রাজধানীর মহাখালীর সরকারি তিতুমীর কলেজকে আলাদা স্বতন্ত্র প্রতিষ্ঠান হিসেবে ঘোষণার দাবিতে ফের তিন দিনের আল্টিমেটাম দিয়েছেন শিক্ষার্থীরা। একইসঙ্গে সাত কলেজের স্বতন্ত্র কাঠামোতে তারা থাকতে চান না বলেও জানিয়েছেন।
শনিবার (১৫ মার্চ) রাতে কলেজের মূল ফটকের সামনে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের দ্বিচারিতার প্রতিবাদে কলেজটির শিক্ষার্থীদের সংগঠন তিতুমীর ঐক্যের পক্ষ থেকে এসব কথা বলা হয়।
সংশ্লিষ্টরা বলেন, আমরা (তিতুমীর কলেজ শিক্ষার্থীরা) রাষ্ট্রের শিক্ষা সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন জায়গা থেকে দ্বিচারিতার শিকার হয়েছি। শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে শুরু করে রাষ্ট্রের শিক্ষা সংশ্লিষ্ট এমন কোনো দপ্তর, অফিস, দায়িত্বশীল ব্যক্তি নেই যাদের কাছে তিতুমীর কলেজের শিক্ষার্থীদের দাবি পৌঁছায়নি। কিন্তু এই রাষ্ট্রের রন্ধ্রে রন্ধ্রে ভয়াল সিন্ডিকেটের রাঘববোয়ালরা বসে আছে। তাদের ষড়যন্ত্র ও স্বার্থান্বেষী আচরণ তিতুমীর বিশ্ববিদ্যালয় বাস্তবায়নের জন্য বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে।
লিখিত বক্তব্যে বেলাল হোসেন নামের এক শিক্ষার্থী বলেন, গত ৩ ফেব্রুয়ারি শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কলেজ অধিশাখার যুগ্মসচিব নুরুজ্জামানসহ সরকারের বেশ কয়েকজন প্রতিনিধি আমাদের মধ্যে উপস্থাপিত হন এবং পাঁচ দিনের বেশি সময় ধরে অনশনরত শিক্ষার্থীদের ৭ দফা দাবির মধ্যে ৬ দফা সাত দিনের মধ্যে বাস্তবায়নের জন্য দৃশ্যমান রূপরেখা প্রণয়ন করবেন বলে প্রতিশ্রুতি দেন। কিন্তু এর পরবর্তী সময়ে আমরা দেখেছি বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) থেকে সাত কলেজকে স্বতন্ত্র কাঠামো নামের একটি নোটিশ দেওয়া হয়, যেখানে তিতুমীর কলেজের নাম উল্লেখ ছিল। যা পরিপূর্ণভাবে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের প্রতিশ্রুতির বিরোধী এবং দ্বিচারিতা। আমরা বলতে চাই তিতুমীরের সাধারণ শিক্ষার্থীরা কখনো এমন দ্বিচারিতা মেনে নেবে না।
তারা আরও বলেন, তিতুমীর কলেজকে সঙ্গে নিয়ে কোনো সেন্ট্রাল কাঠামো শিক্ষার্থীরা মেনে নেবে না। আমরা স্পষ্টভাবে বলতে চাই, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধির দেওয়া প্রতিশ্রুতির ৬ দফা আগামী তিন কর্মদিবসের মধ্যে মেনে নিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করতে হবে।
দাবিগুলো হচ্ছে—
১. ছাত্র-শিক্ষক এবং মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধির মাধ্যমে স্বতন্ত্র প্রশাসনিক কাঠামো গঠন করতে হবে।
২. এই ছাত্র-শিক্ষক-মন্ত্রণালয় প্রতিনিধির মাধ্যমে ২০২৪-২৫ সেশনের ভর্তি পরীক্ষা পরিচালনা করতে হবে।
৩. ২০২৪-২৫ সেশন থেকে আন্তর্জাতিক মানের ন্যূনতম দুটি সাবজেক্ট আইন বিভাগ এবং সাংবাদিকতা বিভাগ সংযোজন করতে হবে।
৪. ন্যূনতম ১৫ জন বিশ্ববিদ্যালয়ের অভিজ্ঞতাসম্পন্ন পিএইচডি ডিগ্রিধারী শিক্ষক পাঠাতে হবে।
৫. ১৫১ জন বিসিএস শিক্ষা ক্যাডার পদ সৃষ্টি করে দ্রুত শিক্ষক নিয়োগ দিতে হবে।
৬. আন্তর্জাতিক মানের সেন্ট্রাল লাইব্রেরি এবং গবেষণাগার নির্মাণ ও শতভাগ আবাসিক সুবিধা নিশ্চিতে পার্শ্ববর্তী টিঅ্যান্ডটি এবং রাজউকের জমি হস্তান্তর করতে হবে এবং পরিবহন সংকট নিরসন করতে ন্যূনতম ২০টি দোতলা বিআরটিসি বাস বরাদ্দ দিতে হবে।
এ ছাড়া এসব সিদ্ধান্ত দ্রুত বাস্তবায়ন না করে ইউজিসির একক কোনো সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দেওয়া হলে সেটি মানা হবে না বলেও মন্তব্য করেন তিনি।