এক খাপে দুই তলোয়ার যেভাবে থাকতে পারে না, ঠিক একইভাবে ৫ আগস্ট পরবর্তী সময়ে বাংলাদেশে আওয়ামী লীগ ও এনসিপি একসঙ্গে থাকতে পারে না বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির মুখ্য সংগঠক (দক্ষিণাঞ্চল) হাসনাত আব্দুল্লাহ।
তিনি বলেন, আমরা ছাত্র নাগরিক রাস্তার মধ্যে তাজা রক্ত ঢেলে দিয়ে যে আওয়ামী লীগকে বাংলাদেশ থেকে উৎখাত করেছি, আজকে সেই আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসন করার জন্য ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে। বিদেশে বসে ষড়যন্ত্র অব্যাহত রয়েছে। রাজনৈতিক দলের মধ্যে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল নির্বাচনে ফায়দা নেওয়ার জন্য আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসনের জন্য বেট্রয় ডিপ্লোমেসিতে যুক্ত হচ্ছেন। আমরা আপনাদেরকে সতর্ক করে দিতে চাই, এই ছাত্র নাগরিকের হারানোর কিছুই নেই।
বুধবার (১৯ মার্চ) সন্ধ্যায় কুমিল্লা শাসনগাছা বাস টার্মিনালে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) আয়োজিত গণ ইফতার অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
হাসনাত আব্দুল্লাহ বলেন, যদি আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসনের ষড়যন্ত্র করা হয়, ৫ আগস্ট গণভবন এবং বঙ্গভবনের যে পরিণতি হয়েছে, যারা আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসন করতে চাইবে, ঠিক তাদের পরিণতি এবং তাদের ফলাফল একই রকম হবে। আমাদের লড়াই অব্যাহত আছে। আমাদের লড়াই চলবে। আওয়ামী লীগকে যারা পুনর্বাসন করতে চাইবে, যে রাজনৈতিক দলেরই হোক না কেন তাকে আমরা প্রতিহত করব।
নির্বাচন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আপনারা দেখেছেন গত যে তিনটা নির্বাচন হয়েছে, ওই তিনটা নির্বাচনে জনগণ ভোট দিতে পারেনি। ভোট দিয়েছে প্রশাসন। নির্বাচন পরিচালনা করেছে প্রশাসন। একটা স্বচ্ছ ফ্রি অ্যান্ড ফেয়ার ইলেকশন করার কোনো ধরনের দক্ষতা আওয়ামী প্রশাসনের নেই। এই প্রশাসনের সংস্কার করা না পর্যন্ত নির্বাচন হবে না। প্রশাসন যতক্ষণ পর্যন্ত না একটা ফ্রি এন্ড ফেয়ার ইলেকশন করতে না পারে আশ্বস্ত হতে পারছি না। এজন্য আমরা চাই স্থানীয় সরকার যে নির্বাচনগুলো রয়েছে এই নির্বাচনগুলোর মধ্য দিয়ে প্রশাসনের স্বচ্ছতার পরীক্ষা হয়ে যাক। এ কারণে অন্তর্বর্তী সরকারকে আহ্বান জানাবো আপনারা স্থানীয় সরকার নির্বাচনের আয়োজন করুন। প্রয়োজনে ধাপে ধাপে যতগুলো উপজেলা রয়েছে সেগুলো নির্বাচনের আয়োজন করুন। আপনারা এই প্রশাসনের স্বচ্ছতা নিশ্চিত করুন।
চাঁদাবাজদের হুঁশিয়ারি করে হাসনাত আব্দুল্লাহ বলেন, চাঁদাবাজি-টেন্ডারবাজি, মাঠ দখল, পুকুর দখল বাজার দখল শুরু হয়েছে। এই দখলবাজদের হাত গুঁড়িয়ে দিয়ে পুলিশে উঠিয়ে দেন। দেবিদ্বারের মাটিতে, কুমিল্লার মাটিতে, চান্দিনার মাটিতে, চৌদ্দগ্রামের মাটিতে, কোথাও চাঁদাবাজদের ঠাঁই হবে না।
কুমিল্লা প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, আমরা ওইদিন ভুলে যায় নাই, শিক্ষার্থীরা যখন রাস্তায় দাঁড়িয়ে বলছে আঙ্কেল গেটটা একটু খুলেন না, তখন গেটটা কেউ খুলেনি। আমরা এই আওয়ামী লীগকে এই কুমিল্লা থেকে উৎখাত করেছি, হাসিনার দুঃস্বপ্ন ছিল কুমিল্লা, আমরা এই কুমিল্লাতে আওয়ামী লীগকে কবরস্থ করতে পেরেছি। গত দেড় দশক ধরে কুমিল্লাকে বঞ্চিত করে রাখা হয়েছে। যখনই কুমিল্লা নিয়ে কোনো কথা হতো ফ্যাসিবাদ হাসিনা সরকার এই কুমিল্লাকে সব সময় বঞ্চিত করে রেখেছে। এখন আর তা হবে না।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় নেতা রিফাত রশিদের সভাপতিত্বে সংগঠনটির কুমিল্লার আহ্বায়ক সাকিব হোসাইন, কুমিল্লা মহানগরের আহ্বায়ক আবু রায়হান, সদস্যসচিব রাশেদুল হাসানসহ অন্যান্যরা উপস্থিত ছিলেন।