দেশ ট্রাম্পকে নিয়ে শঙ্কিত। তিনিও একই রকম বিষয় অনুভব করেন কি না। এছাড়া ইউএসএইডের সহায়তা বন্ধের সিদ্ধান্ত বাংলাদেশের ওপর প্রভাব ফেলবে কি না।
জবাবে ড. ইউনূস বলেন, “এখন পর্যন্ত, আমরা ম্যানেজ করতে পারছি। কারণ আমরা ইউএসএইডের ওপর খুব নির্ভরশীল না। কিন্তু আমরা প্রায় ১২ লাখ রোহিঙ্গাকে মিয়ানমার থেকে শরণার্থী হিসেবে গ্রহণ করেছি এবং ইউএসএইডের সহায়তা বন্ধের বিষয়টি তাদের ওপর বিশেষ করে বড় প্রভাব ফেলছে। বিশ্ব খাদ্য পোগ্রাম তাদের খাবারের রেশন অর্ধেক কমিয়েছে। মার্কিনিরা কথা দিয়েছে, রোহিঙ্গাদের সহায়তা তারা বন্ধ করবে না। এমনটি হবে কি না সেটি দেখতে হবে। সৌভাগ্যক্রমে ইইউ-র মতো অন্যরা এগিয়ে আসার ঘোষণা দিয়েছে।”
অন্য গণতান্ত্রিক দেশের মতো ট্রাম্পকে নিয়ে শঙ্কিত কি না এ প্রশ্নের জবাবে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, “আমি বিষয়টিকে এভাবে রাখব না। আমরা বিলিয়নিয়ার ইলন মাস্ক এবং তার স্যাটেলাইট ইন্টারনেট সেবা প্রদানকারী স্টারলিংকের সঙ্গে চুক্তি করতে যাচ্ছি। আমি মাস্কের সঙ্গে ফোনে কথা বলেছি। তিনি আমাকে এবং আমার কাজ সম্পর্কে জানেন। এবং তিনি বলেছেন তিনি আমার শুভাকাঙ্খী। এটি ভালো। কারণ এভাবে আমাদের ইনার সার্কেলের একজনের (ট্রাম্পের ভেতরের লোকজনের সঙ্গে) সরাসরি সংযোগ আছে।”
এরপর তাকে জিজ্ঞেস করা হয়, আপনি প্রায়ই উন্নয়ন সহায়তার সমালোচনা করেন। কারণ আপনার বিশ্বাস এতে অন্যের ওপর নির্ভরশীলতা তৈরি হয়। ইউএসএইড বন্ধের বিষয়টি কোনোভাবে কী আপনি সমর্থন করেন?
জবাবে ড. ইউনূস বলেন, “যদি ট্রাম্পের সঙ্গে কথা বলতে পারতাম। আমি তাকে বলতাম: উন্নয়ন সহায়তা বন্ধ করবেন না। কিন্তু এই সহায়তা কোনো দাতব্য সংস্থাকে দেবেন না। এর বদলে এগুলো সামাজিক ব্যবসায় বিনিয়োগ করুন।” তিনি আরও বলেন, “ট্রাম্প হলো ব্যবসায়ী। আমরাও ব্যবসায়ী। আমি নিশ্চিত এই আইডিয়া তার ভালো লাগবে।”