গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার মৌচাক এলাকায় একটি খাদ্য উৎপাদন তৈরি কারখানায় বিক্ষোভের সময় বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির অভিযোগে ৬ জনকে আটক করেছে সেনাবাহিনী।
সোমবার (২৩ সেপ্টেম্বর) সকালে কালিয়াকৈর উপজেলার মৌচাকে কোকোলা ফুড প্রোডাক্ট লিমিটেড কারখানা এলাকায় বিক্ষোভের সময় তাদের আটক করা হয়।
এর আগে শ্রমিকরা আধা ঘণ্টা ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে অবরোধ করে রাখে। খবর পেয়ে পুলিশ ও সোনাবাহিনীর সদস্যরা শ্রমিকদের ছত্রভঙ্গ করে দেয় এবং বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির অভিযোগে ছয়জনকে আটক করে। এছাড়া কালিয়াকৈর উপজেলার পৃথক এলাকায় তিনটি কারখানা অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করেছে কর্তৃপক্ষ। তবে তাৎক্ষণিকভাবে আটককৃতদের নাম পরিচয় পাওয়া যায়নি।
শিল্প পুলিশ ও কারখানার শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, কালিয়াকৈর উপজেলার মৌচাক এলাকার কোকোলা ফুড প্রোডাক্ট লিমিটেড কারখানার শ্রমিকরা গতকাল রোববার সকালে কাজে যোগদান করেন। সকাল সাড়ে ১০টার দিকে শ্রমিকরা হঠাৎ করে মুজুরি নুন্যতম সাড়ে ১২ হাজার টাকা, হাজিরা বোনাস ৮০০ টাকা, সাধারণ ও বাৎসরিক ছুটিসহ ১২ দফা দাবিতে কারখানার ভেতর বিক্ষোভ করতে থাকে। একপর্যায়ে উত্তেজিত শ্রমিকরা কারখানার পাশে ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে অবস্থান নিয়ে অবরোধে করে বিক্ষোভ করে। পরিস্থিতি অবনতি হওয়ায় কারখানা কর্তৃপক্ষ অনির্দিষ্টকালের জন্য কারখানাটি বন্ধ ঘোষণা করে।
অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণার পরও আজ সোমবার সকালে শ্রমিকরা কারখানার সামনে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করতে থাকে। তারা ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে অবস্থান নিয়ে অবরোধ সৃষ্টি করে এবং বিক্ষোভ করে। একপর্যায়ে কিছু উশৃঙ্খল শ্রমিক বন্ধ কারখানা ভেতরে জোরপূর্বক প্রবেশ করে ভাঙচুর করার চেষ্টা করে। খবর পেয়ে শিল্প পুলিশ, থানা পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে শ্রমিকদের ধাওয়া করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে। এ সময়ে কারখানার ভেতরে অবৈধভাবে প্রবেশ করা এবং বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির অভিযোগে ছয়জনকে আটক করে সেনাবাহিনীর সদস্যরা। পরে সেনাবাহিনীর সদস্যরা তাদের হ্যান্ড মাইক ঘোষণা দিয়ে শ্রমিকদের কারখানা এলাকা ছেড়ে যাওয়ার নির্দেশ দেন।
কারখানার শ্রমিক কামাল হোসেন বলেন, তাদের কারখানায় পাঁচ হাজারের বেশি শ্রমিক কাজ করেন। তাদের সর্বনিম্ন বেতন দেওয়া হয় ৮ হাজার টাকা। এই টাকায় ঘরভাড়া আর খাওয়া দাওয়া করে জীবনযাপন করতে পারছি না। তাই অনেক দিন ধরেই সর্বনিম্ন বেতন ১২ হাজার ৫০০ টাকা করার দাবি জানিয়ে আসলেও মালিক পক্ষ কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। আমাদের কথাও শুনতে চায়নি।
গাজীপুর শিল্প পুলিশের (জোন-২) পরিদর্শক নিতাই চন্দ্র সরকার বলেন, কারখানা বন্ধ ঘোষণার পরও কিছু উশৃঙ্খল শ্রমিক কারখানার ভেতরে জোরপূর্বক প্রবেশ করায় সেনাবাহিনীর সদস্যরা ছয়জনকে আটক করেছে। শ্রমিকরা কিছু সময় ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে অবস্থান নিয়ে অবরোধ সৃষ্টি করেছিল। তবে এখন পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে।