ছাগলকাণ্ডে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সদস্যপদ ও ভ্যাট আপিলাত ট্রাইব্যুনালের প্রেসিডেন্টের পদ হারানো মতিউর রহমান বিদেশ যাওয়ার অনুমতি চেয়ে হাইকোর্টে রিট দায়ের করেছেন।
সোমবার (২৫ নভেম্বর) মতিউরের পক্ষে অ্যাডভোকেট এস এম শামীম হোসাইন হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় এ রিট দায়ের করেন।
দুদক চেয়ারম্যানসহ সংশ্লিষ্টদের রিটে বিবাদী করা হয়েছে।
এর আগে গত ২৪ জুন মতিউর রহমানের বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা দেন আদালত। একইসঙ্গে আদালত তার প্রথম স্ত্রী নরসিংদীর রায়পুর উপজেলা চেয়ারম্যান লায়লা কানিজ লাকি ও ছেলে আহম্মেদ তৌফিকুর রহমান অর্ণবের বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়। ঢাকার মহানগর দায়রা জজ ও সিনিয়র বিশেষ জজ আদালতের বিচারক মোহাম্মদ আস সামছ জগলুল হোসেন এ নিষেধাজ্ঞা দেন।
দুদকের উপপরিচালক আনোয়ার হোসেন বিদেশ গমনে নিষেধাজ্ঞার আবেদন করেন। ওই আবেদনের ওপর শুনানি শেষে আদালত নিষেধাজ্ঞা জারি করেন।
দুদক আবেদনে উল্লেখ করে, মতিউর রহমান ও তার পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির মাধ্যমে অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ পাওয়া গেছে, যা দুদক অনুসন্ধান করছে। ইতোমধ্যে মতিউর রহমানের বিরুদ্ধে তার স্ত্রী, সন্তান ও স্বজনদের নামে দেশবিদেশে বিপুল সম্পদ অর্জনের অভিযোগ রয়েছে। তাদের নামে রাজধানীতে ১৫টি ফ্ল্যাট ও ৪টি বাড়ির সন্ধান পাওয়া গেছে।
এ ছাড়া ময়মনসিংহের ভালুকা, নরসিংদীর বিভিন্ন জায়গায় এবং চাঁদপুরে শত শত বিঘা জমির সন্ধান পাওয়া গেছে। বিদেশেও বিপুল পরিমাণ টাকা পাচারের অভিযোগ পাওয়া গেছে।
আবেদনে আরও উল্লেখ করা হয়, এ অপরাধে তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ অনুসন্ধানাধীন রয়েছে। গোপন সূত্রে জানা গেছে, অভিযোগ সংশ্লিষ্টরা অর্থ পাচার ও দেশত্যাগের পরিকল্পনা করছেন। এজন্য তাদের বিদেশ গমনে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা একান্ত প্রয়োজন।
উল্লেখ্য, মুশফিকুর রহমান ইফাতের ১২ লাখ টাকা দিয়ে একটি ছাগল কিনতে ১ লাখ টাকা বুকিং দেওয়া, ৭০ লাখ টাকার গরু কেনা ও বিলাসবহুল গাড়ি ব্যবহারের বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে আলোচনায় আসেন এনবিআরের এ সদস্য। তবে ইফাত তার ছেলে– সে বিষয়টি তিনি অস্বীকার করেছেন।
পরে স্বজনদের বরাতে জানা যায়, ইফাত মতিউর রহমানের দ্বিতীয় স্ত্রী শাম্মী আক্তার শিভলীর দ্বিতীয় সন্তান।
ছাগলকাণ্ডে সমালোচিত মো. মতিউর রহমানকে প্রথমে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়। পরে তার আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে অবসরে পাঠানো হয়।